সংস্কার শেষে নির্বাচনের পক্ষে ৬৫.৯ শতাংশ
- নয়া দিগন্ত ডেস্ক
- ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৫৯
ভয়েস অব আমেরিকা (ভোয়া) বাংলার পক্ষ থেকে পরিচালিত এক জরিপে দেখা গেছে বাংলাদেশের ৬১ দশমিক ১ শতাংশ মানুষ এক বছরের মধ্যে আগামী জাতীয় নির্বাচন চাইলেও ৬৫ দশমিক ৯ শতাংশ চান অন্তর্বর্তী সরকার প্রয়োজনীয় সব সংস্কার করার পরই নির্বাচন আয়োজন করুন। শুধু নির্বাচন সংক্রান্ত জরুরি সংস্কারগুলো শেষ করে নির্বাচনের পক্ষে মত দিয়েছেন ৩১ দশমিক ৯ শতাংশ মানুষ। ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ লোক চান দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে নির্বাচন আর ৮ দশমিক ৬ শতাংশ নির্বাচন চান ১৮ মাসের মধ্যে। সবচেয়ে কম ৫ দশমিক ৮ শতাংশ জনগণ চার বছর বা তার চেয়ে বেশি সময় পর নির্বাচন চান। কত দ্রুত নির্বাচন হওয়া উচিত এ ব্যাপারে কিছু জানেন না বলেছেন ৪ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ আর নির্বাচন কবে হওয়া উচিত সম্পর্কে কিছু বলতে চাননি ১ দশমিক ১ শতাংশ।
অক্টোবরের ১৩ থেকে ২৭ তারিখ পর্যন্ত ভয়েস অব আমেরিকা বাংলার এডিটোরিয়াল নির্দেশনা অনুযায়ী বাংলাদেশে জরিপটি পরিচালনা করে গবেষণা ও জরিপ প্রতিষ্ঠান ওআরজি-কোয়েস্ট রিসার্চ লিমিটেড। ভোয়া’র ঠিক করে দেয়া সুনির্দিষ্ট (ক্লোজ অ্যান্ড) প্রশ্নমালার ওপর ভিত্তি করে কম্পিউটার এসিস্টেড টেলিফোন ইন্টারভিউইং এর মাধ্যমে দেশের আটটি বিভাগে ১৮ বছর বা এর চেয়ে বেশি বয়সী এক হাজার মানুষের মধ্যে জরিপটি পরিচালিত হয়। জরিপটিতে মার্জিন অব এরর ৩.১ শতাংশ। এই জরিপের ফলাফলের এটি হচ্ছে প্রথম পর্ব। ধারাবাহিক কয়েকটি পর্বে এ ফলাফল প্রকাশ করা হবে। জরিপে অংশ নেয়া শহরের জনগণের ৬০ দশমিক ৪ শতাংশ ও গ্রামে বসবাসকারীদের ৬১ দশমিক ৪ শতাংশ আগামী এক বছরের মধ্যে পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন চান। এ ছাড়া পুরুষদের ৫৭ দশমিক ৩ শতাংশ ও নারীদের মধ্যে ৬৫ শতাংশ নির্বাচন চান এক বছরের মধ্যে।
জরিপে তরুণদের মধ্যে (১৮ থেকে ৩৪ বছর বয়সী) ৬২ দশমিক ৪ শতাংশ এক বছরের মধ্যে আগামী নির্বাচন চান আর ৩৫ বছর বা তার চেয়ে বেশি বয়সের যারা তাদের মধ্যে এক বছরের মধ্যে আগামী জাতীয় নির্বাচন চান ৫৯ দশমিক ৮ শতাংশ। শহরাঞ্চলের ১৮ দশমিক ৯ শতাংশ ও গ্রামীণ এলাকার ১৮ দশমিক ৬ শতাংশ চান আগামী দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে নির্বাচন। দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের পক্ষে মত দিয়েছেন পুরুষদের ২০ দশমিক ৩ শতাংশ ও নারীদের ১৭ দশমিক ১ শতাংশ। ১৮ থেকে ৩৪ বছরের তরুণদের ১৫ দশমিক ২ ও ৩৫-ঊর্ধ্ব ২২ দশমিক ৪ শতাংশ মনে করেন দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে আগামী নির্বাচন হওয়া উচিত।
১৮ মাসের মধ্যে আগামী নির্বাচন করার পক্ষে মত দিয়েছেন শহরের ১০ দশমিক ৩ ও গ্রামের ৮, পুরুষদের ১২ ও নারীদের ৫ দশমিক ২, তরুণদের (১৮ থেকে ৩৪ বছর বয়সী) ৮ দশমিক ৬ এবং ৩৫ বছর বা এর থেকে বেশি বয়সীদের মধ্যে ৮ দশমিক ৬ শতাংশ অংশগ্রহণকারী।
চার বছর বা তার চেয়ে বেশি সময় পর নির্বাচন অনুষ্ঠানের পক্ষে মত দিয়েছেন, শহরের ৬ দশমিক ২, গ্রামের ৫ দশমিক ৭, পুরুষদের ৬ দশমিক ৯, নারীদের ৪ দশমিক ৮, তরুণদের (১৮-৩৪ বছর বয়সী) ৭ দশমিক ৬, আর ৩৫ ঊর্ধ্ব বয়সীদের ৪ শতাংশ মানুষ।
উত্তরদাতাদের মধ্যে যারা মনে করেন যে অন্তর্বর্তী সরকারের সব সংস্কার শেষ করেই আগামী জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করা উচিত তাদের অধিকাংশ বিচার বিভাগ, সংবিধান, অর্থনৈতিক খাত, পুলিশ ও নির্বাচন কমিশন সংক্রান্ত সংস্কারগুলো করার পক্ষে মত দিয়েছেন।
এদের মধ্যে নির্বাচন কমিশন সংস্কারের পক্ষে মত দিয়েছেন ৯৬ দশমিক ৫ শতাংশ উত্তরদাতা। পুলিশ সংস্কারের পক্ষে মত দিয়েছেন ৯২ দশমিক ৩ শতাংশ, বিচার বিভাগ সংস্কারের পক্ষে ৯৫ দশমিক ৩ শতাংশ এবং অর্থনৈতিক খাতে সংস্কার এর পক্ষে ৯৬ দশমিক ৪ শতাংশ উত্তরদাতা মত দিয়েছেন। সংবিধান সংস্কার চান ৯২ দশমিক ৫ শতাংশ উত্তরদাতা।
বাংলাদেশের ৫৮ দশমিক ৪ শতাংশ মানুষ মনে করেন, অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের তুলনায় দেশ পরিচালনায় ভালো করছে। তবে ৪০ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষের মতে অন্তর্বর্তী সরকার দেশ শাসনে আওয়ামী লীগের চেয়ে খারাপ করছে বা একই রকম করছে। যারা মনে করছেন অন্তর্বর্তী সরকার আগের সরকারের চেয়ে দেশ শাসনে খারাপ করছে তাদের সংখ্যা ২০ দশমিক ৪ শতাংশ আর একই রকম করছে বলে মত দিয়েছেন ২০ দশমিক ১ শতাংশ।
৬৩ দশমিক ২ শতাংশের মতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অন্তর্বর্তী সরকার আগের সরকারের চেয়ে ভালো করছে। ২১ দশমিক ৪ শতাংশ মনে করেন এটি এখন আরো খারাপ, আর ১৪ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষ মনে করেন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দুই সরকারের আমলে একই।
উত্তরদাতাদের মধ্যে পুরুষরা (৬৭ শতাংশ) অন্যদের তুলনায় বেশি সংখ্যায় মত দিয়েছেন যে অন্তর্বর্তী সরকার আওয়ামী লীগ সরকারের চেয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অপেক্ষাকৃত ভালো নিয়ন্ত্রণে রেখেছে। নারীদের মধ্যে এমনটি মনে করেন ৫৯ দশমিক ৪ শতাংশ উত্তরদাতা। তরুণদের (১৮ থেকে ৩৪) মধ্যে ৬২ দশমিক ৭ এবং ৩৫ বা তদোর্র্ধ্ব বয়সীদের ৬৩ দশমিক ৭ শতাংশ মনে করেন অন্তর্বর্তী সরকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আওয়ামী লীগের চেয়ে সফল। আর শহরের উত্তরদাতাদের ৬৪ দশমিক ৬ শতাংশ ও গ্রামের উত্তরদাতাদের ৬২ দশমিক ৭ শতাংশ একই রকম মত জানিয়েছেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের সময় বেশি নিরাপদ বোধ করেন ৪৯ দশমিক ৮ শতাংশ। প্রায় অর্ধেক উত্তরদাতা (৪৯ দশমিক ৮ শতাংশ) মনে করেন যে তারা অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে আগের চেয়ে বেশি নিরাপদ। প্রায় একই সংখ্যক উত্তরদাতা জানিয়েছেন (৪৯ দশমিক ৯ শতাংশ) তারা আওয়ামী আমলেই বেশি বা একই রকম নিরাপদ বোধ করেছেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা