পররাষ্ট্র উপদেষ্টা আগামী মাসে চীন যাচ্ছেন
- কূটনৈতিক প্রতিবেদক
- ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই’র আমন্ত্রণে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন আগামী মাসে বেইজিং যাচ্ছেন। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত আগস্টে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা হিসেবে এটাই হবে তৌহিদ হোসেনের প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফর। বিগত সরকারের পতনের পর শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেয়া, সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রোপাগান্ডা এবং সর্বশেষ বাংলাদেশের বিজয় দিবসে মুক্তিযোদ্ধাদের অবদানকে পাস কাটিয়ে ভারতীয় সামরিক বাহিনীর একতরফা কৃতিত্ব দাবি করে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির টুইটবার্তাসহ নানা ইস্যুতে ভারতের সাথে সম্পর্কের টানাপড়েনের মধ্যে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার চীন সফরকে তাৎপর্যপূর্ণ বিবেচনা করা হচ্ছে।
২০২৫ সালে বাংলাদেশ ও চীনের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি হবে। এ কারণে সারা বছরজুড়ে বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজন করার পরিকল্পনা দুই দেশের রয়েছে। সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানসূচি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃত্বের আলোচনার মধ্য দিয়ে শুরু করতে চায় বেইজিং।
অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক অংশীদার হিসেবে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার চীন। বাংলাদেশের অবকাঠামো, বিদ্যুৎসহ মেগা প্রকল্পগুলোতে চীনের আর্থিক ও কারিগরি সহয়তা রয়েছে। তবে রাজনৈতিকভাবে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ থেকে চীন বিরত থাকার নীতি অনুসরন করে। তাদের নীতিতে সাধারণত অর্থনৈতিক স্বার্থই প্রাধান্য পায়। তাই বিগত হাসিনা সরকারের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করলেও গণ-অভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা নেয়ার পরপরই প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে স্বাগত জানিয়েছে চীন। দেশটি বর্তমান সরকারের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। অন্য দিকে ভারত তাদের সমর্থিত হাসিনা সরকারের পতনকে স্বাভাবিকভাবে নিতে পারেনি। এ কারণে বাংলাদেশকে ঘায়েল করতে প্রথমেই তারা সংখ্যালঘু নির্যাতনের কল্পিত অভিযোগের কার্ডটি খেলেছে। পরবর্তী সময়ে ভারতে এক শ্রেণীর গণমাধ্যম ও হিন্দুত্ববাদী গ্রুপগুলো এই খেলাকে এগিয়ে নিয়ে গেছে, যা ভারত ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে এখনো অব্যাহত রয়েছে। এক পর্যায়ে এটি আগরতলায় অবস্থিত বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে হামলা, কলকাতা উপ-হাইকশিনের সামনে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অবমাননা এবং মুম্বাই উপ-হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভ পর্যন্ত গড়িয়েছে। বাংলাদেশীদের জন্য জরুরি চিকিৎসা ছাড়া সব ধরনের ভিসা বন্ধ করে দিয়েছে প্রতিবেশী দেশটি।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ চীনে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সরকারি সফরটিতে তাৎপর্যপূর্ণ বিবেচনা করা হচ্ছে। বাংলাদেশে তিস্তা প্রকল্পে চীনের সম্ভাব্য বিনিয়োগসহ সামরিক, অর্থনৈতিক বিভিন্ন ইস্যুতে বিগত সরকারের সময়ে ভারত বিরোধীতা করে এসেছে। এ ছাড়া ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলকে কেন্দ্র করে ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপট তো রয়েছেই। অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে চীনের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক কতটুকু এগোনো সম্ভব হবে তা পররাষ্ট্র উপদেষ্টার আসন্ন বেইজিং সফরে পরিষ্কার বার্তা পাওয়া যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা