২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
গবেষণার তথ্য

৮ বছরে ঢাকা দূষণমুক্ত ছিল মাত্র ২ মাস

-

২০১৭ সাল থেকে চলতি বছর পর্যন্ত মোট আট বছরে ঢাকা নগরী মাত্র দুই মাস দূষণমুক্ত ছিল। গবেষণা বলছে, প্রতি বছর ১ থেকে ২ শতাংশ করে বায়ুদূষণের পরিমাণ বাড়ছে। আর এর অন্যতম হলো আন্তঃমহাদেশীয় বায়ুদূষণ (ট্রান্সবাউন্ডারি এয়ার পলিউশন)। এ ছাড়া রান্নার লাকড়ি ২৮ ভাগ, বিদ্যুৎকেন্দ্র ২৪ ভাগ, ইটভাটা ১৩-১৫ ভাগ, নির্মাণকাজ ১১ ভাগ, বর্জ্য পোড়ানো ১১ ভাগ এবং যানবাহন ৫ ভাগ দেশের বাতাসকে দূষিত করছে।
এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স অনুযায়ী, ৫১ থেকে ১০০ মাত্রার স্কোর হলে তাকে ‘মাঝারি’ বা ‘গ্রহণযোগ্য’ মানের বায়ু হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ১০১ থেকে ১৫০ স্কোরকে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ ধরা হয়। স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’ বায়ু। স্কোর ২০১ থেকে ৩০০ হলে তাকে ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ বায়ু ধরা হয়। ৩০১ থেকে তার ওপরের স্কোরকে ‘দুর্যোগপূর্ণ’ বা ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ ধরা হয়।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পরিবেশ, জলবায়ু ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খায়রুল বাকের এ বিষয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ঢাকা শহরে সবচেয়ে বেশি বায়ুদূষণ করছে পরিবহন, তারপর নির্মাণ কাজ এবং নির্মাণসামগ্রীর উন্মুক্ত ব্যবহার। কলকারখানা এবং ইটের ভাটাও বায়ুদূষণে ভূমিকা রাখছে।

এ বিষয়ে স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার জানান, তারা ঢাকার গত ৮ বছরের বায়ুদূষণ পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেছেন। তাতে দেখা যায়, ৮ বছরে মাত্র দুই মাস নির্মল বাতাস পেয়েছে রাজধানীবাসী। বাকি দিনগুলোর বাতাস খুবই অস্বাস্থ্যকর ও বিপজ্জনক ছিল। তিনি জানান, নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত পাঁচ মাসে সারা বছরের প্রায় ৬৫ থেকে ৭০ ভাগ বায়ুদূষণ হয়। আর চিকিৎসকরা বলছেন, শীতকালে ঢাকার অস্বাস্থ্যকর বাতাসে শ্বাসকষ্টজনিত রোগ প্রায় দেড়গুণ বেড়ে যায়।
অন্য দিকে ২০২১-২২ সালে বিশ্বব্যাংক পরিচালিত এক গবেষণার বরাত দিয়ে পরিবেশ অধিদফতরের বায়ুমান ব্যবস্থাপনা শাখার পরিচালক মো: জিয়াউল হক বলেন, আন্তঃমহাদেশীয় বায়ুদূষণ (ট্রান্সবাউন্ডারি এয়ার পলিউশন) ৩০ ভাগ, রান্নার লাকড়ি ২৮ ভাগ, বিদ্যুৎকেন্দ্র ২৪ ভাগ, ইটভাটা ১৩-১৫ ভাগ, নির্মাণ কাজ ১১ ভাগ, বর্জ্য পোড়ানো ১১ ভাগ এবং যানবাহন ৫ ভাগ দূষিত করছে বাংলাদেশের বাতাসকে। তার ভাষ্য, দিন দিন দূষণের মাত্রা বাড়ছে। এখন আগের চেয়ে যানবাহনের পরিমাণ বেশি, এটা বেশি ভূমিকা রাখছে বায়ুদূষণে। বর্ষাকালেও ঢাকার বাতাস অস্বাস্থ্যকরই থাকে। যদিও দূষণের মাত্রাটা তখন কম থাকে। শীতকালে সেটা বিপজ্জনক পর্যায়ে চলে যায়। যে ধরনের স্টেপ নেয়ার কথা, এটা দেখা যাচ্ছে না; এটাই বড় সমস্যা।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের বায়ুদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা ২০২২ অনুযায়ী, বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান বা সংস্থাকে নির্মাণস্থলে সব সামগ্রী ঢেকে রাখতে হবে, সেখানে অন্তত দিনে দুইবার পানি বা ধুলাবালু নিয়ন্ত্রণকারী রাসায়নিক ছিটাতে হবে এবং নির্মাণসামগ্রীর পরিবহন ঢেকে চালাতে হবে। কিন্তু ঢাকায় তা মানা হচ্ছে না।

বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র-ক্যাপসের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, বর্তমানে নির্মাণের কারণে ৫১ ভাগ, শিল্পকারখানা ও ইটের ভাটা থেকে ২৯ ভাগ, যানবাহন থেকে ১৬ ভাগ আর বর্জ্য পোড়ানো ও গৃহস্থালি জিনিস থেকে কিছু বায়ুদূষণ হতে হচ্ছে। তবে এবার শহরজুড়ে নির্মাণ কাজ কম থাকার কারণে অক্টোবরে আগের বছরের অক্টোবরের তুলনায় ৫ থেকে ৭ শতাংশ দূষণ কম হয়েছে।
অপর দিকে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো: হাদিউজ্জামান মনে করেন, অনিয়ন্ত্রিত নির্মাণকাজ, ফিটনেসবিহীন পরিবহন আর ইটভাটা ঢাকার বাতাসকে দূষিত করছে। বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ করতে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসার পাশাপাশি নির্মাণ কাজ তদারকি করা, সেখানে নিয়মিত পানি দেয়া আর ফিটনেসবিহীন গাড়িগুলো সরানোর পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।


আরো সংবাদ



premium cement
দক্ষিণ সুদানে তীব্র অপুষ্টির ঝুঁকিতে ২০ লাখের বেশি শিশু বিদেশী কম্বলের ভিড়ে কমেনি লেপ-তোষকের কদর শব্দের চেয়ে দ্রুতগতির ক্ষেপণাস্ত্র প্রস্তত আছে : পুতিন নেশন্স লিগের শেষ আটে কে কার মুখোমুখি হবে মুরাদনগরে পিঠা পুলি জানান দিচ্ছে শীতের আগমনী বার্তা যুদ্ধ বন্ধে ট্রাম্পের সাথে বসতে চান পুতিন মাদকের টাকার জন্য মাকে হত্যা, থানায় আত্মসমর্পণ ছেলের আদানির বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ভারতীয় অর্থনীতি-রাজনীতিতে যে প্রভাব ফেলবে বিচ্ছেদে খুশি নন সায়রা-রহমান কেউই! তবুও কেন হলো অস্ট্রেলিয়ায় আদিবাসীদের সাথে বর্ণবৈষম্য, আদানির বিরুদ্ধে অভিযোগ মণিপুরে আরো ১০ হাজার জওয়ান পাঠাচ্ছে ভারত সরকার

সকল