০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ অগ্রহায়ন ১৪৩১,
`

পশ্চিমতীরকে যুক্ত করে নিতে ইসরাইলের খসড়া পরিকল্পনা তৈরি

-


অধিকৃত পশ্চিমতীর ও আরো কিছু ফিলিস্তিনি অঞ্চলকে সংযুক্ত করার পথ ত্বরান্বিত করতে একটি খসড়া পরিকল্পনা তৈরি করছে ইসরাইলের বসতি স্থাপনাকারী পরিষদগুলো। মার্কিন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নতুন করে নির্বাচিত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই পরিকল্পনার খসড়া তৈরি করা হয়েছে।
ইসরাইলের হিব্রু ভাষার পত্রিকা ইসরাইল হাইয়োম রোববার এ খবর দিয়েছে। পত্রিকাটি জানিয়েছে, পরিকল্পনার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলোর মধ্যে একটি হলো ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের ভবিষ্যৎ নিয়ন্ত্রণ ও সংযুক্তি। সম্ভাব্য ট্রাম্প প্রশাসনের সময় এই পরিকল্পনা যাতে বাস্তবায়ন করা যায়, তার জন্য আগেই কার্যকর ‘কৌশল’ তৈরি করে রাখা হচ্ছে। এই পরিকল্পনাকে এগিয়ে নিতে সম্প্রতি একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ক্ষমতাসীন লিকুদ পার্টির পার্লামেন্ট সদস্য আভিহাই বোয়ারন এবং কয়েকটি সেটলার কাউন্সিলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে বোয়ারন বলেন, আমরা একটি জটিল সন্ধিক্ষণে রয়েছি। আমাদের সামনে একটি সুযোগের জানালা খুলেছে যাকে আমরা বিজ্ঞতার সাথে ব্যবহার কিংবা অপব্যবহার করতে পারি। মুর্খতার পথ গ্রহণ করলে এখন থেকে চার বছর পর ইসরাইলের ভেতরে সাত লাখ বাসিন্দার জন্য বাড়তি আবাসন ইউনিট তৈরি করতে হবে। আর বুদ্ধিমান পদ্ধতির মাধ্যমে পশ্চিমতীর ও জর্দান উপত্যকাকে ইসরাইলের সাথে যুক্ত করলে তা করতে হবে না। ইসরাইল মনে করছে, এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে বিলুপ্ত করা অপরিহার্য যাতে আরব গ্রামগুলো সম্পূর্ণভাবে ইসরাইলের এখতিয়ারে চলে আসে। বোয়ারন বলেন, দুই-রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানকে অবশ্যই স্পষ্ট রাজনৈতিক নির্দেশের মাধ্যমে স্থায়ীভাবে বাতিল করতে হবে।

গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি করার কাজ চলছে : হোয়াইট হাউজ
এ দিকে হোয়াইট হাউজ গাজায় যুদ্ধবিরতি ও বন্দীদের মুক্তির জন্য একটি চুক্তি নিয়ে কাজ করছে। তবে এখনো এটি অর্জিত হয়নি। মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান এনবিসিকে এ কথা বলেছেন। অন্য দিকে যুদ্ধবিরতি নিয়ে আঞ্চলিক নেতারা আলোচনা করতে মিলিত হলেও সংঘর্ষ চলছে।
সুলিভান সাংবাদিকদের বলেন, আমরা সক্রিয়ভাবে এটি (চুক্তি) বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করছি। আমরা আঞ্চলিক গুরুত্বপূর্ণ শক্তিগুলোর সাথে গভীরভাবে জড়িত এবং আজো এই বিষয় নিয়ে কাজ চলছে। তিনি আরো বলেন, এখনো সেখানে (চুক্তিতে) পৌঁছানো হয়নি, তবে আমাদের আশা, আমরা একটি যুদ্ধবিরতি ও জিম্মিদের মুক্তির চুক্তি করতে পারব। সুলিভানের এই মন্তব্য লেবাননে হিজবুল্লাহকে লক্ষ্য করে ইসরাইল হামলা করার পর এলো।
ইসরাইল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে যুদ্ধবিরতি একটি অত্যন্ত ভঙ্গুর অবস্থায় রয়েছে। এই সঙ্ঘাত সম্পর্কে সুলিভান এনবিসিকে বলেন, আমরা যুদ্ধবিরতি চুক্তিটির প্রশংসা করি এবং যুক্তরাষ্ট্র লেবাননের সেনাবাহিনীর সাথে কাজ করছে, যাতে এটি কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন হয়। আমরা এটি রক্ষা করতে চাই এবং এটি যেন পুরোপুরি কার্যকর হয় তা নিশ্চিত করতে চাই।

এ দিকে ইসরাইলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডিওন সার জেরুসালেমে রোববার বলেছেন, এমন কিছু সঙ্কেত রয়েছে, যা ইঙ্গিত দেয়, গাজায় হামাসের হাতে জিম্মিদের মুক্তির জন্য একটি চুক্তি বাস্তবায়িত হতে পারে। তিনি বলেন, এ বিষয়ে এগিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা রয়েছে। আমি আশা করি, এটি অগ্রগতি লাভ করবে। আমরা বন্দীদের ফেরত নিয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এটি একটি দায়িত্ব যা আমাদের পালন করতে হবে। তবে সার এ-ও বলেছেন, হামাসকে গাজায় শাসন করতে দেয়ার সুযোগ অবশ্যই দেয়া হবে না।
গাজার প্রধান ক্রসিং দিয়ে জাতিসঙ্ঘের ত্রাণ সরবরাহ স্থগিত : অন্য দিকে এএফপি জানায়, ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসঙ্ঘ সংস্থা (ইউএনআরডাব্লিউএ) নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগের কারণে ইসরাইল ও গাজার মধ্যকার কেরেম শালোম ক্রসিং দিয়ে ত্রাণ সরবরাহ স্থগিত করেছে। সংস্থাটির প্রধান এ তথ্য জানিয়েছেন।
ইউএনআরডব্লিউএর প্রধান ফিলিপ লাজারিনি এক্সে এক পোস্টে বলেছেন, আমরা কেরেম শালোম দিয়ে ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ রাখছি, যা গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর প্রধান ক্রসিং পয়েন্ট। এই ক্রসিং দিয়ে যাওয়ার রাস্তাটি দীর্ঘ সময় ধরে নিরাপদ নয়। ১৬ নভেম্বর সশস্ত্র গ্যাংগুলো ত্রাণবাহী একটি বড় গাড়িবহর চুরি করেছিল।

তিনি আরো বলেন, শনিবার আমরা একই রুটে কয়েকটি খাদ্যবাহী ট্রাক পাঠানোর চেষ্টা করি। সব ট্রাকই নিয়ে যাওয়া হয়। গাজায় ক্ষুধা দ্রুত গভীর হচ্ছে উল্লেখ করে সতর্ক করেন লাজারিনি।
তিনি বলেন, চলমান অবরোধ, ইসরাইলি কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে তৈরি বাধা, ত্রাণের পরিমাণ সীমাবদ্ধ করার রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত, ত্রাণ সরবরাহ রুটে নিরাপত্তার অভাব ও স্থানীয় পুলিশের ওপর হামলার কারণে মানবিক কার্যক্রম অপ্রয়োজনীয়ভাবে অসম্ভব হয়ে উঠেছে।
ইউএনআরডব্লিউএর প্রধান ইসরাইলের প্রতি আহ্বান জানান, তারা যেন গাজায় ত্রাণপ্রবাহ নিশ্চিত করে এবং মানবিক কর্মীদের ওপর আক্রমণ থেকে বিরত থাকে। এর আগে শনিবার ইসরাইলের হামলায় মার্কিন দাতব্য সংস্থা ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেনের তিনজন ঠিকাদার নিহত হয়, যাদের মধ্যে একজন ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় জড়িত ছিলেন বলে ইসরাইলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে। গত মাসে জাতিসঙ্ঘ জানিয়েছিল, গত বছরের অক্টোবরে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ৩৩৩ জন ত্রাণকর্মী নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে ২৪৩ জন ইউএনআরডব্লিউএর কর্মী। লাজারিনি আবারো একটি যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন, যা প্রয়োজনীয় ত্রাণ নিরাপদ ও নিরবচ্ছিন্নভাবে মানুষদের কাছে পৌঁছে দেয়ার সুযোগ তৈরি করবে। গত বছর যুদ্ধের প্রাথমিক পর্যায়ে হামাস নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে সম্পূর্ণ অবরোধ আরোপ করা ইসরাইল ত্রাণ সংগঠনগুলোর বড় পরিসরে ত্রাণ পরিচালনা ও বিতরণের অক্ষমতাকে দোষারোপ করেছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement
চোরতন্ত্রে পরিণত হয় দেশ বাংলাদেশে সুইডেনের বিনিয়োগ বৃদ্ধির আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা বিএনপি ক্ষমতা পেলে ফ্যামিলি ও ফার্মার্স কার্ড দেয়া হবে পশ্চিমতীরকে যুক্ত করে নিতে ইসরাইলের খসড়া পরিকল্পনা তৈরি দেশ স্থিতিশীল রাখতে জাতীয় ঐক্যের বিকল্প নেই : ডা: শফিক তাঁবেদার রেজিম উৎখাতে ভারতের নীতিনির্ধারকরা এখন বেসামাল বাংলাদেশী সংখ্যালঘুদের দলে দলে ভারত পালানোর তথ্য সঠিক নয় ৫ আগস্টের পর ভারতের সাথে সম্পর্কে সমস্যা চলছে : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বাংলাদেশে শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠাতে মোদির কাছে আবদার মমতার মুক্তিযুদ্ধ চূড়ান্ত অধ্যায়ে রূপ নেয়

সকল