শেখ হাসিনা চুরি করে সব কিছু পাচার করে দিয়েছে
- সৈয়দপুর (নীলফামারী) সংবাদদাতা
- ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:৩৮
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা: শফিকুর রহমান বলেছেন, শেখ হাসিনা চুরি করে সব কিছু পাচার করে দিয়েছে। ফোকলা করে ফেলেছে দেশের অর্থনীতিকে। বিকিয়ে দিয়েছে স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব। অথচ চোরের মায়ের ডাঙ্গর গলার মতো করে তারা স্বাধীনতার ঠিকাদার সেজে চেতানার নামে জাতিকে ঘুম পাড়িয়ে রেখে সব লুটেপুটে নিজেদেরকে পুষ্ট করেছে। কিন্তু তাদের চেতনাবাজি নতুন প্রজন্মের কাছে ধরা পড়ে যাওয়ায় তাদের শুধু পতনই ঘটাইনি, দেশ থেকেই বিতারিত করেছে।
তিনি গত রাত সাড়ে ৭টায় নীলফামারীর সৈয়দপুর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে এক পথসভায় এসব কথা বলেছেন। সৈয়দপুর উপজেলা ও শহর জামায়াত আয়োজিত এই পথসভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন, জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলের পরিচালক মাওলানা আব্দুল হালিম ও নীলফামারী জেলা আমির অধ্যক্ষ আব্দুস সাত্তার।
সৈয়দপুর উপজেলা আমির হাফেজ আব্দুল মুনতাকিমের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি আলহাজ মাজহারুল ইসলামের সঞ্চালনায় পথসভায় আরো বক্তব্য রাখেন- বীর মুক্তিযোদ্ধা ইউনুস আলী, জেলা পুজা উদযাপন কমিটির সভাপতি শিল্পপতি রাজ কুমার পোদ্দার রাজু, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যাপক মাওলানা আন্তাজুল ইসলাম, নায়েবে আমির অধ্যাপক ড. খায়রুল আনামসহ স্থানীয় ও জেলা নেতারা।
প্রধান অতিথি ডা: শফিকুর রহমান আরো বলেন, দেশকে আমরা সাজানো বাগান হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। এ জন্য সবার ঐক্যবদ্ধ সহযোগিতা প্রয়োজন। তাই সম্মিলিত প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। তাহলে অর্থনৈতিকভাবে ফোকলা করে দেয়া দেশকে আবার সমৃদ্ধ ও কল্যাণমুখী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে।
আমরা এমন একটা দেশ গড়তে চাই যে দেশে কোনো বৈষম্য থাকবে না। সব ধর্মের মানুষ মিলেমিশে সমান অধিকারের ভিত্তিতে বসবাস করবে। সর্বক্ষেত্রে দেশাত্মবোধের মাধ্যমে দেশকে উন্নত করতে সচেষ্ট থাকবে। কোনো চাঁদাবাজ, দুষ্কৃতকারী, দুর্নীতিবাজ থাকবে না। কেউ কোনোভাবে অন্যায়ের শিকার হবে না। কল্যাণমুখী এমন দেশ গঠনের মাধ্যমে কল্যাণ রাষ্ট্রের মডেল উপস্থাপন করা হবে।
কৃষকরা ফসল ফলাবে দেশকে সহযোগিতা করতে এবং দেশের মান উন্নত করতে। কোনো ব্যবসায়ীর কাছ থেকে তার প্রতিষ্ঠান কেড়ে নেয়া হবে না। কাউকে জুলুমের মাধ্যমে দমিয়ে রাখা হবে না। শিল্প, স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ সর্বক্ষেত্রে সমান্তরাল সমৃদ্ধ করে জাতিকে সাজানো বাগানের মতো দেশ উপহার দেয়া হবে।
এ জন্য তিনি উপস্থিত সবার সহযোগিতা কামনা করে বলেন, চব্বিশের তরুণ যোদ্ধারা যে লক্ষ্য ও চেতনা নিয়ে দেশকে ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্ত করেছে, তা বাস্তবায়ন করার জন্য আমাদের সদা প্রস্তুত থাকতে হবে। জুলাই অভ্যুত্থানের সফলতাকে নস্যাৎ করার জন্য নানামুখী ষড়যন্ত্র করছে পতিত স্বৈরাচার। সর্বশেষ তারা সবিচালয়ে অগ্নিকাণ্ড ঘটিয়ে কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের নথিপত্র ধ্বংস করেছে। এই ঘটনার সাথে যারাই জড়িত তাদের মুখোশ উন্মোচন করে তাদের উপযুক্ত বিচার করতে হবে।
একইভাবে তিনি জুলাই-আগস্ট গণহত্যার বিচার দাবি করেন। সেই সাথে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি ১৭ বছর পর্যন্ত ভোটার করার প্রস্তাব বাস্তবায়নেরও দাবি জানান। এ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, শিশু-কিশোর ও যুবকরাই আমাদেরকে নতুন বাংলাদেশ উপহার দিয়েছে। তাই তাদেরকে ভোট দেয়ার সুযোগ করে দিয়ে আমরা কিছুটা হলেও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তাদের প্রতি আমাদের দায় শোধ করতে পারি। এ ব্যাপারে যারা বিরোধিতা করছে, তাদেরকে শুধরানোর আহ্বান জানান তিনি।
সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম বলেন, যারা আয়নাঘরের প্রতিষ্ঠা করে, জাতিকে দুঃসহ অপশাসনে নিপতিত করে দেশকে বিক্রির পাঁয়তারা করেছিল তাদের জাতি আর কখনই ফিরতে দেবে না। ফ্যাসিবাদ বিদায় হয়েছে, তা চিরদিনই এ দেশ থেকে বিতারিত থাকবে। আওয়ামী লীগ তাদের দোষ স্বীকার করে জাতির কাছে ক্ষমা না চাওয়া পর্যন্ত এ প্রজন্ম তাদের বিরুদ্ধেই থাকবে। সব ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করার জন্য সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান তিনি। আগামীর বাংলাদেশ হবে ইসলামের, সমৃদ্ধির ও কল্যাণের। এ জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থেকে প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।
দক্ষিণ কোরিয়ায় বিমান দুর্ঘটনায় শোক : দক্ষিণ কোরিয়ার একটি বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ১৮১ জন যাত্রীর মধ্যে ১৭৯ জনই নিহত হওয়ার মর্মান্তিক ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা: শফিকুর রহমান। গতকাল এক শোকবাণীতে তিনি বলেন, দক্ষিণ কোরিয়ার একটি বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ১৮১ জন যাত্রীর মধ্যে ১৭৯ জনই নিহত হওয়ার মর্মান্তিক ঘটনায় আমি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও আমার নিজের পক্ষ থেকে গভীর শোক প্রকাশ করছি। এ দুর্ঘটনায় দক্ষিণ কোরিয়ার জনগণের মতো বাংলাদেশের জনগণও গভীরভাবে শোকাহত। আশাকরি দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার বিমান দুর্ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনা আর না ঘটে সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলে আশা করি। এ বিমান দুর্ঘটনায় যারা নিহত হয়েছেন আমি তাদের পরিবার-পরিজন এবং দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার ও জনগণের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা