শেখ হাসিনাকে ফেরাতে ভারতকে চিঠি দিয়েছে ঢাকা
- কূটনৈতিক প্রতিবেদক
- ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৫৬
মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত পাঠাতে ভারতের কাছে নোট ভারবাল (কূটনৈতিক পত্র) পাঠিয়েছে বাংলাদেশ। গত জুলাই ও আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান দমনে গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকে শেখ হাসিনাসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর তা তামিল করতে যথাযথ পদক্ষেপ নিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এরই প্রেক্ষাপটে গণ-অভ্যুত্থানের মুখে দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেয়া শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে দিতে দিল্লিকে চিঠি পাঠিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
গতকাল পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব:) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী পৃথকভাবে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এসব কথা জানান। দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তৌহিদ হোসেন বলেন, ভারতকে আমরা পরিষ্কারভাবে জানিয়েছি যে, বিচারের জন্য আমরা শেখ হাসিনাকে ফেরত চাচ্ছি। এ জন্য ভারত সরকারকে নোট ভারবাল দেয়া হয়েছে।
এর আগে সকালে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদর দফতরে বিজিবি দিবস-২০২৪ উপলক্ষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণের জন্য ভারতকে অনুরোধ জানাতে এরই মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এটা প্রক্রিয়াধীন আছে। বাংলাদেশের সাথে ভারতের প্রত্যর্পণ চুক্তি রয়েছে। এই চুক্তির আওতায় ভারতে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনা যেতে পারে।
জানা গেছে, চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের দফতরে আসেন। এ সময় শেখ হাসিনাকে ফেরাতে ভারতকে চিঠি দেয়া নিয়ে আলোচনা হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নোট ভারবাল দেয়া হলো।
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য ২০১০ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করেছিল আওয়ামী লীগ সরকার। এখন ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান দমাতে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের চালানো নৃশংস দমন-পীড়নকে ‘গণহত্যা’ ও ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ’ হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে একই আদালতে বিচারের উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। গত ৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় সারা দেশে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অনেক অভিযোগ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা ও প্রসিকিউশন অফিসে জমা পড়েছে। এর মধ্যে একটি মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এবং আরেকটি মামলায় তার পরিবারের সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতাসহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে ট্রাইব্যুনাল।
গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে সেখানেই আছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তার দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের কয়েকজন গ্রেফতার হলেও অনেকেই এখনো দেশে-বিদেশে আত্মগোপনে রয়েছেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর বিদেশে অবস্থানরত আসামিদের ফিরিয়ে আনতে আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলের মাধ্যমে ‘রোড নোটিশ’ জারির উদ্যোগ নিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা