২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

শাপলা গণহত্যায় হাসিনাসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে হেফাজতের অভিযোগ

-

২০১৩ সালের ৫ মে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে হেফাজতের শতাধিক কর্মী হত্যার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহিউদ্দিন খান আলমগীরসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। রোববার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনে হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী এ অভিযোগ দায়ের করেন। এ সময় হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর সভাপতি মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীব, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ও হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হকসহ হেফাজত নেতারা উপস্থিত ছিলেন। সাথে ছিলেন তাদের আইনজীবী এস এম তাসমিরুল ইসলাম।

অভিযোগ দায়ের করার পর হেফাজতের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর সভাপতি মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীব বলেন, হেফাজতের সমাবেশের পরে তৎকালীন ফ্যাসিস্ট প্রধানমন্ত্রী সংসদে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন আমরা নাকি রঙ মেখে সেখানে বসা ছিলাম। তিনি চরম মিথ্যাচার করেছেন। আপনারা জানতে চাচ্ছেন হেফাজতের সমাবেশে কত মানুষ হতা হত হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে সংখ্যা বলতে চাচ্ছি না। আমাদের কাছে তথ্য আছে। তবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী সংসদে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন এক লাখ ৫৪ হাজার গুলি চালানো হয়েছে। আপনারাই চিন্তা করেন এত গুলি চালানোর পর কত হতাহত হতে পারে। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক অনেক মিডিয়া দেখিয়েছে ট্রাকে লাশ নিয়ে যাচ্ছে, সেটিও ওই সময় ভিডিও ফুটেজে এসেছে। বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে দেখানো হয়েছে। তিনি আরো বলেন, তারা কুরআন পুড়িয়েছে। তারা বায়তুল মোকারমসহ বিভিন্ন স্থানে আগুন দিয়ে তাণ্ডব তারাই চালিয়েছে। অথচ সংসদে দাঁড়িয়ে বলেছে হেফাজতে ইসলাম তাণ্ডব চালিয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে। সেই মামলায় আমি দুই বছর জেলে ছিলাম। আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মীকে জেলে দেয়া হয়েছে। আজ আমরা ট্রাইব্যুনালে এসেছি। আশা করি আমরা বিচার পাবো। আমরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। যাতে ভবিষ্যতে কেউ পবিত্র কুরআন, আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূল সা:কে নিয়ে কটূক্তি করতে না পারে। আর সাধারণ জনগণের ওপর এই ধরনের নির্মম হত্যাকাণ্ড যাতে না হয়। তিনি আরো বলেন, অনেকগুলো মিডিয়া যারা হেফাজতে ইসলামের সমাবেশ লাইভ সম্প্রচার করেছে তাদেরকে তখন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

মাওলানা মামুনুল হক বলেন, দেশবাসী দেখেছে এবং গণমাধ্যমসূত্রে সারা বিশ্ববাসী দেখেছে ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে ও আশপাশের এলাকার হৃদয়বিদায়ক ভয়ঙ্কর মর্মান্তিক দৃশগুলো। যে দৃশ্য সারা বিশ্বের বিবেকবান মানুষকে কাঁদিয়েছে। মিডিয়াকে পর্যন্ত সেখান থেকে অপসারণ করে এবং বিদ্যুৎ বন্ধ করে যে ভয়াবহ নারকীয় তাণ্ডব চালানো হয়েছে। সেই হত্যাকাণ্ডের সময় আমি সেখানে উপস্থিত ছিলাম। সেই হত্যাকাণ্ডের ভয়াবহ দৃশ্য আমরা স্বচক্ষে প্রত্যক্ষ করেছি। গত ১১ বা ১২ বছর ধরে আমরা সেই দুঃসহ ম্মৃতি বয়ে বেড়াচ্ছি। আমরা অনেক শহীদের কবরের পাশে দাঁড়িয়েছি। আনেক আপনজন তাদের আপনজনদের লাশ খুঁজে পায়নি। অনেকে শাহদত বরণ করার পর তাদের আপনজনদেরকে পুলিশ জোরপূর্বক মিথ্যা মামলা করার জন্য চাপ প্রয়োগ করেছে। যার কারণে পুলিশের হাত থেকে বাঁচার জন্য তাদেরকে ফেরারি জীবন যাপন করতে হয়েছে। বছরের পর বছর ফেরারি জীবন যাপন করে তারা সামাজিকভাবে আর্থিকভাবে ভয়াবহ ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।

তিনি বলেন, ২০১৩ সালের ৫ মে ভয়াবহ নারকীয় হত্যাকাণ্ডের দিন। এটি বালাদেশের মানুষের জন্য, বাংলাদেশের ইতিহাসের জন্য একটি অভিশপ্ত দিন। এই অভিশপ থেকে মুক্তির উপায় হলো, এর যে কুশীলব এবং হত্যাকারীরা যারা তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সব হত্যাকারীকে এবং হত্যাকাণ্ডের সাথে যারা জড়িত রয়েছেন তারেকে উপযুক্ত আইনের মাধ্যমে বিচারের আওতায় আনতে পারলে বাংলাদেশ ও দেশের মানুষ অভিশাপমুক্ত হবে। এই দাবি নিয়ে আমরা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনে এসেছি। আমরা আশা করি মামলার আলামত সংগ্রহ করে মামলা করবেন। তিনি বলেন, সে দিনের তালিকা ও সুনির্দিষ্ট তথ্য আমাদের কাছে রয়েছে। তিনি বলেন, আমরা সুনির্দিষ্ট সংখ্যা এখনই বলছি না। এটা অবশ্যই শতাধিক হবে, এটা নিশ্চিতভাবেই বলতে পারি।

অভিযোগকারী মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেন, ২০১৩ সালের ৫ মে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে ফ্যাসিস্ট জালিম শেখ হাসিনা সরকার যে গণহত্যা চালিয়েছে সেই গণহত্যার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আমরা আজ অভিযোগ দায়ের করেছি। আমরা ১৩ দফা দাবি নিয়ে শাপলা চত্বরে জমায়েত হয়েছিলাম। তৎকালীন আওয়ামী জালিম সরকার রাতের অন্ধকারে বিদ্যুৎ বন্ধ করে দিয়ে দেশের নিরীহ নিরস্ত্র সাধারণ নাগরিকদের ওপর, আলেম, হাফেজ, মুহাদ্দিস, মুফাসিরদের ওপর যৌথবাহিনী মোতায়ন করে গণহত্যা চালিয়েছে।
এ বিষয়ে ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম বলেন, হেফাজতে ইসলামের নেতারা আজ ট্রাইব্যুনালের অফিসে এসছিলেন। উনারা ২০১৩ সালের ৫ মে ও ৬ মে মতিঝিলের শাপলা চত্বর থেকে শুরু করে সারা দেশে যে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছিল সে বিষয়ে একটি অভিযোগ চিফ প্রসিকিউট বরাবর দাখিল করেছেন। আমরা অভিযোগ গ্রহণ করেছি এবং তদন্তের জন্য পাঠিয়েছি। এটা ট্রাইব্যুনাল আইন অনুযায়ী তদন্ত হবে এবং তদন্তে যদি সত্যতা পাওয়া যায় আমরা এখানে মামলা করব। তিনি আরো বলেন, হেফাজতে ইসলামের পক্ষে যতগুলো অভিযোগ আসবে সবগুলো তদন্ত করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করব একটি মামলা হিসেবে। তিনি আরো বলেন, ২০১৩ সালের ৫ মে যে ঘটনা শাপলা চত্বরে ঘটেছে সেটি ট্রাইব্যুনাল আইনের অধীনে একটি অপরাধ।

হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে গণহত্যার অভিযোগে অন্য যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে তারা হলেন- আওয়ামী লীগ নেতা শেখ ফজলুল করিম সেলিম, আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী, মাহবুবুল আলম হানিফ, বাহাউদ্দিন নাছিম, ড. আব্দুর রাজ্জাক, ড. হাসান মাহমুদ, মৃণাল কান্তি দাস, সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, সাবেক মন্ত্রী হাছান মাহমুদ, সাবেক এমপি হাজী সেলিম, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকী, সাবেক আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) হারুন অর রশীদ, ডিএমপির সাবেক উপ কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির, নির্মূল কমিটির সদস্য অধ্যাপক মুনতাসির মামুন, বিজিবির তৎকালীন প্রধান, র‌্যাবের ডিজি, র‌্যাবের ইন্টেলিজেন্স উইংয়ের কমান্ডার তৎকালীন লে. কর্নেল জিয়াউল আহসান, তৎকালীন ছাত্রলীগের সভাপতি বদিউজ্জামান সোহাগ, সেক্রেটারি সিদ্দিকী নাজমুল আলম, যুবলীগের সভাপতি সেক্রেটারিসহ ৫০ জন।

অভিযোগে যা বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দাখিল করা অভিযোগে বলা হয়েছে, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকার বৈধ ও যৌক্তিক ১৩ দফার প্রতি ন্যূনতম কর্ণপাত না করে হেফাজতে ইসলামকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে বিএনপি-জামায়াতের এজেন্ট বলে মিথ্যাচার করলে হেফাজতে ইসলাম ৫ মে ২০১৩ সালে ঢাকায় অবরোধ ও মহাসমাবেশের ডাক দেয়। ৫ মের কর্মসূচি সফল করার জন্য লাখ লাখ তৌহিদি জনতা ও হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীরা ঢাকায় জড়ো হতে থাকে। ৫ মে সকালে আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এলজিআরডি মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের নেতৃত্বে প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ, কেন্দ্রীয় নেতা বাহাউদ্দিন নাছিম, ড. আব্দুর রাজ্জাক, ড. হাসান মাহমুদ, মৃণাল কান্তি দাস গণভবনে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে সরাসরি সাক্ষাৎ করেন এবং হেফাজতের কর্মসূচিকে নির্মমভাবে দমন করার নির্দেশনা প্রাপ্ত হয়ে আওয়ামী লীগের সভানেত্রীর ধানমন্ডির কার্যালয়ে বিকেলে সংবাদ সম্মেলন করেন এবং হেফাজতের নেতাকর্মীদের রাজাকার, আলবদর, আলশামস ও স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি হিসেবে অখ্যায়িত করেন এবং হেফাজতের নেতাকর্মীদেরকে বিএনপি-জামায়াতের দোসর হিসেবে আখ্যায়িত করে ঘোষণা দেন হেফাজতের নেতাকর্মীদেরকে দমনের জন্য আওয়ামী লীগই যথেষ্ট এবং হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের ঢাকা ছাড়ার জন্য কড়া হুঁশিয়ারি প্রদান করেন।

হেফাজতের নেতৃত্বে সারা দেশ থেকে আলেম-ওলামা, সাধারণ ছাত্র-জনতা ও সব শ্রেণিপেশার ইসলাম প্রিয় তৌহিদি জনতা ঢাকা অভিমুখে যাত্রা করলে বিভিন্ন স্থানে পুলিশ, বিজিবি-র‌্যাব, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও সরকারের অন্যান্য শরিক দলের নেতাকর্মীরা তৌহিদি জনতাকে বাধা প্রদান করে হামলা চালায় এবং ঢাকা শহরসহ সারা দেশে বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারীদেরকে আহত ও নিহত করে। ৫ মে বিকেল ৫টা নাগাদ ঢাকায় পল্টন, গুলিস্তান, দৈনিক বাংলাসহ বিভিন্ন স্থানে ১৭ জনের মৃত্যুর খবর জানতে পাই। ওই দিনেই আসরের পর থেকে মাগরিব পর্যন্ত আরো সাতটি লাশ শাপলা চত্বরে অবস্থিত হেফাজতের মঞ্চের কাছে এসে পৌঁছায়। মাগরিবের নামাজের পরে আমার অতি পরিচিত মাওলানা শিহাব উদ্দিনের লাশ স্টেজের সামনে এসে পৌঁছায়। এই অবস্থায় আমরা সমাবেশ অব্যাহত রাখলাম। সন্ধ্যার পর থেকেই শাপলা চত্বর এলাকাসহ আশপাশের গোটা এলাকার বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট কানেকশন বন্ধ করে দিয়ে পুরো এলাকা ব্ল্যাক আউট করে দিয়ে সমাবেশস্থল বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হলেও অসংখ্য আলেম-ওলামা ও তৌহিদি জনতা শাপলা চত্বরে অবস্থিত মঞ্চের আশপাশে অবস্থান করতে থাকে এবং ১৩ দফার পক্ষে স্লোগান দিতে থাকে। আমাদের পক্ষ থেকে বারবার প্রশাসন ও সরকারকে কোনো প্রকার অনভিপ্রেত পদক্ষেপ গ্রহণ থেকে বিরত থাকার জন্য মাইকে ঘোষণা চলমান থাকে এবং আমাদের শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচিতে কোনো প্রকার হামলা না করার জন্য প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ করা হয়।

রাত ১২টার আগেই ঘটনাস্থল ও এর আশপাশে এলাকায় হাজির হয়ে যায় র‌্যাব, বিজিবি ও পুলিশ, ডিবি-সহ ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যরা। শাপলা চত্বর ঘিরে প্রধান তিনটি সড়ক ধরে পরিকল্পনা নেয়া হয়। পুরানা পল্টন হয়ে ফকিরাপুল মোড়, এরপর শাপলা চত্বর। অন্য রুট হচ্ছে নটর ডেম কলেজের সামনে দিয়ে শাপলা চত্বর। আঘাত হানার পরিকল্পনা নেয়া হয় ওই দুই সড়ক ধরে। যৌথ অভিযানে অংশ নেয়া সদস্যদের সাজানো হয় তিন স্তরে। প্রথমে র‌্যাব, তারপর পুলিশ, শেষে বিজিবি। ভারী অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে অবস্থান নেয় আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা। আনুমানিক রাত ২টা ৩০ মিনিটে মঞ্চে এবং হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীরা যখন আল্লাহর নামে জিকিররত সে সময় মতিঝিল শাপলা চত্বরকে কেন্দ্র করে চার দিক থেকে পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি এবং আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে যুবালীগ, ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ ভারী অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সমগ্র বাহিনী কোনো রকম উসকানি ছাড়াই নির্বিচারে গুলি চালাতে চালাতে স্টেজ অভিমুখে এগোতে থাকে।
শাপলা চত্বরের মূল আপারেশন ১০ থেকে ১৫ মিনিটের মধ্যে শেষ হলেও গোটা মতিঝিল, টিকাটুলী, যাত্রবাড়ী,পল্টন এলাকায় অপারেশন চলে ভোর ৬টা পর্যন্ত। শাপলা চত্বরের অপারেশন শুরুর সময় পুলিশ কয়েকটি দল থেকে ভাগ করে পুরানা পল্টন, বঙ্গবন্ধু এভিনিউ, বিএনপি অফিস এলাকায় রাখা হয়। ওই বর্বরতম হামলায় হেফাজতের নেতাকর্মীসহ সাধারণ ছাত্র-জনতার মধ্যে অসংখ্য মানুষ আহত ও নিহত হয়। ওই অভিযানে নিহতদের মধ্যে কিছুসংখ্যক লাশের সন্ধান পাওয়া গেলেও অসংখ্য মানুষের সন্ধান পাওয়া যায়নি। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে সিটি করপোরেশন, পুলিশ ও বিজিবির সহায়তায় অসংখ্য লাশ রাতের আঁধারে গুম ও গণকবরস্থ করা হয়।

 


আরো সংবাদ



premium cement