পতিত স্বৈরাচার দেশ অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা করছে : ফখরুল
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:০২
পতিত স্বৈরাচার পেছন থেকে আবারো দেশকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা করছে অভিযোগ করে সকলকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গত দুইদিনে রাজধানীতে সহিংস ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে গতকাল সন্ধ্যায় এক অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব এ আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আজকে দেশের চারদিকের অবস্থা দেখে অনেকে আতঙ্কিত হচ্ছেন, উদ্বিগ্ন হচ্ছেন। ‘আসলে আমাদের সেই শত্রুরা যারা সামনে থেকে চলে গেছে, এখন পেছনে থেকে তারা দেশকে আবার অস্থির করে তুলছে। আমাদের অত্যন্ত সজাগ থাকতে হবে। একটু ধৈর্য ধরতে হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, এ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সহযোগিতা করতে হবে। কারণ এ সরকার ফেল করলে অভ্যুত্থান ফেল করে যাবে, বিপ্লব ফেল করে যাবে, আমরা আবারো সেই অন্ধকারে চলে যাব। সুতরাং এ বিষয়গুলো নিয়ে আমার মনে হয় সবার পজেটিভ চিন্তা করা প্রয়োজন।
রাজধানীর হোটেল লেকশোরে ‘তারেক রহমান : পলিটিক্স এন্ড পলিসিস কনটেমপরারি বাংলাদেশ’ শীর্ষক গ্রন্থের এ প্রকাশনা অনুষ্ঠান হয়। লেখক মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন, গ্রন্থটি প্রকাশ করেছে নিউইয়র্কের ‘উড ব্রিজ’। অনুষ্ঠানস্থলে গ্রন্থটি এক হাজার টাকায় বিক্রি হয়। ৫৭১ পৃষ্ঠার গ্রন্থে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জীবন-কর্ম-রাজনীতির নানা দিক বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় আঘাত রুখতে হবে : মির্জা ফখরুল বলেন, একটা বিষয় অত্যন্ত জরুরি বলে আমি বলতে চাই, দুর্ভাগ্যক্রমে আজকে একটা ভয়াবহ কাজ শুরু হয়েছে। যেটা হচ্ছে, সংবাদপত্রের ওপর আঘাত, স্বাধীন মতামত প্রকাশের ক্ষেত্রে আঘাত। যার জন্যে আমরা সব সময় সংগ্রাম করেছি, লড়াই করেছি। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসার পরে তিনি প্রথম সংবাদপত্রকে মুক্ত করেছিলেন। আজকে যখন দেখছি, কিছু সংখ্যক হঠকারী, কিছু সংখ্যক উসকানিতারা বিভিন্নভাবে এ সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে বিঘিœত করবার চেষ্টা করছেন, ধ্বংস করার চেষ্টা করছেন যেটা কোনো মতেই সচেতন মানুষের, দেশপ্রেমিক মানুষের মেনে নেয়া উচিত নয়। আমি অনুরোধ জানাব, সংশ্লিষ্ট সকলকে যে, অনুগ্রহ করে এ ভয়াবহ আত্মহননের কাছ থেকে সরে আসুন এবং গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়ার জন্য সহযোগিতা করুন।
ধৈর্য ধরতে হবে : মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে যেসব কোমলমতি বালকেরা, ছাত্ররা তারা যেসব কাজ করছে তাদের এখান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। ধৈর্য ধরতে হবে। এটা একটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এ সরকারের পক্ষে সবকিছু একসাথে করে ফেলা সম্ভব নয়। আমাদের ধৈর্য ধরতে হবে যাতে করে ন্যূনতম সংস্কারের পরে একটি নির্বাচন হয়। সংস্কার করতে হবে, আমরা সংস্কারবিরোধী নই। সংস্কার করে আমরা নির্বাচনে যেতে চাই। কারণ নির্বাচন ছাড়া এ ধরনের সমস্যা সমাধান করা সম্ভব নয়; এ ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। একমাত্র নির্বাচিত সরকারই পারে এসব সমস্যা সমাধান করতে।
তারেক রহমান : জীবন্ত ইতিহাস
মির্জা ফখরুল বলেন, আমি প্রায় সবসময় এ কথাটা বলি যে, ইচ্ছা করলেই, চেষ্টা করলেই কাউকে ম্লান করে দেয়া যায় না, উড়িয়ে দেয়া যায় না। ইতিহাসকে বিকৃত করা যায় না। ইতিহাস ধারণ করেছে জিয়াউর রহমানকে, বেগম খালেদা জিয়াকে, তারেক রহমানকে। জীবন্ত ইতিহাস তারেক রহমান, আমাদেরকে আলোকিত বাংলাদেশের দিকে তিনি নিয়ে যাবেন এ বিশ্বাস আমাদের রয়েছে।
সুদূর প্রবাসে থেকে দলকে সংগঠিত করে এবং দলের ভেতরে গণতন্ত্র চর্চা ব্যবস্থা করার ক্ষেত্রে তারেক রহমানের নেতৃত্বের প্রশংসা করেন বিএনপি মহাসচিব।
তারেক রহমানসহ জিয়াউর রহমানের পরিবারের ওপর আওয়ামী লীগ সরকারের নির্মম নির্যাতনের কথা তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, একটা পরিবারের ওপরে কী পরিমাণ অত্যাচার-নির্যাতন হতে পারে, একটা ইয়াং সম্ভাবনাময় নেতা তার ওপরে কিভাবে নির্যাতন হতে পারে তা এ জিয়া পরিবারকে এবং তারেক রহমানকে না দেখলে আমরা বুঝতে পারব না। তার (তারেক রহমান) উপরে নিদারুণ নির্যাতন হয়েছে, শারীরিক নির্যাতন হয়েছে, মানসিক নির্যাতন হয়েছে। অথচ দেখেন এ নেতা তিনি কখনো থেমে যাননি এবং মাথানত করেননি। মিথ্যা মামলায় তাকে সাজা দেয়া হয়েছে, মিথ্যা মামলায় বিদেশে পাঠিয়ে দেয়ার পরে তিনি সেখানে চিকিৎসা নিয়েছেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকারের সভাপতিত্বে ও সহআন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফারজানা শারমিন পুতুলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সাংবাদিক শফিক রেহমান, চারুকলা ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক আবদুস সাত্তার, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গোলাম হাফিজ কেনেডি, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপউপাচার্য অধ্যাপক দিল রওশন জিন্নাত আরা নাজনীন, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার নওশাদ জমির, গবেষক মোবাশ্বর হোসেন, শরীফুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে বিএনপির সিনিয়র নেতা মির্জা আব্বাস, আবদুল মঈন খান, সালাহ উদ্দিন আহমেদ, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, আমান উল্লাহ আমান, আবদুল হালিম, ইসমাইল জবিহউল্লাহ, রুহুল কবির রিজভী, আবদুস সালাম আজাদ, মাহবী আমিন, আনোয়ার হোসেন খোকন, সেলিম রেজা, শামা ওবায়েদ, আফরোজা আব্বাস, বাসস পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যান আনোয়ার আলদীনসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, চিকিৎসক, আইনজীবী, প্রকৌশলী, কূটনীতিক ও বিএনপির বিভিন্ন স্তরের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা