সমন্বিত কাস্টমস অটোমেশন যুগে বাংলাদেশ
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ০৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আংশিকভাবে ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো (এনএসডব্লিউ) চালু করেছে। আমদানি ও রফতানি প্রক্রিয়াকে আরো সহজ করার লক্ষ্যে এ উদ্যোগের অধীনে সাতটি কাস্টমস এজেন্সিকে একক প্ল্যাটফর্মে আনা হয়েছে। ২০১৭ সালে গৃহীত এ প্রকল্পের উদ্দেশ্য হলো কাস্টমস সংক্রান্ত ১৯টি সংস্থার কার্যক্রমকে একত্রিত করা। এটি ব্যবসা-বাণিজ্যের কাজ সহজ করার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখার লক্ষ্যও বহন করে।
গতকাল এনবিআরের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি হোটেলে এনএসডব্লিউয়ের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।
বর্তমানে এনএসডব্লিউয়ের আওতায় আসা সাতটি সংস্থা হলো- পরিবেশ অধিদফতর, ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর, রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো, বিস্ফোরক অধিদফতর, বাংলাদেশ ন্যাশনাল অথরিটি ফর কেমিক্যাল উইপনস কনভেনশন, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ এবং বাংলাদেশ রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষ। এসব সংস্থা ইতোমধ্যে তাদের অটোমেশন প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এখন থেকে ব্যবসায়ীরা এ প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে অনলাইনে আমদানি ও রফতানি সংক্রান্ত সব রকম প্রশংসাপত্র, লাইসেন্স এবং পারমিট পেতে পারবেন। ফলে, কাগজপত্র সংগ্রহের জন্য আর অফিসে যাওয়ার প্রয়োজন হবে না। এনবিআর জানিয়েছে, আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বাকি ১২টি সংস্থাকে এনএসডব্লিউয়ের আওতায় আনা হবে। এর ফলে পুরো সিস্টেমটি সম্পূর্ণরূপে চালু হবে।
এনএসডব্লিউয়ের সুবিধা : ২০১৭ সালে এনবিআর ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো প্রকল্প চালু করে। এর লক্ষ্য কাস্টমস-সম্পর্কিত বিভিন্ন সংস্থার কার্যক্রমকে একটি প্ল্যাটফর্মের অধীনে নিয়ে আসা। এটি কাগজপত্রের ঝামেলা দূর করে এবং সময় বাঁচিয়ে ব্যবসা কার্যক্রম আরো সহজ করে তুলবে। এ প্ল্যাটফর্ম আন্তর্জাতিক বাণিজ্য-সম্পর্কিত পারমিট, লাইসেন্স, প্রশংসাপত্র এবং শুল্ক ঘোষণার প্রক্রিয়াগুলোকে স্বয়ংক্রিয় করবে। আশা করা হচ্ছে, এটি ব্যবসায়ীদের কাগজপত্র, সময় এবং খরচ কমাতে সাহায্য করবে। বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় নির্মিত এ প্ল্যাটফর্ম করফাঁকি রোধেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এ সিস্টেমের মাধ্যমে আমদানিকারক ও রফতানিকারকেরা প্রয়োজনীয় তথ্য জমা দিয়ে প্রশংসাপত্র, লাইসেন্স ও পারমিট পেতে পারবেন। জমা দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ইস্যু করা প্রশংসাপত্রের মাধ্যমে পণ্য দ্রুত খালাস করা সম্ভব হবে। সিস্টেমটি আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের সাথে যুক্ত সব সংস্থার জন্য একটি ইন্টারনেটভিত্তিক তথ্য উইন্ডো সরবরাহ করবে। এনবিআর জানিয়েছে, একবার সিস্টেমটি পুরোপুরি চালু হলে আমদানি-রফতানির প্রক্রিয়া সহজতর হবে, বন্দর থেকে পণ্য ছাড়পত্র দ্রুত সম্পন্ন হবে এবং ব্যবসা করার খরচ কমবে।
সিস্টেমের কাঠামো : এনএসডব্লিউ সিস্টেম দু’টি মূল অংশ নিয়ে গঠিত- বিএসডব্লিউ (বাংলাদেশ সিঙ্গেল উইন্ডো) সফটওয়্যার এবং এআরএমএস (অ্যাডভান্স রিস্ক ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম)। টিএফ চুক্তির ধারা ১০.৭ অনুসারে এ সিস্টেম কার্যকর করা হয়েছে। এআরএমএস সরাসরি বিএসডব্লিউ সফটওয়্যারের সাথে সংযুক্ত। যখন কোনো ব্যবসায়ী বিএসডব্লিউ প্ল্যাটফর্মে প্রশংসাপত্র, লাইসেন্স বা পারমিটের (সিএলপি) জন্য আবেদন করেন, তখন আবেদনটি এআরএমএস সিস্টেমের মাধ্যমে আবেদনকারীর ট্র্যাক রেকর্ড বিশ্লেষণ করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়। এর মাধ্যমে কর্তৃপক্ষ আবেদনকারীর ট্র্যাক রেকর্ড সম্পর্কে সচেতন থাকতে পারে এবং ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে পারে। বিএসডব্লিউ সফটওয়্যারের আওতায় মোট নয়টি মডিউল রয়েছে। এর মধ্যে প্রশংসাপত্র, লাইসেন্স ও পারমিট ইস্যু করার জন্য নির্ধারিত ১১৯টি সিএলপির মধ্যে ৮১টি ইতোমধ্যে কনফিগার করা হয়েছে। এ ৮১টি সিএলপি বর্তমানে লাইভ রয়েছে এবং ব্যবসায়ীরা ইতোমধ্যেই এ সুবিধা ব্যবহার করতে পারছেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা