১৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২ পৌষ ১৪৩১, ১৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

ওয়েস্ট ইন্ডিজে শেষ ওভারে জয় বাংলাদেশের

উইকেট নেয়া স্পিনার শেখ মাহেদী হাসানকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন সতীর্থরা : ওয়েস্টইন্ডিজ ক্রিকেট -

বিজয় দিবসে দারুণ এক জয়! ১৬ ডিসেম্বরের সকালেই মিলল ক্রিকেট মাঠ থেকে সুখবর! রুদ্ধশ্বাস উত্তেজনা থাকল পুরোটা সময়। ৬১ রানে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ৭ উইকেট তুলে নিয়েছিল বাংলাদেশ, মনে হচ্ছিল অনায়াসে জিততে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এরপর বদলে যায় ম্যাচের ছবি, বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে খাদের কিনার থেকে দলকে টেনে তুলে উল্টো ওয়েস্ট ইন্ডিজের জেতার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেন রভম্যান পাওয়েল। তবে শেষ ওভারে আবার ঘুরে যায় মোড়, দারুণ রোমাঞ্চ জাগিয়ে ম্যাচ জিতে নিল টাইগারর।
সেন্ট ভিনসেন্টের আর্নাস ভেলে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৭ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। টস হেরে আগে ব্যাট করে ১৪৭ রান করে লিটন দাসের দল। রান তাড়ায় শেষ ওভারে এক বল বাকি থাকতে ১৪০ রানে অলআউট হয় ক্যারিবীয়রা। এ জয়ে তিন ম্যাচ সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে টি-২০তে এ প্রথম ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারাল বাংলাদেশ। এর আগে দলটির বিপক্ষে অ্যাওয়ে সিরিজে জিতেছিল যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায়। আগামীকাল সকাল ৬টায় সিরিজের দ্বিতীয় টি-২০তে মুখোমুখি হবে উভয় দল। টাইগারদের চাওয়া সিরিজ জয় আর স্বাগতিকদের চাওয়া অবশ্যই সমতা।

জিততে শেষ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দরকার ছিল ১০ রান। প্রথম বলে সিঙ্গেল নিয়ে রভম্যান পাওয়েলকে স্ট্রাইক দেন আলজারি জোসেফ। ৫ বলে ৯ রান চাই স্বাগতিকদের। মনে হচ্ছিল ম্যাচটি হারিয়ে ফেলছে বাংলাদেশ। এর পরই হাসান মাহমুদ দেখালেন ম্যাজিক। পরের বল নিখুঁত ইয়র্কারে ডট। তিন নম্বরটি অফ স্টাম্পের বাইরে লেন্থ বল ব্যাট চালিয়ে দিয়ে লিটন দাসকে ক্যাচ দিলেন পাওয়েল। ৩৫ বলে ৪ ছক্কা ও ৫ চারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক আউট ৬০ রানে। ব্যস ম্যাচটি চলে আসে বাংলাদেশের হাতে। এক বল পর দারুণ এক ডেলিভারিতে জোসেফকে বোল্ড করেন হাসান। আর দলকে এনে দেন ৭ রানের জয়।

গতকাল কিংস্টাউনে বাংলাদেশ প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে ১৪৭ রান তোলে। সৌম্য সরকার ৪৩ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেন। ৩২ বলে তিন ছক্কা আর ২ বাউন্ডারিতে এ রান সৌম্যের। দুই ছক্কা আর এক চারে ২৭ বলে ২৭ রান করেন জাকের আলি। শেষ দিকে মাহেদী হাসান অপরাজিত ২৬ ও শামীম হোসেন পাটোয়ারী ২৭ রান করেন। মাহেদী ২৪ বলের ইনিংসে ছিল দুই বাউন্ডারি ও এক ছয়। শামীমের ঝড়ো ইনিংসে ব্যয় হয়েছে ১৩ বল। এতে ছিল তিনটি বিশাল ছক্কা ও একটি বাউন্ডারি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের আকিল হোসেন ও ওবেদ ম্যাককয় ২টি করে উইকেট নেন।
১৪৮ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটিং লাইনআপকে চেপে ধরেন বাংলাদেশের বোলাররা। মাহেদী হাসান অসাধারণ বোলিং করে ৪ উইকেট তুলে নেন। রভম্যান পাওয়েলের ৬০ রানের ঝড়ো ইনিংসে উইন্ডিজ আশা দেখছিল শেষ পর্যন্ত। তবে শেষ ওভারে তিনি হাসান মাহমুদের শিকার হন। উইন্ডিজ ১৯.৫ ওভারে ১৪০ রানে অলআউট হয়।
বাংলাদেশের হাসান মাহমুদ ও তাসকিন আহমেদ ২টি করে উইকেট নেন। ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে ১৩ রানের ৪ উইকেট এবং ২৪ বলে অপরাজিত ২৬ রানের ইনিংসে ম্যাচসেরা শেখ মাহেদী হাসান।

সংক্ষিপ্ত স্কোর (টস ওয়েস্ট ইন্ডিজ)
বাংলাদেশ : ২০ ওভারে ১৪৭/৬ (তানজিদ ৬, সৌম্য ৪৩, লিটন ০, আফিফ ৮, জাকের ২৭, মাহেদি ২৬*, শামীম ২৭, রিশাদ ২*; আকিল ২/১৩, ম্যাককয় ২/৩০, শেফার্ড ১/৩৩)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ : ১৯.৫ ওভারে ১৪০ (কিং ১, চার্লস ২০, পুরান ১, চেইস ৭, ফ্লেচার ০, পাওয়েল ৬০, মোতি ৬, আকিল ২, শেফার্ড ২২, জোসেফ ৯, ম্যাককয় ০*; হাসান মাহমুদ ২/১৮, তাসকিন ২/২৮, শেখ মাহেদী ৪/১৩, তানজিম ১/৪৭, রিশাদ ১/৩২)
ফল : বাংলাদেশ ৭ রানে জয়ী।

 


আরো সংবাদ



premium cement