নর্থ মেসিডোনিয়ায় ২০ হাজার শ্রমিকের কর্মসংস্থানের সুযোগ
- মনির হোসেন
- ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৪৫
বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ বৈদেশিক শ্রমবাজার একের পর এক বন্ধ হলেও কী কারণে এসব বাজার বন্ধ হয়ে আছে তার জবাব কারো কাছ থেকে পাওয়া যাচ্ছে না। মধ্যেপ্রাচ্যের অন্যতম শ্রমবান্ধব দেশ ওমান, বাহরাইন, ইরাক, লিবিয়াসহ বেশ কয়েকটি দেশে দীর্ঘদিন থেকে কর্মী যাওয়া বন্ধ রয়েছে। বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান শ্রমবাজার সৌদি আরবে বিপুল সংখ্যক কর্মী প্রতি মাসে গেলেও সেখানে গিয়ে অনেক শ্রমিক আকামা জটিলতায় পড়ে মহাবিপদের মধ্যে আছেন। আবুধাবিতে গিয়েও অনেকে এখন অবৈধ। মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারও অনেকটা তেমনি বন্ধ হয়ে আছে।
সম্প্রতি ইউরোপের দেশ ইতালি, ফ্রান্সসহ সেনজেনভুক্ত দেশে কমবেশি শ্রমিক যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। তবে পূর্ব ইউরোপের রোমানিয়ার পাশের দেশ নর্থ মেসিডোনিয়ায় বেশ কিছু দক্ষ শ্রমিক পাঠানোর সুযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাস সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও জনশক্তি রফতানিকারকরা। কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে যদি এই দেশটিতে শ্রমিক পাঠানোর সুযোগ নেয়া যায়, তাহলে দেশে রেমিট্যান্স আসার গতি আরো বাড়বে।
এই লক্ষ্য নতুন করে নর্থ মেসিডোনিয়ায় বাংলাদেশী শ্রমিক পাঠানো যাবে কি-না সেটি নিয়ে দেশটির শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সাথে আজ বুধবার বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত দাউদ আলী বৈঠক করতে যেতে পারেন বলে দূতাবাস সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। যদিও আওয়ামী লীগ সরকারের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমানের সাথে দিল্লির মেসিডোনিয়া দূতাবাসের একটি প্রতিনিধিদল ঢাকায় এসে বৈঠক করে গিয়েছিলেন। তবে ওই বৈঠকে প্রতিমন্ত্রী আগত প্রতিনিধিদলকে ‘সিন্ডিকেটের’ মাধ্যমে কর্মী নেয়ার প্রস্তাব দেয়ার কারণে শুরুতেই সেই আলোচনা ভেস্তে গিয়েছিল বলে জনশক্তি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গত রাতে রোমানিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত দাউদ আলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি নয়া দিগন্তকে বলেন, রোমানিয়া ও তার পাশের দেশ বুলগেরিয়া, মলদোভা ও নর্থ মেসিডোনিয়া- এই ৪টি দেশের রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। নর্থ মেসিডোনিয়াতে প্রায় ২০ হাজারের মতো দক্ষ শ্রমিকের কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে- এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এত শ্রমিক না হোক ১ হাজার লোকও যদি এ দেশে আসতে পারে তাহলে তো মধ্যেপাচ্যের দেশগুলো থেকে বেতন বেশি পাবে তারা। তবে সমস্যা হচ্ছে শ্রমিকরা এসে এই দেশে না থেকে বর্ডার ক্রস করে ইউরোপে পালিয়ে যায়। এতে আমাদের ইমেজ সঙ্কটে পড়তে হয়। যদি কর্মী আসার পর কমিটমেন্ট ঠিক থাকে, তাহলে মেসিডোনিয়ায় দক্ষ কর্মী আসার সুযোগ রয়েছে বলে তিনি মতামত দেন। আপনি মেসিডোনিয়া সরকারের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধির সাথে বৈঠক করতে আজ দেশটি ভিজিট করতে যাবেন। এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমি যাচ্ছি, তবে মেসিডোনিয়ায় যাচ্ছি না! অবশ্য আগে আমি অনেকবারই দেশটি ভিজিট করেছি। তিনি বলেন, কিছু কিছু বিষয় গোপন রাখতে হয় এ কথা জানিয়ে তিনি বলেন, এমওইউ চুক্তি আন্ডার প্রসেসে আছে। দু-একটা চুক্তি হলেও শ্রমবাজার নিয়ে হয়নি এখনো। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, রোমানিয়াসহ এই ৪ দেশের শ্রমবাজার আমি চেষ্টা করে খুলেছি। এর আগে কোনো শ্রমিক এখানে আসতে পারেনি। তবে কস্ট লাগে রোমানিয়ার শ্রমবাজারটি আমাদের বাংলাদেশ এক নম্বরে ছিল। এখন সেটি ৩ নম্বরে চলে গেছে। এই বাজারটি এশিয়ার অন্য দেশ দখল করে নিয়েছে। শুধু কর্মী পালানোর কারণে। মেসিডোনিয়ার একটি প্রতিনিধিদল প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমানের সাথে সাক্ষাৎ করেছিলেন এবং সিন্ডিকেটের মাধ্যমে তিনি কর্মী নেয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। এমন অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, এটা আমাদের দূতাবাসের শ্রম কল্যাণ উইংয়ের যিনি দায়িত্বে আছেন তিনি বলতে পারবেন। আমি কোনো মন্তব্য করতে পারবো না।
ইউরোপে জনশক্তি ব্যবসা করছেন এমন একাধিক ব্যবসায়ী গত রাতে নয়া দিগন্তকে বলেন, ১৮ লাখ মানুষের দেশ নর্থ মেসিডোনিয়ার কোম্পানিতে, লৌহ শিল্প, টেক্সটাইল, কনস্ট্রাকশন ইন্ডাস্ট্রিজে দক্ষ ২০ হাজারের মতো কর্মীর কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে। বেতন ৭০০ ইউরোর মতো হতে পারে। এর আগে সাবেক প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমানের সাথে কর্মী নেয়ার লক্ষ্যে এমওইউ চুক্তি নিয়ে আলোচনা করতে দিল্লিতে থাকা নর্থ মেসিডোনিয়া দূতাবাসের প্রধান স্লোবোদান উজোনভের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের প্রতিনিধিদল সাক্ষাৎ করেছিলেন। তখন প্রতিমন্ত্রী সিলেকটিভ রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে কর্মী নেয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। এতে তারা নাখোশ হয়ে ফিরে যান। এর পর থেকে আর আলোচনা আগায়নি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা