০২ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮ পৌষ ১৪৩০, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৫
`

বিদেশী ঋণের প্রতিশ্রুতি অর্ধেকে নেমেছে

-

রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তার কারণে বিদেশী ঋণের প্রতিশ্রুতি প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। শুধু যে ঋণের প্রতিশ্রতি কমেছে তাই নয়, একই সময়ে কমে গেছে অর্থ ছাড়ের পরিমাণও। বেড়েছে ঋণ পরিশোধের পরিমাণ। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
ইআরডি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-অক্টোবর) বিদেশী ঋণ সহায়তার প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে ৫২ কোটি ২৬ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার। গত অর্থবছর (২০২৩-২০২৪) একই সময়ে ঋণের প্রতিশ্রুতি পাওয়া গিয়েছিল ৫৮৫ কোটি ৯১ লাখ মার্কিন ডলার।
শতকরা হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে পাঁচ মাসে ঋণ প্রতিশ্রুতি কমেছে ৯১ শতাংশ।
২০২৪-২৫ অর্থবছরে পাঁচ মাসে অনুদানের প্রতিশ্রুতি ছিল ২৭ কোটি ৩৮ লাখ ডলার এবং ঋণের প্রতিশ্রুতি ছিল ২৪ কোটি ৮৮ লাখ ডলার। অন্য দিকে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এই সময়ে অনুদানের প্রতিশ্রুতি ছিল ২৮ কোটি ৬৩ লাখ ডলার এবং ঋণের প্রতিশ্রুতি ছিল ৫৫৭ কোটি ২৭ লাখ ডলার।

ইআরডি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এই সময়ে উন্নয়ন সহযোগী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ঋণ ছাড় করেছে চলতি অর্থবছরের ৫ মাসে ১৫৪ কোটি ৩৭ লাখ ডলার। গত অর্থবছরে একই সময়ে যা ছিল ২১১ কোটি ৭০ লাখ ডলার। আলোচ্য সময়ে অর্থ ছাড় কমেছে ২৭ শতাংশ।
ঋণ প্রতিশ্রুতি ও ছাড় কমে গেলেও এই সময়ে ঋণ পরিশোধ বেড়েছে ২৮ দশমিক ৪৪ শতাংশ। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে জুলাই-অক্টোবরে যেখানে ঋণ পরিশোধে ব্যয় হয়েছিল এক হাজার ৪৬৪ কোটি ৪৮ লাখ (এর মধ্যে মূল ঋণ পরিশোধে ব্যয় ৮৪৬ কোটি ৩৬ লাখ ডলার এবং সুদ পরিশোধে ব্যয় হয়েছিল ৬১৮ কোটি ১১ লাখ ডলার) ডলার। সেখানে চলতি অর্থবছরের ৫ মাসে ঋণ পরিশোধে ব্যয় হয়েছে দুই হাজার ৪২ কোটি ৬৪ মার্কিন ডলার। এর মধ্যে ঋণ পরিশোধে ব্যয় হয়েছে এক হাজার ২৫৯ কোটি ৭০ লাখ ডলার এবং সুদ খাতে ব্যয় হয়েছে ৭৮২ কোটি ৯৪ লাখ ডলার।

ইআরডির এক সূত্র জানায়, জুলাই এবং আগস্ট মাসে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে প্রকল্প বাস্তবায়ন ব্যাহত হয়েছে, যার ফলে বিতরণ কমেছে। অনেক বৈদেশিক ঋণ দ্বারা তহবিলপ্রাপ্ত প্রকল্প স্থগিত হয়ে গেছে, কারণ বিদেশী পরামর্শক এবং কর্মীরা অনুপস্থিত ছিলেন। সরকার বর্তমানে ঋণ প্রস্তাবগুলোর পর্যালোচনা করছে, যা নতুন ঋণ চুক্তির জন্য সাময়িকভাবে স্থগিত হয়েছে। পর্যালোচনা শেষ হলে সরকার ঋণ আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করার পরিকল্পনা করছে এবং তার লক্ষ্য পূরণের জন্য চেষ্টা করবে। তা ছাড়া বিশ্বব্যাংক এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)সহ উন্নয়ন অংশীদাররা বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য অর্থায়ন করতে সহায়তা করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
এ দিকে অন্তর্বর্তী সরকার বৈদেশিক অর্থায়নে প্রয়োজনীয় প্রকল্পগুলোকে অগ্রাধিকার দেয়ার এবং অপ্রয়োজনীয় প্রকল্পগুলো বন্ধ করার দিকে মনোযোগ দিচ্ছে। ইআরডি সংস্থাগুলোকে বৈদেশিক ঋণ বরাদ্দের জন্য অগ্রাধিকার প্রকল্পগুলোর একটি তালিকা জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement