জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালাস পেলেন খালেদা জিয়া
বড়পুকুরিয়া মামলায় অব্যাহতি- হাবিবুর রহমান
- ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০২:১৯, আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০২:১৯
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় সাত বছরের কারাদণ্ডের বিরুদ্ধে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে খালাস দিয়েছেন উচ্চ আদালত। বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চে বুধবার এ রায় ঘোষণা করেন। একইসাথে খালাস দেয়া হয়েছে এ মামলার সব আসামিকে।
আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল ও মো: মাকসুদ উল্লাহ। দুদকের পক্ষে ছিলেন, আইনজীবী আসিফ হাসান।
আইনজীবী কায়সার কামাল বলেন, এ মামলাটি ছিল রাজনৈতিকভাবে মোটিভেটেড। মিথ্যা অভিযোগের মাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়াকে হয়রানি করার জন্যই মামলাটা করা হয়েছিল। এখানে দুর্নীতি দমন কমিশনের অভিযোগ, এক কোটি ৩৫ লাখ টাকার হিসাব দেয়া হয়নি। তবে এখানে যে অভিযোগ আনা হয়েছে মামলায় দুদকের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি। নি¤œ আদালত রায়ে ন্যায়-বিচারের নামে বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি অবিচার করেছেন। এই কেস ছিল নো এভিডেন্সের ওপর ভিত্তি করে। আজ তিনি ন্যায়বিচার পেয়েছেন এবং খালাস পেয়েছেন। আদালত বলেছেন, এ মামলায় কোনো এভিডেন্স নেই। এজন্য আপিল অ্যালাও করা হলো।
দুদকের আইনজীবী আসিফ হাসান জানান, আদালত বেগম খালেদা জিয়াসহ তিনজনের আপিল মঞ্জুর করেছেন। ফলে তাদের সাজা বাতিল হলো এবং তারা খালাস পেয়েছেন।
কয়লাখনি দুর্নীতি মামলা থেকে অব্যাহতি: বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন এবং ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরীকে খালাস দিয়েছেন আদালত। বুধবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-২ এর বিচারক আবু তাহের এ আদেশ দেন।
এদিন এ মামলার অভিযোগ শুনানির দিন ধার্য ছিল। প্রথমে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াসহ অন্য আসামিদের পক্ষে অব্যাহতির (ডিসচার্জ) আবেদনের শুনানি শেষ হয়। এরপর আদালত খালেদা জিয়াসহ তিনজনকে খালাস দেন।
একইসাথে বাকি চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন আদালত। তারা হলেন- জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব নজরুল ইসলাম, পেট্রোবাংলার সাবেক চেয়ারম্যান এস আর ওসমানী ও সাবেক পরিচালক মঈনুল আহসান, বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: সিরাজুল ইসলাম ও খনির কাজ পাওয়া কোম্পানির স্থানীয় এজেন্ট হোসাফ গ্রুপের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন। এ নিয়ে খালেদা জিয়া সর্বমোট ২৫টি মামলার দায় থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন। এখন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মাত্র দু’টি মামলা রয়েছে। একটি হচ্ছ- জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলা। এ মামলা সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে। অন্যদিকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান পৃথক দুই মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন। এ নিয়ে তিনি মোট ৩১টি মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন বলে ব্যারিস্টার কায়সার কামাল জানিয়েছেন।
২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা করা হয়। ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগে মামলাটি করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তদন্ত শেষে ২০১২ সালে খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় দুদক। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ খালেদা জিয়াসহ চার আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত।
২ মামলা থেকে অব্যাহতি তারেক রহমানকে: পৃথক দুই মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বুধবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০ এর বিচারক মো: রেজাউল করিম ও অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো: ছানাউল্ল্যাহ পৃথকভাবে এ আদেশ দেন।
এ নিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান মোট ৩১টি মামলা থেকে অব্যাহতি পেলেন।
এর মধ্যে চাঁদাবাজির অভিযোগে করা মামলার পুলিশের দেয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে তারেক রহমানসহ আটজনকে অব্যাহতি দেন ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো: ছানাউল্ল্যাহ। অব্যাহতি পাওয়া অন্যরা হলেন- তারেক রহমানের বন্ধু গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, ওবায়দুল্লাহ খন্দকার, কামরুজ্জামান, ইঞ্জিনিয়ার মাহবুবুল আলম, ইঞ্জিনিয়ার এ কে এম শোয়েব বাশুরী ওরফে হাবলু, আজিজুল করিম তারেক ও মনিজুর রহমান ওরফে মানিক।
চাঁদাবাজির অভিযোগে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কোম্পানি আব্দুল মোনেম লিমিটেডের মহা-ব্যবস্থাপক খায়রুল বাশার ২০০৭ সালের ৯ এপ্রিল বাদি হয়ে রাজধানীর শাহবাগ থানায় এ মামলা করেন। মামলায় তারেক রহমানসহ আটজনকে আসামি করা হয়।
অপরদিকে ওয়ান-ইলেভেনের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৮ সালে ২৬ লাখ টাকার কর ফাঁকির অভিযোগে তারেক রহমানের নামে একটি মামলা করে দুদক। সেই মামলাতেও গতকাল তাকে খালাস দেন বিশেষ জজ আদালত-১০ এর বিচারক মো: রেজাউল করিম।
মামলার সূত্রে জানা গেছে, ২০০৮ সালের ২৮ জুলাই উপ-কর কমিশনার সামিয়া আক্তার বাদি হয়ে মামলা করেন। এতে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ২০০২ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন খাত থেকে এক কোটি ৪৭ হাজার টাকা আয় করেন। তবে তিনি আয় বাবদ ২৬ লাখ ৮৬ হাজার টাকা কর ফাঁকি দিয়েছেন বলে মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা