২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফেরাতে আজ তিনটি আবেদনের শুনানি

-

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন ও সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদনের (রিভিউ) ওপর বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও বিশিষ্টজনদের করা তিনটি আবেদনের ওপর আজ রোববার শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে আপিল বিভাগের ছয় বিচারপতির বেঞ্চের কার্যতালিকায় ৪ নম্বরে এই রিভিউ আবেদন শুনানির জন্য রয়েছে।
এর আগে গত ২৪ অক্টোবর ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) আবেদনের শুনানির জন্য সময় নেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো: আসাদুজ্জামান। ওই দিন বিষয়টি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ এবং এখানে জাতীর সর্বোচ্চ স্বার্থ রয়েছে উল্লেখ করে রিভিউ আবেদনের যথাযথ প্রস্তুতির জন্য চার সপ্তাহ সময় চান তিনি। এরপর বিএনপির রিভিউ আবেদনের পক্ষে আইনজীবী জয়নুল আবেদীনও চার সপ্তাহ সময় চেয়ে আবেদন করেন। ওই দিন আদালতে জামায়াতে ইসলামী পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। বিশিষ্ট পাঁচ নাগরিকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ড. শরীফ ভূঁইয়া। আদালত আবেদনকারী আইনজীবীদের মতামত নিয়ে শুনানির জন্য ১৭ নভেম্বর দিন ধার্য করেন। তবে সাবেক প্রধান বিচারপতি মোহাম্মদ ফজলুল করিমের মৃত্যুতে ওই দিন সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচার কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়।
২৫ আগস্ট পাঁচজন বিশিষ্ট নাগরিক ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে রিভিউ আবেদন করেন। তারা হলেন, সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, তোফায়েল আহমেদ, এম হাফিজ উদ্দিন খান, জোবাইরুল হক ভূঁইয়া ও জাহরা রহমান।
১৬ অক্টোবর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একটি আবেদন করেন। ২০ অক্টোবর আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো: রেজাউল হক এ বিষয়ে শুনানির জন্য ২৪ অক্টোবর দিন ঠিক করেন। এর মধ্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ারও একই বিষয়ে রিভিউ আবেদন করেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের আবেদনে ১০টি যুক্তি উত্থাপন করা হয়েছে। ৮০৭ পৃষ্ঠার রিভিউ আবেদনে বলা হয়েছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের রায়ের মাধ্যমে সংবিধানের মৌলিক স্তম্ভ ধ্বংস করা হয়েছে। এই বিধান বাতিলের পর ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন দলীয় সরকারের অধীনে নজিরবিহীন কারচুপির মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয়। ফলে গণতন্ত্র মুখ থুবড়ে পড়ে, প্রতিষ্ঠিত হয় একনায়কতন্ত্র। জাতির কাঁধে ফ্যাসিবাদ জেঁকে বসে।
সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী জাতীয় সংসদে গৃহীত হয় ১৯৯৬ সালে। এ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৯৯৮ সালে অ্যাডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ তিনজন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট করেন। ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট হাইকোর্ট বিভাগ এ রিট খারিজ করেন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থাকে বৈধ ঘোষণা করা হয়। এর ধারাবাহিকতায় ২০০৫ সালে আপিল করে রিট আবেদনকারী পক্ষ। এ আপিল মঞ্জুর করে আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ ২০১১ সালের ১০ মে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন। তবে পরবর্তী দুটি সংসদ নির্বাচন অর্থাৎ ১০ম ও ১১তম নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে করা যেতে পারে বলে অভিমত দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন আপিল আদালত। কিন্তু লিখিত রায়ে পরবর্তী দু’টি নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হতে পারে বলে আপিল বিভাগ যে আদেশ দিয়েছিলেন তা আর রাখেননি বিচারপতি খায়রুল হক।
এ বিষয়ে সিনিয়র আইনজীবী আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বলেন, বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক সম্পর্কে শুধু আমরাই বলি নাই, একজন রায় প্রদানকারী বিচারপতি আবদুল ওয়াহাব মিয়াও বলেছেন, এটা ফ্রড প্র্যাক্টিস আপন দা কোর্ট বা এটা আদালতের সাথে প্রতারণার শামিল।

 


আরো সংবাদ



premium cement