২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৬ পৌষ ১৪৩১, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

ঋণের চতুর্থ কিস্তি ৬৫ কোটি পাওয়া যাবে ১০ ফেব্রুয়ারি : আইএমএফ

-

অর্থনীতির নাজুক পরিস্থিতি সামলানো অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে অভিহিত করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। সংস্থাটি বলেছে, আগস্টে দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের প্রভাব পড়েছে অর্থনীতিতে, গতি হয়েছে ধীর। যা সামলানো অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ব্যর্থ হলে তা আগামী নির্বাচিত সরকারের পক্ষে মোকাবেলা করা কঠিন হবে। গতকাল দুপুরে অর্থ মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলনে চলমান ঋণের চতুর্থ কিস্তি আর আর্থিক খাতের নানা প্রসঙ্গে সংস্থার পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন বাংলাদেশে আইএমএফের রিভিউ মিশন প্রধান ক্রিস পাপাজর্জিও।
বাংলাদেশের বাজারে অব্যাহতভাবে খাদ্যমূল্য বৃদ্ধি ও নতুন টাকা ছাপিয়ে বাজারে ছাড়াতেও উদ্বেগ প্রকাশ করেন ক্রিস পাপাজর্জিও। তিনি বলেন, তারা যে টাকাটা নতুন করে বাজারে ছেড়েছে সেটা তারা দ্রুত বাজার থেকে তুলেও নেবেন। তবে সেটা যদি না করেন তাহলে মূল্যস্ফীতি আরো বাড়বে। যা দেশের সাধারণ মানুষের ভোগান্তি আরো বাড়াবে।
বাংলাদেশের বাজারে অব্যাহতভাবে খাদ্যমূল্য বাড়ছে, এ জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। সংস্থাটি মনে করে, মূল্যস্ফীতির চাপে বাংলাদেশের অর্থনীতি। এজন্য প্রবৃদ্ধি কমবে। রাজস্ব আদায়ও কমেছে। রিজার্ভের অবস্থাও চাপের মুখে রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে ক্রিস পাপাজর্জিও বলেন, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বাংলাদেশের পূর্বের শর্ত পূরণের পর ফেব্রুয়ারিতে চতুর্থ ধাপে ৬৪ কোটি ৫০ লাখ ডলার ঋণ দেবে। এ লক্ষ্যে আগামী বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি প্রস্তাবটি সংস্থাটির নির্বাহী পর্ষদ বোর্ড সভায় রাখা হবে। পর্যালোচনা শেষে অনুমোদনের পর ১০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে অর্থ বিতরণ করা হবে। তবে এ জন্য দু’টি শর্ত বাংলাদেশকে পূরণ করতে হবে। এর একটি হচ্ছে রাজস্ব আয় বাড়ানো এবং অন্যটি হচ্ছে মুদ্রা বিনিময় হারের আরো নমনীয়তা।
পাপাজর্জিও বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির চিত্র খুব একটা আশাব্যঞ্জক নয়, দীর্ঘদিনেও নিয়ন্ত্রণে আসছে না মূল্যস্ফীতি, যা আইএমএফের ধারণার চেয়েও অনেক বেশি। বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হলেও বাংলাদেশের আর্থিক খাতের সংস্কারেই গুরুত্ব দিচ্ছে আইএমএফ।
আর্থিক খাতের সংস্কার উদ্যোগ নিয়ে তিনি বলেন, সঠিকভাবে খেলাপিঋণ চিহ্নিত করতে হবে। আর্থিক খাতে পুনর্গঠনের জন্য করতে হবে রোডম্যাপ। বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বাধীনতা ও সুশাসনের প্রতিও জোর দেন আইএমএফের মিশন প্রধান। পাপাজর্জিও আরো বলেন, বাংলাদেশকে সহায়তা দেবার বিষয়ে ইতিবাচক আইএমএফ। তবে অভ্যন্তরীণ আয় বৃদ্ধি এবং ব্যাংক খাতের সংস্কার চলমান রাখতে হবে। জানা যায়, আইএমএফের শর্ত পূরণ করে গত ১৮ ডিসেম্বর শেষে নিট রিজার্ভ ছিল ১৫ দশমিক ৫৮ বিলিয়ন ডলার। যেখানে ডিসেম্বর পর্যন্ত দাতা সংস্থার লক্ষ্য ছিল ১৫ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার।
উল্লেখ্য, আইএমএফের চতুর্থ কিস্তি ছাড়ের আগে শর্ত বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা ও নতুন ঋণের বিষয়ে দরকষাকষি করতে গত ৩ ডিসেম্বর থেকে আইএমএফ গবেষণা বিভাগের ডেভেলপমেন্ট ম্যাক্রোইকোনমিকসের প্রধান ক্রিস পাপাজর্জিওর নেতৃত্বে ১৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল ঢাকা সফর আসে।
এ দিকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর কথা বললেও সরকার তা বাড়াবে না বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
গতকাল অর্থ মন্ত্রণালয়ে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের কক্ষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। সরকারের এই কৌশলে আইএমএফও সম্মতি দিয়েছে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, ভর্তুকির চাপ কমাতে আইএমএফ বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর কথা বলেছিল। আমরা তাদের বলেছি, উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে সাধারণ মানুষ এমনিতেই চাপে আছে। এই সময় বিদ্যুতের দাম বাড়ালে মানুষের দুর্ভোগ আরো বাড়বে। আইএমএফ আমাদের কথা মেনে নিয়েছে।
বিদ্যুৎ উপদেষ্টা বলেন, আমরা বিদ্যুৎ উৎপাদনের খরচ কমিয়ে ভর্তুকি কমানোর চেষ্টা করছি। বিদ্যুৎ খাতের জন্য ২০১০ সালে যে বিশেষ বিধান করা হয়েছিল, সেটি বাতিল করেছি। বিভিন্ন বিদ্যুৎ কোম্পানির বোর্ডে সচিবরা ছিলেন, তাদের সরিয়ে দেয়া হয়েছে। সেখানে যেসব দুর্নীতি হতো, সেগুলো বন্ধ করা হচ্ছে।
অন্য দিকে, বেক্সিমকো গ্রুপের শ্রমিকদের মজুরি দেয়ার জন্য আর কোনো টাকা বরাদ্দ দেয়া হবে না বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। অর্থ মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে গতকাল তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ইতোমধ্যেই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে যে, গ্রুপের শ্রমিকদের মজুরি দেয়ার জন্য কোনো টাকা দেয়া হবে না।
তিনি আরো বলেন, এর আগে বেক্সিমকো গ্রুপের শ্রমিকদের মজুরির জন্য টাকা দেয়া হয়েছিল। সে টাকা শ্রমিকদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টেও দিয়ে দেয়া হয়েছে। এটা না দেয়া হলে, তারা রাস্তায় অবরোধ করত। এর আগে বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের কোম্পানিগুলোতে অর্ডার না থাকায় এবং কোম্পানির নামে ব্যাংকে পর্যাপ্ত ঋণ খেলাপি থাকার কারণে প্রতিষ্ঠানগুলো লে-অফ ঘোষণা করা হয়।
আইএমএফের পর্যবেক্ষণ বিষয়ে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, তারা যেভাবে বলছে, অর্থনীতি অত খারাপ নয়।


আরো সংবাদ



premium cement
কালুরঘাট-মনসারটেক মহাসড়ক উন্নীতকরণে ধীরগতি, বেড়েই চলেছে দুর্ভোগ প্রবাসীদের পাঠানো অর্থ অর্থনীতির চালিকাশক্তি : আবু আহমেদ আজ ঢাকায় গাইবেন পাকিস্তানের ফতেহ আলী নির্বাচন বিলম্বিত করার ষড়যন্ত্র জনগণ মেনে নেবে না : নোমান জীবন দিয়ে হলেও দেশের ভূখণ্ড রক্ষা করব : রফিকুল ইসলাম খান যথাসময়ে পাঠ্যবই চান উপদেষ্টা সমস্যা জানালেন প্রেস মালিকরা ভারতের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়াই যথেষ্ট : জয়নুল আবদিন ফারুক বিচ্ছিন্ন কব্জির সফল প্রতিস্থাপন পঙ্গু হাসপাতালে বরগুনায় অস্ত্র হাতে শ্রমিকলীগ নেতা ও সাবেক চেয়ারম্যানের ভিডিও ভাইরাল ‘ওসমান পরিবারের’ প্রভাবমুক্ত নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে নির্বাচন আজ ৩ অভিনেত্রীর মাদক সংশ্লিষ্টতা তদন্ত করছে নারকোটিক্স

সকল