তাঁবেদার রেজিম উৎখাতে ভারতের নীতিনির্ধারকরা এখন বেসামাল
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:০৮
পশ্চিম বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলাদেশে জাতিসঙ্ঘের শান্তিবাহিনী পাঠানোর যে প্রস্তাব করেছেন তার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিএনপি বলেছে, ভারতের তাঁবেদার রেজিম উৎখাতের ফলে অনৈতিক স্বার্থ হাসিলে ছেদ পড়ায় সেখানকার রাজনীতিবিদ ও নীতি-নির্ধারকরা এখন বেসামাল হয়ে পড়েছেন। বাংলাদেশের জনগণ পশ্চিম বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে বিস্মিত ও হতভম্ব হয়েছে। এ দেশের মানুষ তাকে একজন সেক্যুলার ও উদার দৃষ্টিভঙ্গির মানুষ হিসেবেই জানতো। কিন্তু এই বক্তব্যে প্রমাণিত হয়েছে কট্টর হিন্দুত্ববাদী ও মমতা ব্যানার্জির মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই।
গতকাল বিকেলে নয়াপল্টনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ১৮ কোটি মানুষের দেশ। এই দেশ কিভাবে চলবে সেটি এ দেশের জনগণ নির্ধারণ করবে। কোনো দেশের গভীর চক্রান্তের নীলনকশা কখনোই এখানে বাস্তবায়ন হবে না।
রিজভী বলেন, ভারতের অধিকাংশ রাজনীতিবিদই বাংলাদেশের মানুষের স্বাজ্যাত্যবোধ ও নাগরিক স্বাধীনতাকে মান্য করে না। সেই কাতারে মমতা ব্যানার্জিও তার অবস্থান পরিষ্কার করলেন। এরা নিজ দেশের অন্যায় দেখেও না দেখার ভান করে। গুজরাটের হাজার হাজার মুসলিম হত্যার সেই ট্র্যাজেডি আজও বিশ^বাসী বিস্মৃত হয়নি। কাঁটা তারের বেড়ার ওপর ফেলানীর ঝুলন্ত লাশ এরা কি ভুলে গেছেন? ভারতের কেন্দ্রীয় সাম্প্রদায়িক শাসকগোষ্ঠীর সঙ্গে একই কোরাসে অংশগ্রহণ করে মমতা ব্যানার্জি বাংলাদেশের স্বাধীন মর্যাদাকে অগ্রাহ্য করেছেন।
তিনি বলেন, পশ্চিম বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে মনে হচ্ছে শেখ হাসিনার লুটেরা, খুনি, গুম ও নির্যাতনকারীদের পতন হওয়াতে তারা বিষণœ বেদনায় মুষড়ে পড়েছেন। হত্যা, গুম, খুন, গণহত্যা, নির্যাতন, নিপীড়ন, গণতন্ত্র ধ্বংস করে দুর্নীতির মাধ্যমে লাখ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে দেশটাকে ধ্বংসের শেষপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছিল শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন দুরাচারী আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকার। এখন শেখ হাসিনাকে পুনর্বাসনের জন্য ভারতের চেষ্টার অন্ত নেই। এ দেশের মানুষ বিশ^াস করে পাচার হওয়া লাখ লাখ কোটি টাকার একটি বিরাট অংশ বাংলাদেশ থেকে নিয়ে বিদ্বেষ পোষণকারী ভারতের রাজনীতিবিদদের পেছনে খরচ করা হচ্ছে। তা না হলে এখন এভাবে একযোগে বাংলাদেশবিরোধী জিগির তুলছে কেন ভারতের নীতিনির্ধারকরা।
রিজভী বলেন, আমরা এর আগেও দেখেছি সে দেশের রাজনীতিবিদরা মুখে যাই বলুক, তারা যে বাংলাদেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে কাজ করেন তার প্রমাণ হচ্ছে শুধু মমতা ব্যানার্জির কারণেই তিস্তা নদীর পানির চুক্তি বাস্তবায়ন হয়নি। সুতরাং তিনি কী উদ্দেশ্যে জাতিসঙ্ঘ বাহিনীকে বাংলাদেশে প্রেরণ করার প্রস্তাব করছেন এটা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে খোলাসা করা উচিত।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ৮১ শতাংশ সনাতন বা হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের দেশ নেপালের সাথে ভারতের সম্পর্ক উষ্ণ যেমন নয় তেমনি নেপালের জনগোষ্ঠীও ভারতের প্রতি বন্ধুভাবাপন্ন তো নয়ই বরং বৈরীভাবাপন্ন। তাই বুঝতে হবে বাংলাদেশ সনাতন ধর্মাবলম্বী নাগরিকদের প্রতি ভারতের অতি ভালোবাসা প্রকাশ ও এটিকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের প্রতি হম্বি-তম্বির পেছনে ভারতের কোনো ধর্মীয় ভাবাবেগ, ভালোবাসা বা বন্ধন জড়িত নেই। আছে এটিকে পুঁজি করে ভারতের আধিপত্যবাদী আগ্রাসী মনোভাব ও ষড়যন্ত্র। বাংলাদেশের সনাতন হিন্দু সম্প্রদায়, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টানসহ দেশবাসীকে পার্শ্ববর্তী দেশের গভীর চক্রান্ত সম্পর্কে সচেতন থাকার আহ্বান জানান রুহুল কবির রিজভী।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা