গুমের ন্যায়বিচার নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র
নির্বাচনের ঘোষণাকে স্বাগত- কূটনৈতিক প্রতিবেদক
- ২০ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি একই সাথে গুমের শিকার ব্যক্তি এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিতে স্বচ্ছ বিচারপ্রক্রিয়া নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছে। গতকাল ওয়াশিংটনে নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখ্য উপ-মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এ মন্তব্য করেন।
তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, ২০২৫ সালের শেষ অথবা ২০২৬ সালের শুরুতে নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান কী?
জবাবে প্যাটেল বলেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচন আয়োজনের যে প্রস্তুতির ঘোষণা দিয়েছে, সেটাকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। এতে বাংলাদেশের জনগণ তাদের নেতৃত্বকে বেছে নেয়ার সুযোগ পাবে। নির্বাচন আয়োজনের সময় নির্ধারণ এমন একটি বিষয়, যেদিকে আমাদের অব্যাহত পর্যবেক্ষণ থাকবে। পুরো প্রক্রিয়ায় আইনের শাসন ও গণতান্ত্রিক মূলনীতির বাস্তবায়নকে আমরা উৎসাহিত করছি। সারা বিশ্বে শান্তিপূর্ণ উপায়ে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে আমাদের অবস্থান রয়েছে।
তাকে আবারো প্রশ্ন করা হয়, বাংলাদেশে গুমের ঘটনাগুলো তদন্তে গঠিত কমিশনের দেয়া তথ্যের ওপর ভিত্তি করে নিউ ইয়র্ক টাইমস প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। গুমের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছে গুম কমিশন। বাংলাদেশে গুমের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র এর আগে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য কী?
জবাবে প্যাটেল বলেন, বাংলাদেশে বিগত দুই দশকে যেভাবে শত শত মানুষ জোরপূর্বক গুমের শিকার হয়েছে, তাতে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। জোরপূর্বক গুম মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। গুম ও আটক করে রাখার কারণে ভুক্তভোগীদের পরিবার মানসিক যন্ত্রণা এবং অনিশ্চয়তায় ভুগেছেন। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার এসব অপরাধ তদন্তে যে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, যুক্তরাষ্ট্র তাকে স্বাগত জানায়। গুমের শিকার ব্যক্তি এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের জন্য ন্যায়বিচার ও স্বচ্ছ বিচারপ্রক্রিয়া নিশ্চিতের জন্য আমরা আহ্বান জানাই।
অন্য আরেক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, নভেম্বরের শেষ দিকে ইতালিতে জি৭-এর সম্মেলনের সময় মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এবং ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্করের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। তাদের আলোচনার মৌলিক বিষয় কী ছিল? এছাড়া বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর হামলার বিষয়ে তারা কথা বলেছে কি না?
জবাবে মুখ্য উপ-মুখপাত্র বলেন, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাথে আমাদের ঘনিষ্ঠ অংশীদারিত্ব রয়েছে। তাদের সাথে নিরাপত্তা সমস্যা, বাণিজ্য সমস্যা, কনস্যুলার সমস্যা এবং ভিসাসহ নানা ইস্যুতে আমাদের কথা হয়। আমরা জয়শঙ্করের সাথে ব্লিঙ্কেনের বৈঠকের পর একটি বিবৃতি দিয়েছি। এর বাইরে আমার বলার কিছু নেই। তবে প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ভারতের সাথে মূল অংশীদার ছিল বাইডেন প্রশাসন।
দ্বিতীয় আরেক প্রশ্নে একই সাংবাদিক বাংলাদেশে কথিত হিন্দু নির্যাতনের কথা উল্লেখ করে বলেন, বাংলাদেশের হিন্দুদের সমর্থনে ওয়াশিংটন ডিসিসহ যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন স্থানে হাজার হাজার হিন্দু বিক্ষোভ করছে। গত সপ্তাহেও বিক্ষোভ হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী অনেক বাংলাদেশী এই বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে। তারা ব্লিঙ্কেনকে এ বিষয়ে হস্তক্ষেপের অনুরোধ জানিয়েছে। একই সময়ে বিক্ষোভকারীরা অনুরোধ জানিয়েছে, এ ব্যাপারে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত বা জাতিসঙ্ঘে যেন যুক্তরাষ্ট্র হস্তক্ষেপ করে এবং অপরাধীদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসা হয়। তাদের জন্য কি আপনাদের কোনো বার্তা আছে?
জবাবে প্যাটেল বলেন, ওই অঞ্চল আমাদের জন্য অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমে আমরা নিশ্চিত করতে চাই যে যুক্তরাষ্ট্রের বিক্ষোভগুলো শান্তিপূর্ণভাবে হচ্ছে। বিক্ষোভ সব মানুষের মৌলিক অধিকার। আমরা সারা বিশ্বে আমাদের অংশীদারদের কাছে মানবাধিকারের ওপর জোর দিতে থাকব। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সাথেও এ ইস্যুতে জোর দিয়ে যাবো।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা