১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

পরিচালক ছাড়াই চলছে জাতীয় বার্ন ইউনিট

-


জাতীয় বার্র্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট পরিচালক ছাড়াই চলছে প্রায় এক মাস। পরিচালক অধ্যাপক রায়হানা আওয়ালের চাকরির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর গত ১৮ নভেম্বর থেকে ওই পদটি শূন্য রয়েছে। এতে দেশের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট দেশের আগুনে পোড়া রোগীদের চিকিৎসাসেবা প্রদানের পাশাপাশি নতুন প্লাস্টিক সার্জন তৈরির গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রতিষ্ঠান। পালিয়ে যাওয়া স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অতি ঘনিষ্ঠ এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হওয়া প্রাক্তন মন্ত্রী দীপু মণির খুবই প্রিয়জন এবং চুয়াডাঙ্গার প্রভাবশালী আওয়ামী নেতা জোয়ার্দার পরিবারের পুত্রবধূ হিসেবে পরিচিত প্রাক্তন পরিচালক রায়হানা আওয়ালকে এখানে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়ার জন্য কাউকে নতুন পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে না বলে একটি সূত্র জানায়। এতে ক্ষুব্ধ এবং হতাশা প্রকাশ করেছেন এই বিভাগেরই অনেক সিনিয়র চিকিৎসক।

জানা গেছে, আওয়ামী সরকারের আমলে সবচেয়ে সুবিধাভোগী অধ্যাপক রায়হানা আওয়াল তার সিনিয়রদের ডিঙিয়ে প্রথমে সহকারী অধ্যাপক, পরবর্তীতে সহযোগী অধ্যাপক হওয়ার দুই বছরের মাথায় অধ্যাপক পদে পদোন্নতি লাভ করেন এবং পরবর্তীতে এই ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক অধ্যাপক আবুল কালামের পরে তিনি পরিচালক পদে নিয়োগ পান। এ ক্ষেত্রে তার সিনিয়র আরো দুইজনকে অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি বঞ্চিত করে তিনি এই পদে নিয়োগ পান।
জানা গেছে প্লাস্টিক সার্জারির ২৪টি অধ্যাপকের পদ শূন্য থাকা সত্ত্বেও তার পরবর্তীতে কেউ অধ্যাপক হতে পারেনি, বিশেষ করে আওয়ামী বিরোধী শিক্ষকদের পদোন্নতি বঞ্চিত করার ক্ষেত্রে তার ভূমিকা রয়েছে বলে অভিযোগ আছে। আর বর্তমানে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়ার ক্ষেত্রে ‘অধ্যাপক নেই’ বিষয়টিই কাজে লাগানো হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে উনিসহ স্বৈরাচারী সরকারের কিছু চিকিৎসক এর ইন্ধনের কারণে বেশ কিছু আওয়ামী বিরোধী সার্জন যারা ২০২০ সালেই অধ্যাপক হতে পারতেন; তারা এখনো সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে আছেন।
অভিযোগ রয়েছে সাবেক এই পরিচালক গত সরকারের পুরো সময় ঢাকা মেডিক্যালে পোস্টেড ছিলেন। জুলাই বিপ্লবের দিনগুলোতে বার্ন ইনস্টিটিউটের ছাদ হতে গুলিবর্ষণ করা হয়েছে, যা সেই সময়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে; অথচ উনি এ ব্যাপারে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেননি এমনিকি ৫ আগস্টের পরও এ বিষয়ে কোনো তদন্ত কমিটি গঠন করেননি।

ফ্যাসিবাদীদের যারা দোসর ছিল তাদের বিরুদ্ধে উনি কখনোই কোনো শক্ত প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি এবং তাদেরকে বদলি বা অন্যকোনো শাস্তিমূলক ব্যাবস্থা গ্রহণের জন্য মন্ত্রণালয়কে অবহিত বা সহযোগিতা করেননি।
এই ইনস্টিটিউটের একজনের নামে পত্রিকায় দুর্নীতির খবর প্রকাশিত হলে উনি ওই সব দুর্নীতির বিষয়ে কোনো তদন্ত কমিটি গঠন করেননি এবং প্রকৃত সত্য উদঘাটনের জন্য বিপ্লবী সরকারকে কোনো ধরনে সহযোগিতা না করে বরং কাগজপত্রে যাতে কোনো অডিট আপত্তি না আসে তার জন্য ক্রয়কৃত মালামালের প্রকৃত বাজার দর পরিবর্তনের ব্যবস্থা করেন এবং এদের বাঁচিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন। এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে অধ্যাপক রায়হানা আওয়ালের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি। তার মোবাইল নম্বরে ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।


আরো সংবাদ



premium cement