খানাখন্দে ভরা রাজধানীর সড়ক
- খালিদ সাইফুল্লাহ
- ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
রাজধানীর মুগদা হাসপাতালের সামনের রাস্তা প্রায় দুই বছর ধরে ভেঙেচুরে একাকার হয়ে আছে। গত বর্ষায় ওই সড়কে বেশির ভাগ সময় হাঁটুপানি জমে থাকত। বৃষ্টি কিছুটা কমলে সেখানে সিটি করপোরেশন ইট ফেলেছিল; কিন্তু তাতে অবস্থা আরো খারাপ হয়েছে। এখন রাস্তা এবড়োখেবড়ো হয়ে গেছে। ওই সড়ক দিয়ে অসংখ্য রোগীসহ প্রতিদিন কয়েক লাখ মানুষ যাতায়াত করে। কিন্তু সিটি করপোরেশন সড়কটি মেরামত করতে পারেনি। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নতুন সরকার আসার পর দুই দফা টেন্ডার আহ্বান করেও কাক্সিক্ষত ঠিকাদার পাওয়া যায়নি। এ জন্য সড়ক উন্নয়ন করা যাচ্ছে না। তবে প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এভাবেই গত বর্ষার পর রাজধানীর অনেক এলাকার সড়ক ভেঙেচুরে একাকার হয়ে গেছে। কিন্তু সেগুলোর উন্নয়নে সিটি করপোরেশনের কাক্সিক্ষত পদক্ষেপ দেখেনি নগরবাসী।
বাসাবো ওয়াসা রোডের বাসিন্দা আব্দুল ওহাব নয়া দিগন্তকে বলেন, ওয়াসা রোডটি কয়েক কিলোমিটার। বাসাবো থেকে যাত্রাবাড়ী চলে গেছে। মুগদা বিশ্বরোডের বিকল্প রাস্তা এটি। কিন্তু রাস্তাটি গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে ভেঙেচুরে আছে। কিন্তু সিটি করপোরেশনের কোনো নজর নেই। আঞ্চলিক অফিস আছে; কিন্তু তাদের প্রকৌশলীদের চোখ আছে বলে মনে হয় না। নগরবাসীর দুর্ভোগ দেখার সময় তাদের নেই। তারা অফিসে বসেই বেতন নিচ্ছেন মনে হয়। শুধু এ রাস্তা নয় আশপাশের অলিগলির যত রাস্তা আছে সবই নষ্ট হয়ে গেছে। মুগদা প্রধান সড়ক অনেক দিন ধরে ভাঙাচোরা ছিল। সম্প্রতি সেটির উন্নয়নে কাজ চলছে, যা আরেক ভোগান্তির কারণ হয়ে উঠেছে।
উত্তর বাসাবো এলাকার বাসিন্দা এনামুল হাসান নয়া দিগন্তকে বলেন, খিলগাঁও ফ্লাইওভার থেকে নামার পর বাম দিকে নামলেই যে রাস্তা সেটি বাসাবোর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা। কবে শেষ মেরামত হয়েছে আমরা জানি না। রাস্তায় বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। এ রাস্তা দিয়ে যানবাহনে চড়ে গেলেও গায়ে ব্যথা হয়ে যায়। অসুস্থ মানুষ রিকশায় গেলে তিনি আরো অসুস্থ হয়ে পড়েন। শুধু রাস্তা নয় খিলগাঁও ফ্লাইওভারের রাস্তায়ও বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। কিন্তু দেখার কেউ নেই। শাহজাহানপুরের রাস্তায় অনেক স্থানে বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। মতিঝিলে রাস্তা কেটে ফেলে রাখা হয়েছে। মতিঝিল থেকে টিকাটুলী সড়কে কাজ চলছে ধীরগতিতে। মীরহাজিরবাগ, যাত্রবাড়ীসহ বিভিন্ন এলাকার সড়কেও একই দশা। নয়াপল্টন, বিজয়নগর, কাকরাইল, মালিবাগ, মৌচাক, মগবাজারসহ সব বড় সড়কেই গর্ত তৈরি হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান নয়া দিগন্তকে বলেন, চলতি বছর অতিমাত্রায় বৃষ্টিপাত হওয়ার কারণে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) এলাকার রাস্তাগুলো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অতিবৃষ্টিতে রাস্তাঘাটে যে ছোট ছোট খানাখন্দ হয়েছে সেগুলো মেরামতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে আমরা কাজ করেছি, যা আগামী ১৫ দিনের ভেতরে সম্পন্ন হয়ে যাবে। তারপর বড় বড় রাস্তার কাজগুলো আমরা দরপত্র প্রক্রিয়ায় দ্রুত সময়ে ঠিক করার ব্যবস্থা নিয়েছি। মিজানুর রহমান আরো বলেন, নাগরিক সেবায় নানাবিধ কার্যক্রমের কারণে রাস্তা খোঁড়ার জন্য বিভিন্ন সংস্থাকে অনুমতি দেয়া হয়, রাস্তা খনন করতে গিয়ে দেখা যায় তারা কার্যক্রম পরিচালনা করে নির্ধারিত সময়ের ভেতরে আমাদের কাছে বুঝিয়ে দিতে পারে না। তা ছাড়া দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতির কারণে কাজ শুরু করতে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। তিনি জানান, রাস্তা, সারফেজ ড্রেন, ফুটপাথের ১৩টি প্রকল্পের চারটির ইতোমধ্যে দরপত্রের মাধ্যমে কার্যাদেশ দিয়ে দেয়া হয়েছে, যা মাঠপর্যায়ে চলমান। বাকি ৯টি প্রকল্পের দরপত্র চলমান আছে। সড়ক খননের ১২টি কাজের মধ্যে সাতটি চলমান আছে, বাকিগুলোর দরপত্র চলছে এবং শিগগিরই আমরা কাজগুলো শেষ করতে পারব।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা