২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৬ পৌষ ১৪৩১, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

তাবলিগের ভারতীয় নেটওয়ার্ক ধ্বংস করতে হবে : হেফাজত

-


বিশ্ব ইজতেমার ময়দানে ঘুমন্ত ও তাহাজ্জুতরত নিরীহ তাবলিগ জামাতের ওপর সাদপন্থীদের পরিকল্পিত হামলাকে ‘দুই পক্ষের সংঘর্ষ’ হিসেবে মিডিয়ায় অপপ্রচারের প্রতিবাদ জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব মাওলানা সাজেদুর রহমান।
গতকাল এক বিবৃতিতে তারা বলেন, টঙ্গী ইজতেমার ময়দানে যখন আমাদের তাবলিগের সাথী ভাইরা গভীর রাতে তাহাজ্জুত পড়ছিলেন এবং তাদের অনেকেই ঘুমন্ত ছিলেন, ঠিক তখনই চিহ্নিত আওয়ামী দোসর সাদপন্থীরা পরিকল্পিতভাবে অতর্কিত সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে চার জনকে শহীদ করেছে এবং অসংখ্য সাথী ভাইকে আহত করেছে। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমাদের জোরাল দাবি, অবিলম্বে হামলায় জড়িত সাদপন্থী সবাইকে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক বিচার করতে হবে। একইসাথে তাদের আওয়ামী ও ভারতীয় ষড়যন্ত্রমূলক নেটওয়ার্ক ধ্বংস করে তাদের সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে। এ ছাড়া ভিকটিম পক্ষের সবাইকে আমরা শান্ত থাকার আহ্বান করছি।
তারা আরো বলেন, একপক্ষীয় হামলার এ ঘটনাকে ‘দুই পক্ষের সংঘর্ষ’ হিসেবে অপপ্রচার চালিয়েছে ভারতের এজেন্ট হিসেবে চিহ্নিত একদল মিডিয়া। এমন নির্লজ্জ হলুদ সাংবাদিকতার আমরা তীব্র নিন্দা জানাই। নিজস্ব রাজনৈতিক এজেন্ডা অনুযায়ী কোনো ঘটনাকে ‘সংঘর্ষ’ আর কোনো ঘটনাকে ‘হামলা’ বা ‘তাণ্ডব’ বলা কোনোভাবেই বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার উদাহরণ নয়। তাদের অন্তত লজ্জা হওয়া উচিত।
হেফাজত নেতারা বলেন, বিতর্কিত ভারতীয় আলেম মাওলানা সাদের অনুসারী দাবি করে তাবলিগে বিভাজনের ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে দ্বীনের মুখোশধারী একদল চিহ্নিত আওয়ামী দোসর। ফ্যাসিস্ট হাসিনার আমল থেকেই সাদপন্থীরা আওয়ামী লীগের তাঁবেদারি করে শুধু তাবলিগে বিভাজনই নয়, আলেম-ওলামার বিরুদ্ধেও বিদ্বেষমূলক প্রপাগান্ডা চালিয়েছে।

বিগত ২০১৮ সালের ডিসেম্বরেও তারা ইজতেমা ময়দানে দিনের আলোতে লোহার গেট ভেঙে নিরীহ আলেম-ওলামা ও মাদারাসাছাত্রদের ওপর লাঠি নিয়ে নৃশংস হামলা চালায়, যার ভিডিও প্রমাণ এখনো রয়েছে। তখনো একজন নিহতসহ আহত হন অজস্র সাথী ভাই।
ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসর হওয়ায় তখন তাদের বিচার করা সম্ভব হয়নি। যদিও তখন থেকে উম্মাহর ঐক্য বিনষ্টকারী এই সন্ত্রাসী সাদপন্থীদের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ শুরু হলেও ফ্যাসিস্ট সরকারের কারণে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। আমরা আশাবাদী, ছাত্র-জনতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এ দেশে সাদপন্থী সন্ত্রাসীদের সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ করবেন এবং টঙ্গীর ময়দানে হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত সব দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করবেন।
ইজতেমা মাঠে সাদপন্থীদের হামলা ও হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে চট্টগ্রামে হেফাজতের বিক্ষোভ
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানান, বিশ্ব ইজতেমা মাঠে ইবাদতরত ও ঘুমন্ত মুসল্লিদের ওপর সাদপন্থীদের হামলা ও হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে চট্টগ্রামে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করেছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ চট্টগ্রাম মহানগর শাখা। গতকাল শুক্রবার বাদ জুমা আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদের সামনে হেফাজতে ইসলামের চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি মাওলানা হাফেজ তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
এরপর বিক্ষোভ মিছিল নগরীর চেরাগী পাহাড় হয়ে জামালখানস্থ চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে এসে আবারো সমাবেশে মিলিত হয়।

এতে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় হাটহাজারী বড় মাদরাসার সিনিয়র মুফতি ও মুহাদ্দিস আল্লামা জসিম উদ্দিন বলেন, দীর্ঘ কয়েকবছর ধরে ইহুদিদের দোসর পথভ্রষ্ট সাদপন্থীরা দাওয়াতে তাবলিগের মতো বিশুদ্ধ একটি দাওয়াতি কাফেলাকে কলুষিত করার নানান পাঁয়তারা চালিয়ে যাচ্ছে। নবীওয়ালা এই কাজ বাধাগ্রস্ত করতে এমন কোনো ষড়যন্ত্র বাকি নেই, যা তারা করেনি। তাদের সব ষড়যন্ত্র রুখে দিয়ে ওলামায়ে কেরাম যখন এই দ্বীনিকাজ মজবুতভাবে আঞ্জাম দিচ্ছেন এবং সাদপন্থীদের ভ্রান্ত আকিদা জনসম্মুখে প্রকাশ করে দিচ্ছেন, তখন এই সন্ত্রাসীগোষ্ঠী খুনোখুনির ঘৃণ্যপথ বেছে নিয়েছে। তিনি অবিলম্বে সাদ সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করে বিচার দাবি করেন। তিনি বলেন, টঙ্গী ইজতেমা ময়দান, কাকরাইল মসজিদ ও চট্টগ্রাম লাভলেইন মসজিদসহ সব তাবলিগি মারকাজকে সাদপন্থীদের কবল থেকে রক্ষা করতে হবে।
শাপলা গণহত্যা, ইসকনের হামলাসহ ইজতেমা ময়দানের এসব হত্যাকাণ্ড একই সূত্রে গাঁথা উল্লেখ করে হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা নাছির উদ্দিন মুনির বলেন, ৫ আগস্টের পরাজিত শক্তি এবার সাদলীগ হিসেবে আমাদের সামনে এসেছে। তারা যেকোনোভাবে এই দেশকে অস্থিতিশীল করে স্বৈরাচারীদের পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করতে চায়। আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাই, অবিলম্বে এসব খুনিচক্রকে গ্রেফতার করে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।
সমাবেশে বক্তব্য দেন হেফাজতের নায়েবে আমির আল্লামা আলী উসমান, মাওলানা লোকমান হাকিম, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মীর ইদরিস নদভী, নানুপুর মাদরাসার মুহাদ্দিস মাওলানা শওকত আলী, তাবলিগের কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য মাওলানা ইলিয়াস, হেফাজতে ইসলামের যুব বিষয়ক সম্পাদক কামরুল ইসলাম, মাওলানা জাকারিয়া মাদানি, মাওলানা ফয়সাল তাজ, মাওলানা হাফেজ আলী আকবর, মাওলানা হাবিবুল্লাহ ইসলামাবাদী প্রমুখ।

 


আরো সংবাদ



premium cement
ভারতে কারাভোগ শেষে ফিরল ১৫ বাংলাদেশী নারী-শিশু ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য বিভ্রান্তিকর : প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং কত টাকা বেতন পান সুনীতা উইলিয়ামস? জার্মানির ক্রিসমাস বাজারে গাড়ির তাণ্ডবে নিহত ২, আহত ৬৮ গাজায় কী করবেন ট্রাম্প? সিরিয়ার নতুন নেতার গ্রেফতারে কোটি ডলার পুরস্কার প্রত্যাহার যুক্তরাষ্ট্রের ইউনূসসহ ২০ জন উপদেষ্টার উপর ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞা আরোপের খবর ভুয়া এটিজেএফবি’র সভাপতি তানজিম, সাধারণ সম্পাদক বাতেন নির্বাচন ইস্যুতে সরকারকে চাপে রাখতে চায় বিএনপি আল আজহার শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন পূরণের চ্যালেঞ্জ গ্রহণের আহ্বান প্রফেসর ইউনূসের উপদেষ্টা হাসান আরিফ আর নেই

সকল