০৪ জানুয়ারি ২০২৫, ২০ পৌষ ১৪৩১, ৩ রজব ১৪৪৬
`
ফিরে দেখা ২০২৪

এক দেশনির্ভর পররাষ্ট্রনীতি থেকে ভারসাম্য রক্ষার চেষ্টা

-


ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের সাথে সাথে বাংলাদেশের বৈদেশিক সম্পর্কের ক্ষেত্রেও বড় ধরনের পরিবর্তন লক্ষ করা গেছে। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বধীন সরকারের টানা প্রায় সাড়ে ১৫ বছরে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারতনির্ভরতা ছিল লক্ষণীয়। আর এই নির্ভরতার অন্যতম কারণ ছিল ২০১৪, ২০১৮ এবং সর্বশেষ ২০২৪ সালের যথাক্রমে একতরফা, কারচুপি ও ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থাকতে সহায়তা দেয়া। বিতর্কিত এসব নির্বাচনের বিরোধিতা করে বিশেষ করে পশ্চিমা দেশগুলোর চাপ সামলাতে ভারত পর্দার অন্তরালে আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়েছে। বিনিময়ে ভারত আদানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র, রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের মতো বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী ও পরিবেশ বিনষ্টকারী সরকারি- বেসরকারি বেশকিছু প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে, ট্রানজিট-ট্রান্সশিপমেন্টের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ও সুবিধা নিশ্চিত করার পথে অগ্রসর হয়েছে এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর নিরাপত্তার নিশ্চয়তা পেয়েছে। কিন্তু এর বিপরীতে বিগত সরকার তিস্তাসহ অভিন্ন নদীর পানি বণ্টনের মতো বাংলাদেশের গণমানুুষের স্বার্থসংশ্লিষ্ট চুক্তি ভারতের সাথে সই করতে পারেনি।
গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনকে ভারত কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেনি। হাসিনা সরকারের পতনের পরপরই ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন এ মুহূর্তে প্রয়োজন নেই, এমন অতিরিক্ত জনবল ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

জনবল সঙ্কটের কথা বলে হাইকমিশন বাংলাদেশীদের জন্য ভ্রমণ-ভিসা বন্ধ এবং চিকিৎসা ও শিক্ষা-ভিসার ক্ষেত্রে নজিরবিহীন কড়াকড়ি আরোপ করেছে। ভারতের একশ্রেণীর গণমাধ্যম বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ তুলে একটানা অপপ্রচার চালিয়ে গেছে এবং পরবর্তী সময়ে আন্তর্জাতিক কয়েকটি গণমাধ্যমকে এ প্রক্রিয়ার সাথে যুক্ত করার চেষ্টা করা হয়েছে। ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির ছত্রছায়ায় হিন্দুত্ববাদী দলগুলো কলকাতায় অবস্থিত বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভ করে জাতীয় পতাকার অবমাননা করেছে। আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী-হাইকমিশনে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়েছে। ইসকনের মতো হিন্দুত্ববাদী এনজিও বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সঙ্ঘাত সৃষ্টি করার অপচেষ্টা চালিয়েছে। সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ও হিন্দু নেতা চিন্ময় দাসকে গ্রেফতারকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রামে অরাজকতা সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়েছে। আর এসব ঘটনা লবিংয়ের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতা ও প্রশাসনের কাছে তুলে ধরে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়ার জন্য তৎপরতা চালানো হয়েছে।

অন্য দিকে অন্তর্বর্তী সরকার কূটনৈতিকভাবে এসব ইস্যু ভারতসহ আন্তর্জাতিক মহলের কাছে তুলে ধরে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের জবাব দেয়ার চেষ্টা করেছে। বাংলাদেশ বিশেষ করে পশ্চিমা বিশ্ব এবং জাতিসঙ্ঘের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়াসহ সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস পেয়েছে। তবে ভারতের সাথে কূটনৈতিকভাবে খুব একটা আগানো যায়নি। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি বাংলাদেশ সফর করে যাওয়ার পর দিল্লির আশ্রয়ে থাকা শেখ হাসিনার উসকানিমূলক বক্তব্য বন্ধ হয়েছে ঠিকই; কিন্তু ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের একক কৃতিত্ব দাবি করে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির টুইট বার্তা নতুন করে বিতর্ক উসকে দিয়েছে।

সার্বিকভাবে গণ-অভ্যুত্থানের পর বৈদেশিক সম্পর্ক বা পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ একক দেশনির্ভরতা থেকে ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থানে আসার চেষ্টা করছে।
অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা নেয়ার পর সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে জাতিসঙ্ঘ সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিয়ে প্রথম বিদেশ সফর শুরু করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। নভেম্বরে দ্বিতীয় সফরে আজারবাইজানে বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন কপ-২৯ সম্মেলনে যোগ দেন তিনি। সর্বশেষ ডিসেম্বরে উন্নয়নশীল দেশগুলোর জোট ডি-৮ সম্মেলনে যোগ দিতে মিসর সফর করেন প্রধান উপদেষ্টা। ক্ষমতা গ্রহণের পর তিনি কোনো দেশে দ্বিপক্ষীয় সফরে যাননি। তিনটি সফরই ছিল বহুপক্ষীয়।
নিউ ইয়র্কে জাতিসঙ্ঘ সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিয়ে বাজিমাত করেছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস। জাতিসঙ্ঘ সাধারণ অধিবেশনের সাইডলাইনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের কোনো দেশের সরকার বা রাষ্ট্রপ্রধানের সাথে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের রেওয়াজ না থাকলেও এবার ব্যতিক্রম ছিল বাংলাদেশের ক্ষেত্রে। ড. ইউনূসের সাথে সাক্ষাৎ করে জড়িয়ে ধরেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বাংলাদেশে সংস্কারের যে লক্ষ্য নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ঠিক করেছেন, তাকে বাস্তবে রূপ দিতে সবধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন তিনি।
ওই সফরে বাংলাদেশের সরকারপ্রধান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ছাড়াও কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফসহ ১২টি দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধানের সাথে সাক্ষাৎ করেন। সাইডলাইনে তিনি ৪০টি উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে অংশ নেন।

শেখ হাসিনা সরকারের সময়ে বিতর্কিত নির্বাচন, মানবাধিকারসহ নানা ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ পশ্চিমা দেশগুলোর সাথে বাংলাদেশের সম্পর্কে টানাপড়েন চলছিল। ড. ইউনূসের বহুপক্ষীয় সফরগুলোতে সেই সঙ্কট অনেকটা কেটেছে। বিশেষ করে গণতন্ত্র, মানবাধিকারসহ বিভিন্ন ইস্যুতে বাংলাদেশের যে ভাবমূর্তি সঙ্কট ছিল, তা কাটানোর চেষ্টা করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।
গণ-অভ্যুথানের পর দিল্লির সাথে ঢাকার দূরত্ব তৈরি হলেও ইসলামাবাদের সাথে সম্পর্ক জোরদার হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধানের দায়িত্ব নেয়ার পর ড. ইউনূস তৃতীয় দেশে ইতোমধ্যে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সাথে দু’বার বৈঠক করেছেন। সেপ্টেম্বরে নিউ ইয়র্কে জাতিসঙ্ঘ অধিবেশনের ফাঁকে প্রথম বৈঠকে মিলিত হন ইউনূস-শাহবাজ। তিন মাসের মাথায় গত ১৯ ডিসেম্বর ডি-৮ সম্মেলনের সাইডলাইনে মিসরের রাজধানী কায়রোতে ফের বৈঠক করেন তারা। তবে শেষ বৈঠকে ১৯৭১ সালের অমীমাংসিত ইস্যুগুলো সুরাহার তাগিদ দেন ড. ইউনূস। এর মধ্যে রয়েছে- মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর গণহত্যা ও বর্বরতার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা, স্বাধীনতার সময় বাংলাদেশের প্রাপ্য সম্পদের হিস্যা এবং আটকে পড়া পাকিস্তানিদের ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া। এসব ইস্যুতে পাকিস্তানের অবস্থান তুলে ধরেন শাহবাজ শরিফ। অন্য দিকে অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে প্রথমবারের মতো পাকিস্তানি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে ভিড়েছে। এখন পর্যন্ত মোট দু’টি জাহাজ পাকিস্তান থেকে বাণিজ্যিক মালামাল নিয়ে বাংলাদেশে এসেছে।

শেখ হাসিনা সরকারের আমলে বাংলাদেশে গুমের ঘটনাগুলো নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো এবং জাতিসঙ্ঘ মানবাধিকার পরিষদ উদ্বেগ জানিয়ে আসছিল। তবে তা খুব একটা আমলে নেয়নি আওয়ামী লীগ সরকার। শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতির পর গত ২৯ আগস্ট গুমবিরোধী আন্তর্জাতিক সনদে স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ। এ ছাড়া গুমবিষয়ক একটি কমিশন গঠন করে আয়নাঘরের অবস্থান চিহ্নিত, গুমের শিকার ব্যক্তি ও পরিবারগুলোর কাছ থেকে সাক্ষ্য-প্রমাণ সংগ্রহ এবং দায়ীদের শনাক্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
ড. ইউনূসের আমন্ত্রণে গত অক্টোবরে ঢাকা সফর করেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম। এটি ছিল অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর ঢাকায় কোনো দেশের শীর্ষ নেতার প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফর। প্রায় ১১ বছর পর মালয়েশিয়ার কোনো প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সফর করেন। ওই সফরে প্রায় ১৮ হাজার বাংলাদেশী কর্মীকে মালয়েশিয়া যাওয়ার সুযোগ দেয়ার আশ্বাস দেন আনোয়ার ইব্রাহিম। মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা সফরের তিন মাসের মাথায় ডিসেম্বরে বাংলাদেশ সফর করেন পূর্ব তিমুরের প্রেসিডেন্ট জোসে রামোস হোর্তা। তিনি বাংলাদেশের বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে যোগ দেন।
এ দিকে অন্তর্বর্তী সরকারকে বাংলাদেশের প্রতিবেশী রাষ্ট্র মিয়ানমারকে নিয়ে নতুন ঝামেলায় পড়তে হয়েছে। বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী ২৭০ কিলোমিটার এলাকা মিয়ানমার নিরাপত্তাবাহিনীগুলোর সাথে লড়াই করে দখল করে নিয়েছে বৌদ্ধ জাতীয়তাবাদে উদ্বুদ্ধ আরাকান আর্মি।

আরাকান আর্মি রাখাইন রাজ্যকে স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলে পরিণত করতে চায়। বর্তমান রাখাইন একসময় আরাকান হিসেবে স্বাধীন রাষ্ট্র ছিল, যা বার্মা দখল করে নিয়েছিল। আরাকান আর্মি সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায় রোহিঙ্গাদেরও বিরোধিতা করছে। আরাকান আর্মি ও মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর লড়াইয়ের মধ্যে পড়ে ইতোমধ্যে ৬৫ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা নতুন করে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে। মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর অত্যাচারে এর আগে থেকেই প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছিল, যাদের প্রত্যাবাসন চায় বাংলাদেশ। আরাকান আর্মি রাষ্ট্রবহির্ভূত শক্তি (ননস্টেট অ্যাক্টর) হওয়ায় তাদের সাথে কোনো ইস্যুতে আনুষ্ঠানিক আলোচনা করতে পারছে না বাংলাদেশ। মিয়ামারের প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর প্রতিনিধিদের নিয়ে সম্প্রতি ব্যাংককে অনুষ্ঠিত অনানুষ্ঠানিক সভায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বিষয়টি তুলে ধরেছেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাথে সংহতি জানিয়ে আইন লঙ্ঘন করে মিছিল বের করায় ৫৭ বাংলাদেশীকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছিল সংযুক্ত আরব আমিরাত। গত ২২ জুলাই তাদের মধ্যে তিনজনকে যাবজ্জীবন, ৫৩ জনকে ১০ বছর এবং একজনকে ১১ বছরের কারাদণ্ড দেয় আবুধাবির রাষ্ট্রীয় আপিল আদালত। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অনুরোধে এসব প্রবাসীর কারাদণ্ড মওকুফ করে বাংলাদেশে ফেরত পাঠায় আমিরাত। এটিকে অন্তর্বর্তী সরকারের একটি বড় কূটনৈতিক সফলতা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement
হাসিনাকে ফেরত দেয়ার বিষয়ে যা বলল ভারত অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখাই বড় চ্যালেঞ্জ কারওয়ান বাজার এলাকার শীর্ষ চাঁদাবাজ রাসেল জমাদ্দার গ্রেফতার ঢাকার হ্যাটট্রিক হার, খুলনার দ্বিতীয় জয় খালেদা জিয়ার নিরাপত্তা নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমে ‘বিভ্রান্তিকর’ প্রতিবেদন খতমে নবুওয়ত না মানলে ঈমান থাকবে না : মুফতি সাইফুল ইসলাম শেষ নবীর খোঁজে জনকল্যাণমূলক সরকার গঠনে দেশ উপকৃত হবে : জামায়াত আমির রাঙ্গামাটির বন্দুকভাঙ্গা রেঞ্জে ইউপিডিএফের ২ ক্যাম্পের সন্ধান খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলায় জড়িত ছাত্রলীগ নেতা গ্রেফতার লাদাখের ভূখণ্ড নিয়ে ২ নতুন প্রদেশ চীনের, তীব্র প্রতিবাদ ভারতের

সকল