ইমরানের দলের বিক্ষোভ ঠেকাতে ইসলামাবাদ লকডাউন
- নয়া দিগন্ত ডেস্ক
- ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
পাকিস্তানের কারাবন্দী সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের মুক্তির দাবিতে তার সমর্থকদের রাজধানীমুখী বিক্ষোভ আটকে দেয়া হয়েছে। এই বিক্ষোভের মুখে রাজধানী ইসলামাবাদ নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে রাখতে লকডাউন আরোপ করা হয়েছে। ইমরান খানের ‘চূড়ান্ত ডাক’ কর্মসূচির ডাকে সাড়া দিয়ে রাজধানী ইসলামাবাদের উদ্দেশ্যে অগ্রসর হচ্ছিলেন তার হাজার হাজার সমর্থক। এ নিয়ে দেশটির বিভিন্ন জায়গাজুড়ে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করে। ডন ও রয়টার্স।
পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলের সদস্যদের নেতৃত্বে ইমরান খানের সমর্থকরা ইসলামাবাদের দিকে এগিয়ে যাওয়া এবং পার্লামেন্ট ভবনের কাছে জড়ো হওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। এ কারণে রাজধানীতে প্রবেশের মহাসড়কগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়।
নগরীর বেশির ভাগ প্রধান সড়কে জাহাজের কনটেইনার দিয়ে ব্যারিকেড তৈরি করেছে সরকার। পুলিশের সাথে আধাসামরিক বাহিনীর সদস্যদের দাঙ্গা দমনের সরঞ্জামসহ প্রধান সড়কগুলোতে মোতায়েন করা হয়। এমনকি সাময়িকভাবে মোবাইল নেটওয়ার্ক পরিষেবাও বন্ধ রেখেছে সরকার। বিক্ষোভ দমাতে ইসলামাবাদ পুলিশ বিভিন্ন গেস্ট হাউজ, হোস্টেলে অভিযান চালিয়েছে। এসব জায়গা থেকে পিটিআইয়ের সমর্থক-কর্মীদের গ্রেফতার করা হয়েছে।
ইসলামাবাদ পুলিশ এক বিবৃতিতে বলেছে, আইনি বিধান অনুযায়ী যেকোনো ধরনের জমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বৈশ্বিক ইন্টারনেট নজরদারি সংস্থা নেটব্লকস এক্স-এ জানিয়েছে, বিক্ষোভের আগে হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজিং সেবাগুলোও নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়েছে।
পিটিআই নেতা ও খাইবার পাখতুনখাওয়ার মুখ্যমন্ত্রী আলি আমিন গান্দাপুর এক ভিডিওবার্তায় জনগণকে রাজধানীর প্রবেশমুখের কাছে ‘ডি চৌক’ নামে পরিচিত রেড জোনে জড়ো হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এই রেড জোনে আছে পার্লামেন্ট ভবন, গুরুত্বপূর্ণ সরকারি স্থাপনা, দূতাবাস এবং বিদেশী প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যালয়। শনিবার এক ভিডিওবার্তায় আমিন গান্দাপুর বলেন, ‘আমাদের সব দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ইমরান খান আমাদের সেখানে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।’
পিটিআইয়ের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে ইমরান খানসহ তাদের সব নেতার মুক্তি এবং চলতি বছর কারচুপির নির্বাচনের কারণে বর্তমান সরকারের পদত্যাগ। ইমরান খান গত বছরের আগস্ট থেকে কারাগারে আছেন। ২০২২ সালে পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর দুর্নীতি থেকে শুরু করে সহিংসতায় উসকানি দেয়ার মতো বেশ কয়েকটি অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। যদিও তিনি ও তার দল সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
ইসলামাবাদের বাসিন্দা মুহাম্মদ আসিফ (৩৫) ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এই ক্রমাগত বিক্ষোভের কারণে আমাদের অর্থনীতি ধ্বংস হচ্ছে, অস্থিতিশীলতা দেখা দিচ্ছে। আমরা চাই রাজনৈতিক নেতারা একসাথে বসে এসব বিষয় সমাধান করুক।’ গত অক্টোবরের শুরুতে ইসলামাবাদে পিটিআইয়ের সর্বশেষ বিক্ষোভ ভয়াবহ সহিংসতায় রূপ নিয়েছিল। এতে একজন পুলিশ নিহত হয় এবং কয়েক ডজন নিরাপত্তা কর্মী আহত হয়। পরে বিক্ষোভকারীদের গ্রেফতার করা হয়। উভয়পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে সংঘর্ষে উসকানি দেয়ার অভিযোগ করেছে।
পিটিআইয়ের এই কর্মসূচিকে ঘিরে ইসলামাবাদে গত সপ্তাহে টানা দুই মাসের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করেই ইসলামাবাদের দিকে যেতে থাকেন ইমরানের সমর্থকরা। ডন জানিয়েছে, খাইবান পাখতুনখাওয়া থেকে পিটিআইয়ের বহর সকাল সকাল রওনা দেয়। তবে তাদের আটকাতে জিটি রোড এবং অ্যাটকের হাসনাবদালে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পাঞ্জাবেও তিন দিনের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন জায়গায় মোবাইল ও ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা