বাংলাদেশকে সমর্থন অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি জাপানের
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
বাংলাদেশের চলমান সংস্কার কার্যক্রমে সমর্থন দেয়ার পাশাপাশি অর্থনৈতিক উন্নয়নে জাপানি বিনিয়োগকারীরা তাদের অবস্থান অব্যাহত রাখবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি।
গতকাল বুধবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে বিদায়ী সাক্ষাৎকালে জাপানি রাষ্ট্রদূত এসব কথা বলেন।
রাষ্ট্রদূত কিমিনোরি অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বের প্রশংসা করে বলেন, জাপান সরকার শান্তি ও স্থিতিশীলতা, অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং জনগণের মধ্যে সম্পর্ক এই তিনটি স্তম্ভের ওপর ভিত্তি করে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক আরো মজবুত করবে। তিনি বলেন, আমরা এই তিনটি স্তম্ভের জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করব বলেন কিমিনোরি। তিনি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নির্বাচনী ব্যবস্থাসহ অন্যান্য সংস্কার কার্যক্রমে টোকিওর দৃঢ় সমর্থনের কথাও পুনর্ব্যক্ত করেন।
অধ্যাপক ইউনূস উভয় দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নে অবদান রাখায় জাপানের বিদায়ী রাষ্ট্রদূতের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের প্রশংসা করে বলেন, এই সম্পর্ক সবসময় খুব শক্তিশালী ছিল। সরকার বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার কার্যক্রম পরিচালনা করছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশে আরো জাপানি বিনিয়োগের আহ্বান জানান। বাংলাদেশে জাপানি বিনিয়োগকারীদের উপস্থিতি আমাদের জন্য ইতিবাচক বার্তা দেয়, বলে তিনি উল্লেখ করেন।
জাপানি রাষ্ট্রদূত বলেন, জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশ থেকে একটি জাপানি কোম্পানিও চলে যায়নি। তারা এখানে থাকতে আগ্রহী। তিনি নিক্কেইয়ের বার্ষিক সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানান। সেখানে জাপানের প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য রাখবেন। রাষ্ট্রদূত বলেন, ওই সম্মেলনে অধ্যাপক ইউনূস জাপানের শীর্ষ কোম্পানিগুলোর প্রধান নির্বাহীদের সাথে দেখা করতে পারেন এবং তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানাতে পারবেন। রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজনে প্রধান উপদেষ্টার পদক্ষেপের প্রশংসা করে জাপানি রাষ্ট্রদূত বলেন, টোকিও এই বৈঠককে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করে।
অধ্যাপক ইউনূস মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে জাতিসঙ্ঘের গ্যারান্টিযুক্ত একটি নিরাপদ এলাকা তৈরির আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন, যেখানে সংঘাত শেষ হওয়ার পর বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠীকে তাদের বাড়িতে ফেরার পূর্বে সাময়িকভাবে পুনর্বাসিত করা যেতে পারে। সাক্ষাৎকালে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক ও সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।
পার্বত্য অঞ্চলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে
বাসস জানায়, পার্বত্য জেলা পরিষদ প্রশিক্ষণার্থীদের সাথে ভার্চুয়ালি মতবিনিময় করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
শিক্ষা, প্রযুক্তি ও অর্থনৈতিকভাবে পার্বত্য অঞ্চলকে এগিয়ে নেয়ার বিষয়ে জোর দিয়ে তিনি বলেন, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সম্পদে পরিপূর্ণ পার্বত্য জেলাগুলো বাংলাদেশের সবচাইতে উন্নত অঞ্চল হতে পারত, কিন্তু সবচেয়ে পেছনে পড়ে আছে। এটা হওয়ার কথা না। আপনাদের ফসল, ফল-ফলাদি, ঐতিহ্যবাহী পণ্য দিয়ে অর্থনীতিতে আপনাদের এগিয়ে যাওয়ার কথা। পার্বত্য এলাকাগুলো দুর্গম, সেজন্য যোগাযোগ করা কঠিন হয়। আর এ কারণেই সেখানে প্রযুক্তির প্রসার দরকার। প্রযুক্তি দিয়ে এই দূরত্ব জয় করা যাবে।
পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যবৃন্দের জন্য আয়োজিত পার্বত্য জেলা পরিষদ ব্যবস্থাপনা শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি রাজধানীর পার্বত্য চট্টগ্রাম কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে বক্তব্য রাখেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।
নারী ফুটবল টিমে পার্বত্য জেলা থেকে আসা খেলোয়াড়দের সাথে বৈঠকের স্মৃতিচারণ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের মেয়েরা ফুটবলে বিশ্বের অন্যান্য দেশের টিমকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। আপনাদের এলাকার মেয়েরা কী দুর্দান্ত খেলল! কিভাবে বলবেন পিছিয়ে আছে? যারা আপনাদের এলাকা থেকে এসেছে তাদের সাথে আমি কথা বলেছি। কী কঠিন পরিস্থিতি! কত কষ্ট করে পাহাড় ভেঙে বাড়িতে পৌঁছাতে হয়! বাবা মা ঢাকায় আসলে কত কষ্ট করে তাদের আসতে হয়। এই প্রতিকূলতার মধ্যেই কিন্তু তারা বিশ্বজয় করে এসেছে।
তিনি বলেন, আপনাদের শিশুদের, তরুণদের এ উৎসবে যোগ দিতে উৎসাহ দিন। স্থানীয় খেলা হোক, রচনা প্রতিযোগিতা, গান-নাচ তারা যা পারে, যা চায় তা নিয়ে যেন অংশ নেয়। এটা সবার উৎসব।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা