১৮ নভেম্বর ২০২৪, ৩ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ১৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা

ট্রাইব্যুনালে ১৪ হেভিওয়েট আসামিকে আনা হচ্ছে আজ

-


ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আজ সোমবার হাজির করা হচ্ছে সাবেক আইনমন্ত্রী মন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানসহ ১৪ জনকে। ট্রাইব্যুনালে এ পর্যন্ত দায়ের করা অভিযোগে আসামির তালিকায় রয়েছেন আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক ১০ মন্ত্রী, দুই উপদেষ্টা, একজন বিচারপতি, একজন সচিব, সাবেক ১০ মন্ত্রী, দুই উপদেষ্টা, অবসরপ্রাপ্ত একজন বিচারপতি ও সাবেক এক সচিব।

ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক মন্ত্রীসহ ১৪ জন হেভিওয়েট আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হবে। এজন্য ট্রাইব্যুনালে নিরাপত্তাসহ সার্বিক প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।
এর আগে গত ২৭ অক্টোবর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো: গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হক, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব:) ফারুক খান, ড. দীপু মনি, রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, জুনাইদ আহমেদ পলক, ড. আব্দুর রাজ্জাক, শাজাহান খান, কামাল আহমেদ মজুমদার, গোলাম দস্তগীর গাজী, শেখ হাসিনার উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, সালমান এফ রহমান, সাবেক বিচারপতি এইচ এম শামসুদ্দীন চৌধুরী মানিক, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব জাহাঙ্গীর আলমকে বিচার করার জন্য ১৮ নভেম্বর হাজির করতে আদেশ দেন।
একই দিন ট্রাইব্যুনাল অপর এক আদেশে গ্রেফতার সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, বরখাস্ত মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান, সাবেক ঢাকা জেলা এসপি আব্দুল্লাহ হিল কাফী, সাভারের ওসি আবুল হাসান এবং পুলিশ কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম, আরাফাত হোসেনকে বিচার করার জন্য ২০ নভেম্বর আদালতে হাজির করতে নির্দেশ দেন।

এ ছাড়া জুলাই-আগস্টে গণহত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ বাহিনীর সাবেক ১৭ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
ওই দিন ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেছিলেন, আমরা ট্রাইব্যুনালে তিনটি আবেদন দিয়েছি। এর একটা ছিল আগে যাদের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট ইস্যু হয়েছিল এবং যারা ওয়ারেন্ট ইস্যুর আগে গ্রেফতার হয়েছিল তাদের গ্রেফতার দেখানোর জন্য দুটি আবেদন করা হয়েছে। সেই আবেদনে মোট ২০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করা হয়েছে এবং তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।

একটি পিটিশনের মাধ্যমে যে ১৪ জন ইতোমধ্যে গ্রেফতার হয়েছেন তাদের গণহত্যার মামলায় গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করা হয়েছে। আদালত আবেদন মঞ্জুর করে আগামী ১৮ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তাদের উপস্থিত করার নির্দেশ দিয়েছেন।
দ্বিতীয় আরো একটি পিটিশনে আমরা ৬ জনের বিরুদ্ধে শোন অ্যারেস্ট দেখানোর জন্য আবেদন করেছিলাম। তারা হচ্ছেন- সাবেক আইজিপি আবদুল্লাহ আল মামুন, বরখাস্তকৃত মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান, আব্দুল্লাহ আল কাফি, আরাফাত হোসেন, আবুল হাসান ও মাজহারুল ইসলাম। তারা বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার হয়ে জেলে আছেন। তাদের বিরুদ্ধে যেহেতু আমরা সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেয়েছি, তাই তাদেরও এই মামলায় গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করা হয়েছিল। তাদের গ্রেফতার দেখিয়ে আগামী ২০ নভেম্বর এ আদালতে উপস্থিত করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।

তাজুল ইসলাম বলেন, পুলিশ কর্মকর্তাসহ যারা গণহত্যার সাথে যুক্ত ছিলেন, তাদের নাম আমরা ধারাবাহিকভাবে সবার সামনে নিয়ে আসব। হয়তো এখানে একটু সময় লাগবে। কিন্তু কোনো দোষীকে বাদ দেয়া হবে না। অথবা কোনোভাবে প্রভাবিত হয়ে, অপরাধ করেছে এমন কোনো ব্যক্তিকে ছাড় দেয়া হবে না। এই দুটো মেসেজ আমরা জাতির উদ্দেশ্যে জানাতে চাই।
তিনি বলেন, এ পর্যন্ত তিনটি মিসকেস করা হয়েছে। প্রথমটির মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং দ্বিতীয়টিতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ মন্ত্রিপরিষদের সদস্যদের এবং তৃতীয়টিতে পুলিশ সদস্যদের আওতায় নেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, জুলাইয়ের ঘটনায় যে সব পুলিশ অফিসার সরাসরি যুক্ত ছিল এবং যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে, শুধু তাদের গ্রেফতার করা বা দেখানোর জন্য আবেদন করছি। আমরা কোনো নির্দোষ ব্যক্তির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা চাইব না।

 

 


আরো সংবাদ



premium cement