১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

হত্যা মামলার আসামি হয়েও দায়িত্বে বহাল সিএজি নুরুল ইসলাম

বড় প্রকল্পের অডিটে বাধার অভিযোগ
-

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হত্যা মামলার আসামি হয়েও বহাল তবিয়তে কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (সিএজি) নুরুল ইসলাম। ছাত্র হত্যার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে গত ১১ নভেম্বর রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় তার নামে একটি হত্যা মামলা হয়। তার পরও রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদে বহাল রয়েছেন তিনি। এ ছাড়া অভিযোগ রয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকার আমলে শেখ পরিবারের সদস্যদের নামে করা প্রকল্পগুলোর একটিরও অডিট হতে দেননি তিনি।
এ ছাড়া পদ্মা সেতুসহ সরকারের চলমান কোনো প্রকল্প অডিট করা যাবে না বলে তিনি সাফ জানিয়ে দেন অধীনস্তদের। অথচ প্রকল্পগুলো তাৎক্ষণিক কনকারেন্ট অডিট বা সমসাময়িক অডিট করা গেলে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার পাচার করা থেকে রক্ষা করা যেত এবং রাষ্ট্র বিশাল অঙ্কের আর্থিক ক্ষতি থেকে রক্ষা পেত বলে মনে করেন তারই অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। জানা গেছে, তার শপথ পাঠ করার পরদিন টুঙ্গিপাড়ায় শেখ মুজিবের মাজারে ফুল দিতে গিয়েছেন। তার সফরে দফতরের যেসব কর্মকর্তা টুঙ্গিপাড়াতে যাননি তাদের প্রত্যেককে তিনি জবাবদিহির আওতায় এনেছেন।
অভিযোগ রয়েছে, বিগত সরকারের আমলে করা কোনো মেগা প্রকল্প অডিট করা যায়নি। কারণ নুরুল ইসলাম স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, পদ্মা সেতুসহ সরকারের চলমান কোনো প্রকল্প অডিট করা যাবে না। অথচ কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (সিএজি) একটি গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক পদ যার মূল উদ্দেশ্য সরকারের স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করা। অথচ শেখ হাসিনা সরকারের সহযোগী বর্তমান সিএজি মো: নুরুল ইসলামকে দলীয় এজেন্ডা বাস্তবায়ন এবং স্বৈরাচারের অপকর্ম যেন অডিট রিপোর্টে না আসে সে জন্য সিএজি বানানো হয়।

সিএজি নুরুল ইসলাম রেলওয়ে ডিপার্টমেন্টে দীর্ঘকাল অর্থ উপদেষ্টা ও প্রধান হিসাব অধিকর্তা (প্রকল্প) পদে থাকা অবস্থায় সেলিম রেজার সাথে মিলে রেলওয়ের উন্নয়নের কোটি কোটি টাকা লোপাট করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। বিজ্ঞাপনের নামে অধস্তন কর্মকর্তাদের দিয়ে বিভিন্ন নিরীক্ষাধীন অফিস থেকে বিপুল অঙ্কের টাকা চাঁদাবাজি করেছেন। ডিজির সাথে যোগসাজশ করে স্বাস্থ্য খাতের বড় বড় সব অডিট আপত্তি রিপোর্টে অন্তর্ভুক্ত না করে কোটি কোটি টাকা ঘুস নিয়েছেন সিএজি নুরুল ইসলাম। সিএজির আওতাধীন অডিট ও হিসাব দফতরের প্রতিটি অফিসে ব্যক্তিগত তদারকি করে মুজিব কর্নার তৈরি করেছেন। অভূতপূর্ব নজির স্থাপন করে রাজনৈতিক দলের ন্যায় সরকারি অর্থে মহা আয়োজন করে শেখ মুজিবের জন্মদিন, ১৫ আগস্ট, শেখ কামালের জন্মদিন, শেখ রাসেলের জন্মদিনসহ মুজিব পরিবারের সবার জন্ম-মৃত্যু দিবস নিয়মিত উদযাপন করেছেন।
এ দিকে তার সময়কালে রাষ্ট্রের আর্থিক দেনা-পাওনা বেতন-ভাতা, বোনাস, পেনশন, গ্র্যাচুইটি, নির্মাণ, প্রকল্প খরচ, বৈদেশিক ভাতা, কল্যাণ তহবিল, জেনারেল প্রভিডেন্ট ফান্ড, অফিসিয়াল ক্রয়, চিকিৎসা সহায়তা ইত্যাদি সব কিছু বন্ধ করে ৫৬ দিন অডিটররা আন্দোলন চালিয়ে যান। অর্থ মন্ত্রণালয় এসব অডিটরদের বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে বললে অডিটর জেনারেল মো: নুরুল ইসলাম নীরব ভূমিকা পালন করেছেন। এ ব্যাপারে জানতে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

 

 

 


আরো সংবাদ



premium cement