৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

সীমান্তের ওপারে ফ্যাসিস্ট বসে নতুন নতুন ষড়যন্ত্র করছে : মির্জা ফখরুল

রাজধানীতে ঠাকুরগাঁও ছাত্র কল্যাণ পরিষদের সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর : নয়া দিগন্ত -


বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সীমান্তের ওপারে ফ্যাসিস্ট বসে আছে। ওখান থেকে নতুন নতুন চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। প্রতি মুহূর্তে তারা একেকটা ঘটনা ঘটিয়ে সেখানে ফলাও করে বিশ্বকে দেখাতে চায় যে বাংলাদেশ নাকি মৌলবাদীর দেশ হয়ে গেছে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন করা হচ্ছে।
গতকাল শুক্রবার বিকেলে এক ছাত্র সমাবেশে তিনি এই মন্তব্য করেন। রাজধানীর ফার্মগেটের খামারবাড়িতে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন (কেআইবি) মিলনায়তনে ঢাকার ঠাকুরগাঁও ছাত্র কল্যাণ পরিষদের উদ্যোগে এই ছাত্র কনভেনশন হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, কোনো ষড়যন্ত্রে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের অর্জনকে বৃথা যেতে দেয়া হবে না। তিনি বলেন, ভারতের পত্র-পত্রিকাগুলোতে, সোশ্যাল মিডিয়াতে এমনভাবে লেখা হচ্ছে যেন বাংলাদেশে এখন এই ধরনের সব নিকৃষ্ট ঘটনা ঘটছে। আসলে তা না। কারা এগুলো করছে? কেন করছে? আমি এই কথাটা এজন্য বলছি যে, এই আনন্দে আমাদের থাকার অবকাশ নাই যে আমরা জিতে গেছি, সব হয়ে গেছে। তিনি বলেন, আমাদের মাথার ওপরে সেই খড়গ এখনো আছে এবং চতুর্দিকে তারা চেষ্টা করছে আবার অন্ধকারে নিয়ে যাওয়ার। এজন্য খুব সজাগ থাকতে হবে, সতর্ক থাকতে হবে।
সব রকম হঠকারিতা ও বিশৃঙ্খলা রুখে দিতে সজাগ থাকার আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ দেশের সব শেষ করে দিয়ে গেছে। কোথাও কোনো অবশিষ্ট রাখেনি, একেবারে লুটপাট করে ফোকলা করে দিয়ে গেছে। অর্থনীতি নাই, ব্যাংক লুট, সব জায়গায় লুট, ঘুষ, দুর্নীতি সমাজটাকেই শেষ করে দিয়ে গেছে। এটা বন্ধ করতে হবে, প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। জনগণ যদি রুখে দাঁড়ায় কোনো শক্তি নাই সেটাকে কেউ এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে।

ছাত্রদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমার অনুরোধ তোমরা ছাত্র, তোমরা আন্দোলনে অংশ নিয়েছো, তোমরা অংশীদার তোমরা এই বিষয়গুলোর দিকে সজাগ দৃষ্টি রাখবে। কেউ যেন আমাদের অর্জিত সম্পদ কেড়ে না নিতে পারে সেই দিকে লক্ষ রাখতে হবে। মির্জা ফখরুল বলেন, আমার নাতনিও বলে, হাসিনা পলাইছে। হ্যাঁ, জিজ্ঞাসা করলে বলে হাসিনা পলাইছে। এই পলাইছে কথা চালু করতে হবে জোর করে। এটা এজন্য বলা দরকার এই ধরনের ফ্যাসিস্ট, এই ধরনের নির্যাতনকারী, এই ধরনের নিপীড়নকারী, এই ধরনের খুনি, এই ধরনের হত্যাকারী তারা পালিয়ে যায়।
মির্জা ফখরুল বলেন, এখন একটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আছে দেশের জন্য, কিন্তু চারদিকে আবার অন্ধকার আসছে। আমি ভীষণ কষ্ট পাই যখন দেখি যে, আমার ছেলেরা ছেলেরা মারামারি করছে। যখন একটা বিজয় অর্জন হলো, একটা ফ্যাসিস্টকে দেশ থেকে তাড়িয়ে দিলে, একটা ইতিহাস সৃষ্টি হলো, সেই সঙ্ঘাত আমাদের দেখতে হবে যে, আমরা সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও মোল্লা কলেজের ছাত্ররা মারামারি করে রক্তাক্ত হয়ে যাচ্ছে। এটা তো কোনো মতেই গ্রহণযোগ নয়। তিনি বলেন, আমি আবারো খুব ভীত হই যখন দেখি ইসকনের নামে, ধর্মের নামে একজন আইনজীবী নিহত হয়ে পড়ে থাকে রাস্তায়। ছাত্রসমাজকে ভ্যানগার্ড হিসেবে অভিহিত করে তাদেরকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বানও জানান বিএনপি মহাসচিব। ঠাকুরগাঁওয়ের উন্নয়নে রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে ছাত্রদের কাজ করা এবং ক্ষুদ্র শিল্পের বিকাশের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির জন্য কাজ করার পরামর্শ দেন তিনি।

সংগঠনের সমন্বয়ক মিলন মাহমুদের সভাপতিত্বে এই কনভেনশনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক শরিফ উদ্দিন আহমেদ, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হোসেন শাহরিয়ার, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আমির হোসেন, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এরফান আলী, অধ্যাপক এস এম মাহবুবুর রহমান, তেজগাঁও সরকারি কলেজের অধ্যাপক সোলায়মান আলী, বিএনপি পল্লী উন্নয়নবিষয়ক সম্পাদক ফরহাদ হোসেন আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য সাবেক সংসদ সদস্য জেড মুর্তজা চৌধুরী তুলা, ঠাকুরগাঁও বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সাল, যুবদলের কামাল আনোয়ার আহম্মেদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে বিএনপির মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান, মহানগর বিএনপির পাপ্পু সরকারসহ ঠাকুরগাঁওয়ের ছাত্র-যুব সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।


আরো সংবাদ



premium cement