১৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১ পৌষ ১৪৩০, ১৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

কোম্পানীগঞ্জে ফোনে চার্জ দেয়া নিয়ে সংঘর্ষ আহত অর্ধশতাধিক

কোম্পানীগঞ্জে সৎংঘর্ষের ঘটনায় ২ জনকে আটক করে সেনা সদস্যরা : নয়া দিগন্ত -


সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার থানাবাজারে ওষুধের দোকানে মোবাইল ফোন চার্জ দেয়াকে কেন্দ্র করে শনিবার ও রোববার দফায় দফায় সংঘর্ষ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এতে উভয়পক্ষের অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়েছে। এর মধ্যে দু’জনকে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং ৫১ জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এ সময় বেশ কয়েকটি দোকানপাট, ঘরবাড়ি ও মোটরসাইকেল ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার থানাবাজারে শ্রমিক দলের কর্মিসভা ছিল। সভায় যোগদানকারী উপজেলা শ্রমিক দলের সহসভাপতি আব্দুল মজিদ বাবুল তার মোবাইলফোন বাজারের ব্যবসায়ী ও কাঁঠালবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা শাহিনুরের দোকানে চার্জে লাগিয়ে যান।
কিছু সময় পর মোবাইল নিতে দোকানে গেলে ওষুধ কোম্পানির এক ব্যক্তির সাথে তিনি বাগি¦তণ্ডায় লিপ্ত হন। বাবুল ওই ব্যক্তিকে গালি দেন। ঘটনাস্থলে থাকা কোম্পানীগঞ্জ ও কাঁঠালবাড়ি গ্রামের একাধিক ব্যক্তি তাদেরকে থামানোর চেষ্টা করছিলেন; কিন্তু ঘটনা গড়ায় হাতাহাতিতে। বর্নির বাবুল মারধরের শিকার হন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে কাঁঠালবাড়ি ও কোম্পানীগঞ্জ গ্রামের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বাজারে অবস্থান নেন। এক পক্ষ উপজেলা ভূমি অফিসের আশপাশে এবং অপরপক্ষ বাজারের পয়েন্ট এবং টিঅ্যান্ডটি রোডের উত্তরা ব্যাংকের পাশে অবস্থান নেয়। উভয়পক্ষের মধ্যে চলে ধাওয়া-পাটাধাওয়া। সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত টানা চার ঘণ্টা দফায় দফায় চলে এই সংঘর্ষ। সংঘর্ষের সময় দু’টি মোটরসাইকেল আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হয়। বাজারে উভয়পক্ষের বেশ কয়েকটি দোকান ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। সংঘর্ষে উভয়পক্ষের পঞ্চাশের অধিক লোক আহত হন। তাদের মধ্যে গুরুতর আহত একজন সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এদিকে শনিবার রাতের সংঘর্ষের ঘটনায় গতকাল রোববার মাইকিং করে লোক জড়ো করে ফের সংঘর্ষে লিপ্ত হয় দুই পক্ষ। উপজেলার থানাবাজারে সিলেটে-ভোলাগঞ্জ সড়কে বেলা ১১টা থেকে ২টা পর্যন্ত। সংঘর্ষের সময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হলে দুপুরে সেনাবাহিনী ও র‌্যাব ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। ওই সময় প্রায় তিন ঘণ্টা যানচলাচল বন্ধ ছিল। থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে কোম্পানীগঞ্জজুড়ে।
কোম্পানীগঞ্জ থানার সেকেন্ড অফিসার উপপরিদর্শক তন্ময় জানান, সংঘর্ষের ঘটনায় সেনাবাহিনী দু’জনকে আটক করেছে।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি উজায়ের আল মাহমুদ আদনান জানান, সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে যায়। অবস্থা বেগতিক দেখে অতিরিক্ত ফোর্স চাওয়া হয়। সেনাবাহিনীকেও জানানো হয়। পরে সম্মিলিত চেষ্টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষ এই সংঘর্ষে জড়ায়। যারা সরাসরি এই ঘটনায় জড়িত ছিল সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।
সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম জানান, শনিবারের ঘটনায় উভয় পক্ষকে নিয়ে বিষয়টি সমঝোতার কথা বলার পরও রোববার তারা সংঘর্ষে জড়ায়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তাদের নিয়ে বসা হবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement