চারদিকে ষড়যন্ত্রের আগুন জ্বলছে
খুলনার কর্মী সম্মেলনে ডা: শফিক- খুলনা ব্যুরো ও কয়রা সংবাদদাতা
- ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:২৯
যারা মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত হয়ে বুকে গুলি আলিঙ্গন করার জন্য রাস্তায় নেমেছিল তারা রাস্তা ছেড়ে পালায়নি। যারা গায়ের ও গুলির জোরে জনগণকে দমন করতে এবং তাড়িয়ে দিতে চেয়েছিলেন শেষ পর্যন্ত তারাই পালিয়ে গেছেন। এখন চারদিকে ষড়যন্ত্রের আগুন জ্বলছে।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা: শফিকুর রহমান গতকাল খুলনার কয়রা উপজেলা সদরের কপোতাক্ষ কলেজ ময়দানে দলের উপজেলা শাখার কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আবু সাঈদ রোকেয়া বিশ^বিদ্যালয়ের একজন মেধাবী ছাত্র। সে তার দাবির সপক্ষে বুক পেতে দিয়েছিল। গভীর আত্মবিশ^াসে চিৎকার করে বলেছিল, আমার দেশের মানুষ অন্তত আমার বুকে গুলি করবে না। কিন্তু পরপর তিনটি গুলি করে তাকে নির্মমভাবে ফেলে দেয়া হলো।
আওয়ামী লীগ দেশের বিচার বিভাগ, নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন এমনকি শিক্ষাব্যবস্থা সব ধ্বংস করেছে। মেয়েদের ইজ্জতের কোনো গ্যারান্টি ছিল না। আওয়ামী লীগ এদেশের মালিক ছিল না। তারা দেশের মালিক থাকলে দেশ ছেড়ে পালাতো না। বাড়িওয়ালা বাড়ি ছেড়ে পালায় না, বরং ভাড়াটিয়া খেলাপি হলে পালিয়ে যায়। আওয়ামী লীগের বেলায়ও তাই হয়েছে। শেখ হাসিনা দেশ থেকে চলে গেলেও দেশকে শান্তিতে রাখতে দিচ্ছে না। চারদিকে ষড়যন্ত্রের আগুন জ্বলছে।
তিনি বলেন, আগামীতে আমরা এমন নির্বাচন চাই, যেখানে প্রাপ্ত ভোটের আনুপাতিক হারে দলগুলো সংসদে প্রতিনিধিত্ব করবে। এই দেশকে কারো হাতে আর আমরা জিম্মি হতে দেবো না।
ভারতকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, আমরা প্রতিবেশীকে সম্মান করি তাই আপনারাও প্রতিবেশীকে সম্মান করতে শিখুন। আমাদের দিকে আর চোখ তুলে তাকাবেন না, কেননা এদেশের মানুষ প্রতিবাদ করতে শিখেছে।
কয়রা উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে ও খুলনা জেলা সহকারী সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমানের পরিচালনায় কর্মী সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, খুলনা জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা এমরান হুসাইন, সাতক্ষীরা জেলা আমির মাওলানা শহিদুল ইসলাম মুকুল প্রমুখ।
এর আগে ডা: শফিকুর রহমান ডুমুরিয়া উপজেলার আঠারো মাইল বাজারে এবং পাইকগাছা উপজেলার গদাইপুর ফুটবল ময়দানে পথ সমাবেশে বক্তৃতা দেন।
ডুমুরিয়ায় পথসভা
ডুমুরিয়া (খুলনা) সংবাদদাতা জানান, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা: শফিকুর রহমান বলেছেন, যারা ১৭ বছরে সোনার বাংলাদেশকে শ্মশানে পরিণত করেছে, দেশের লাখ লাখ কোটি টাকা লুটপাট করে বিদেশে পাচার করেছে বাংলাদেশের মাটিতে তাদের রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই। তিনি গত বুধবার কয়রা যাওয়ার পথে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার আঠারোমাইল বাসস্ট্যান্ডে এক পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ১৫ বছর ধরে দেশে কোনো নির্বাচন হয়নি, বিরোধী দলমতের মানুষের ওপর অত্যাচারের স্টিমরোলার চালিয়ে ক্ষমতার মসনদকে পাকাপোক্ত করতে চেয়েছিল জালিম শেখ হাসিনা।
ডুমুরিয়া উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মুখতার হুসাইনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পথসভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক, খুলনা জেলা শাখার আমির মাওলানা এমরান হুসাইন, সাতক্ষীরা জেলা শাখার আমির শহিদুল ইসলাম মুকুল। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মাস্টার শফিকুল আলম, মাওলানা রবিউল ইসলাম, ড. একরাম উদ্দিন সুমন, বি এম আলমগীর হুসাইন, মাওলানা হাফিজুর রহমান, মাওলানা সাইদুল হোসেন, মো: আমানুল্লাহ, মাওলানা ফয়েজ উদ্দিন, হাফেজ রবিউল ইসলাম, মাওলানা আব্দুল হালিম, ডা: আব্দুল মান্নান, মাওলানা আব্দুল মুত্তালিব, মাওলানা নজরুল ইসলাম প্রমুখ।
পাইকগাছায় পথ সমাবেশ
পাইকগাছা (খুলনা) সংবাদদাতা জানান, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা: শফিকুর রহমান বলেছেন, স্বৈরাচার পালিয়ে গেলেও এই দেশ ও সমাজকে অস্থির করার জন্য তাদের দোসররা বিভিন্ন কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা ঐক্যবদ্ধ আছি। তাদের সব চক্রান্ত ব্যর্থ হয়েছে, আগামীতেও ব্যর্থ হবে।
তিনি গত আওয়ামী লীগ সরকারের সমালোচনা করে বলেন, তারা বলেছিল বাংলাদেশ নাকি বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল! আসলে উন্নয়নটা তাদের হয়েছে জনগণের না। গত সরকারের শাসনামলে খুন, গুম ও লটতরাজের সমালোচনা করে বলেন ভারতের কাছে তারা বাংলাদেশকে বন্ধক (ইজারা) দিয়েছিল। আসলে শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন না, তিনি ছিলেন সেবাদাসী। ভারতের প্রতি স্পষ্ট বার্তা দিয়ে তিনি বলেন, প্রতিবেশী দেশ হিসেবে আমরা আপনাদের সম্মান করি, আপনারাও আমাদের সম্মান করতে শিখুন। গতকাল সকালে পাইকগাছা গদাইপুর ফুটবল ময়দানে জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত পথ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
জামায়াতে ইসলামী পাইকগাছা থানা শাখার আমির মাওলানা সাঈদুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও খুলনা অঞ্চলের সহকারী পরিচালক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, জামায়াত নেতা সাবেক এমপি অধ্যক্ষ মুহাম্মদ রুহুল কুদ্দুস, সাতক্ষীরা জেলা আমির মাওলানা শহিদুল ইসলাম মুকুল, কেন্দ্রীয় মজলিসের শূরা সদস্য ও খুলনা জেলা আমির মাওলানা এমরান হুসাইন প্রমুখ।
ছাত্রশিবিরের কার্যকরী পরিষদের অধিবেশন সমাপ্ত
নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা: শফিকুর রহমান বলেছেন, বাংলাদেশের জনগণের আকাক্সিক্ষত ন্যায়ভিত্তিক ও শান্তিপূর্ণ সমাজ প্রতিষ্ঠায় ইসলামী ছাত্রশিবির নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আদর্শ সমাজ গড়তে সৎ, দক্ষ ও দায়িত্বশীল কর্মীবাহিনী প্রয়োজন, যারা শুধু নিজেদের নয়, চার পাশের মানুষকেও ইতিবাচক পথে উদ্বুদ্ধ করবে। এজন্য ছাত্রশিবিরের কর্মীদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে দায়িত্বশীলতা ও আদর্শিক মান বজায় রেখে নিজেদের গড়ে তুলতে হবে এবং জ্ঞান ও নৈতিকতায় বলীয়ান হতে হবে।
রাজধানীর মগবাজারের আলা-ফালাহ মিলনায়তনে বুধবার বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কার্যকরী পরিষদের সমাপনী অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় অধিবেশনটি সকাল ৮টায় দারসুল কুরআনের মাধ্যমে শুরু হয়ে রাত ১২.১০ মিনিটে কেন্দ্রীয় সভাপতির সমাপনী বক্তব্য শেষে দোয়া ও মুনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হয়। অধিবেশনে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি রফিকুল ইসলাম খান, মতিউর রহমান আকন্দ ও নুরুল ইসলাম বুলবুল।
অধিবেশনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শহীদ মিকদাদ হোসেন খান আকিবের বাবা, নাটোর সিটি কলেজের অধ্যাপক মো: দেলোয়ার হোসেন। উদ্বোধন ঘোষণাকালে তিনি ছাত্রশিবিরের কাছে আগামী দিনে দেশ, জাতি এবং ছাত্রশিবিরের উন্নতির জন্য নানা আকাক্সক্ষা ও প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
সমাপনী বক্তব্যে কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, ছাত্রশিবির তার কার্যক্রম সর্বদা জ্ঞান, প্রজ্ঞা এবং হিকমতের আলোকে পরিচালনা করে। তাই আমাদের গভীর জ্ঞান অর্জনে অধ্যবসায় করতে হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা