০২ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮ পৌষ ১৪৩০, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৫
`
নীলফামারীর জনসভায় তারেক রহমান

সমস্যা সমাধানে দেশকে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় ফিরিয়ে আনতে হবে

নীলফামারীতে আমরা বিএনপি পরিবারের অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখছেন তারেক রহমান : নয়া দিগন্ত -


বিএনপির সবচেয়ে বড় শক্তি জনগণ, রাজনৈতিক সব ক্ষমতার উৎস জনগণ উল্লেখ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, নির্বাচন প্রক্রিয়ার মধ্যে বাংলাদেশকে ফিরিয়ে আনতে হবে। মসজিদ কমিটি থেকে সংসদ পর্যন্ত নির্বাচিত প্রতিনিধিদের দিয়ে পরিচালনা করতে হবে। তাহলে দেশের সব সমস্যা পর্যায়ক্রমে সমাধান সম্ভব।
গতকাল নীলফামারীর দুরাছুরি দাখিল মাদরাসা মাঠে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ আয়োজিত বিএনপি নেতা গোলাম রব্বানীর পরিবারের কাছে বাসস্থানের চাবি হস্তান্তর ও ২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানে চার জেলার শহীদ পরিবারের মধ্যে আর্থিক সহায়তা অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
আমরা বিএনপি পরিবারের আহ্বায়ক প্রখ্যাত সাংবাদিক আতিকুর রহমান রুমনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন- বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু, কোষাধ্যক্ষ এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত, পল্লী উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক ফরহাদ হোসেন আজাদ, আমরা বিএনপির পরিবারের উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল, বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল খালেক ও আমিনুল ইসলাম, রংপুর মহানগর আহ্বায়ক সামসুজ্জামান সামু, জেলা আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম, নীলফামারী জেলা সভাপতি আলমগীর সরকার, শহীদ গোলাম রব্বানীর বড় মেয়ে রওনক জানান রিক্তা প্রমুখ।

তারেক রহমান বলেন, গোলাম রব্বানীরা চেয়েছিল গ্রামে-গঞ্জে দেশের মানুষের সমস্যাগুলো সমাধান করতে সরকার যেন বাধ্য থাকে। চেয়েছিল সামগ্রিকভাবে এমন একটি দেশ গড়ে তোলা, যেখানে কৃষক বীজ পাবে, সার পাবে। মানুষ স্বাস্থ্য ও শিক্ষা সেবা পাবে। রাস্তাঘাটে নিরাপত্তা পাবে। গোলাম রব্বানীদের সেই কথা সে দিনের স্বৈরাচার সরকার শুনতে চায়নি। স্বৈরাচার পালিয়ে গেলেও তার প্রেতাত্মারা আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। এদের থেকে সচেতন ও সতর্ক থাকতে হবে।
তিনি বলেন, এমন একটি দেশ গড়ে তুলতে হবে, যেখানে মানুষ তার সামাজিক নিরাপত্তা পাবে। বিভিন্ন মতের-পথের মানুষের সাথে পরামর্শ করে যে মতের সমর্থন বেশি তাদের পরামর্শে দেশ গড়ে তুলতে হবে। যেখানে মানুষের চাওয়াগুলো বাধাগ্রস্ত না হয়। এখানে আমরা গোলাম রব্বানীর পাশে দাঁড়াতে তার জন্য একটি আবাস বুনে দিচ্ছি। এ ধরনের হাজার গোলাম রব্বানী বাংলাদেশে রয়েছে। আমরা চাই, গোলাম রব্বানীর মতো ভাগ্য যেন আর কারো না হয়।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আমরা এমন একটি সরকার চাই যারা মানুষের কথা বলবে, মানুষের পাাশে থাকবে, জনগণের স্বাস্থ্য ও শিক্ষার জন্য কাজ করবে। বর্তমানে যে দেশে (যুক্তরাজ্য) আমি আছি, সেই দেশের সরকার নির্বাচন প্রক্রিয়ায় গঠিত হয়। নির্বাচন প্রক্রিয়ার মধ্যে বাংলাদেশকে ফিরিয়ে আনতে হবে। মসজিদ কমিটি থেকে শুরু করে জেলা, উপজেলা, পৌরসভা, সিটি করপোশেন, সংসদ নির্বাচনসহ সব প্রতিষ্ঠান নির্বাচিত প্রতিনিধি দিয়ে পরিচালিত হবে।
তারেক রহমান বলেন, গত ১৬ বছরের পালিয়ে যাওয়া স্বৈরাচার দেশের লাখ লাখ মানুষকে নির্যাতন করেছে। অসংখ্য মানুষকে হত্যা করেছে। পালিয়ে যাওয়ার সময় দুই হাজার ছাত্র-জনতাকে হত্যা ও ৩০ হাজার মানুষকে আহত করেছে। গোলাম রব্বানী একজন সাধারণ নিরীহ মানুষ। শুধু মানুষের জন্য কথা বলার জন্য, অন্যায়ের প্রতিবাদ করার জন্য ফ্যাসিবাদী হাসিনার নির্দেশে তাকে র‌্যাব দিয়ে ক্রসফায়ারে হত্যা করা হয়েছে। শহীদদের ফিরিয়ে আনা না গেলেও গোলাম রব্বানীদের লক্ষ্য ছিল মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা।
তারেক রহমান বলেন, বাংলাদেশের প্রত্যেক মানুষের ভিন্ন ভিন্ন সমস্যা আছে। কারো কর্মসংস্থান দরকার, কারো বিদ্যুতের সমস্যা। স্কুল, কলেজ, মাদরাসাশিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সমস্যা। কৃষকের সমস্যা, শিক্ষা সমস্যার সমাধান করতে হলে, সারা দেশের সমস্যাগুলো পর্যায়ক্রমে সমাধান করতে হবে। এ জন্য প্রয়োজন নির্বাচিত সরকার।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, আজ ছাত্ররা যখন সংবিধান বাতিলের কথা বলেন, তখন মনে প্রশ্ন জাগে কেন সেটি বলা হচ্ছে। তাহলে শহীদ জিয়া স্বাধীনতার যে ঘোষণা দিয়েছিলেন তার কী হবে? তিনি যে বাংলাদেশের গণতন্ত্র এবং স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের জন্য যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছেলিনে সেগুলোর কী হবে? ফ্যাসিস্ট হাসিনা এবং শেখ মুজিবরের বিতর্কিত সংশোধনীগুলো বাতিল করা যেতে পারে; কিন্তু পুরো সংবিধান বাতিল করা যাবে না। কারণ সংবিধান বাতিল করলে মহান মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা ধ্বংস হয়ে যাবে।
অনুষ্ঠানে ২০১৪ সালে র‌্যাবের ক্রসফায়ারে নিহত নীলফামারী সদর উপজেলার লক্ষ্মীচাপ ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম রব্বানীর পরিবারের হাতে নতুন বাড়ির চাবি তুলে দেয়া হয়। এ ছাড়াও অনুষ্ঠানে চব্বিশের বিপ্লøবে পঞ্চগড়, দিনাজপুর, নীলফামারী ও ঠাকুরগাঁও জেলার শহীদ পরিবারগুলোর মধ্যে আর্থিক অনুদানের চেক হস্তান্তর করা হয়।

 


আরো সংবাদ



premium cement