অশান্ত মনিপুরে বিপুল সেনা মোতায়েন
- নয়া দিগন্ত ডেস্ক
- ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১:২৬
গত কয়েক দিনে নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ভারতের মনিপুর রাজ্য। জিরিবাম, পশ্চিম ইম্ফল, বিষ্ণুপুরসহ একাধিক জেলায় সংঘর্ষের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এবার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বৃহস্পতিবার থেকে রাজ্যজুড়ে ছয়টি থানা এলাকায় নতুন করে চালু করা হলো ‘সশস্ত্র বাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইন’ (‘আর্মড ফোর্সেস স্পেশাল পাওয়ার অ্যাক্ট’ বা আফস্পা)। আনন্দবাজার পত্রিকা।
বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জারি করা একটি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পশ্চিম ইম্ফলের সেকমাই ও লামসাং, পূর্ব ইম্ফলের লামলাই, বিষ্ণুপুরের মইরাং, কাংপোকপির লেইমাখং এবং জিরিবাম থানা এলাকায় নতুন করে আফস্পা চালু করা হয়েছে। ইতোমধ্যে সংঘর্ষে উত্তরপূর্ব ভারতের এই রাজ্যটিতে আড়াইশোর বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। কয়েক দিন আগেই আরো ১৩ জনের মৃত্যুর খবর সামনে এসেছে। আর সেই পরিস্থিতিতে অশান্ত মনিপুরে অতিরিক্ত বিশ কোম্পানির সশস্ত্র কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠালো স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে রয়েছে ১৫ কোম্পানি সিআরপিএফ এবং ৫ কোম্পানি বিএসএফ। সব মিলিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে রাজ্যটিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ২১৮ কোম্পানি অর্থাৎ প্রায় তিন হাজার সশস্ত্র বাহিনী। উল্লেখ্য, গত মাসের শুরুতেই মনিপুরে ছয় মাসের জন্য বর্ধিত হয়েছিল আফস্পা’র মেয়াদ। ইম্ফল, বিষ্ণুপুর, জিরিবামসহ ১৯টি থানা এলাকা বাদ দিয়ে গোটা রাজ্যেই এই আইনের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছিল। এবার আরো ছয়টি থানায় বলবৎ হলো সশস্ত্র বাহিনীর বিশেষক্ষমতা আইন। ওই ছয়টি এলাকাকে ‘অশান্ত অঞ্চল’ বলে অভিহিত করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ছয়টি থানা এলাকায় নিরাপত্তা বজায় রাখতে এবং বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণ করতেই এই পদক্ষেপ।
গত ৭ নভেম্বর গভীর রাতে জিরিবাম জেলার জাইরন গ্রামে হামলা চালায় এক দল দুষ্কৃতকারী। সারা রাত ধরে চলে লুটপাট, অত্যাচার এবং দুষ্কৃতকারীদের তাণ্ডব। গ্রামের অন্তত ১৭টি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। স্বামীর সামনেই ধর্ষণ করে জ্বালিয়ে দেয়া হয় তিন সন্তানের মা এক মহিলাকে। অভিযোগ, হামলা চালিয়েছিল মেইতেই সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাম্বাই টেঙ্গল এবং ইউএনএলএফের যৌথ দল। ওই ঘটনার পর থেকেই উত্তপ্ত জিরিবাম জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা। দোষীদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে গ্রামবাসীরা। ঘটনার প্রতিবাদে সরব হন কুকি, জোমি, মার গোষ্ঠীর নেতারা। মেইতেই গ্রামগুলোতেও হামলা শুরু হয়। জ্বালিয়ে দেয়া হয় ঘরবাড়ি। পরিস্থিতি সামাল দিতে সোমবার রাত থেকে কার্ফু জারি হয় জিরিবাম জেলায়। উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পূর্ব ইম্ফল জেলার থামনাপোকপি, সাবুংখোক এবং সানসাবিসহ বিভিন্ন এলাকাও।
উল্লেখ্য, গত সেপ্টেম্বর মাস থেকেই মনিপুরে মেইতেই ও কুকি জনগোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষে পরিস্থিতি আবার উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। দফায় দফায় সংঘর্ষ চলছে মনিপুরের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে। বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি অভিযান চালিয়ে প্রচুর গোলাবারুদ ও আগ্নেয়াস্ত্র বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ ও আধা সামরিক বাহিনীর যৌথ দল। ১৯৮০ সাল থেকেই আফস্পা’র আওতায় মনিপুরের বিস্তীর্ণ এলাকাকে ‘অশান্ত অঞ্চল’ বলে অভিহিত করা হয়ে এসেছে। ২০০৪ সালে থাংজাম মনোরমার ধর্ষণ ও হত্যার পর ব্যাপক প্রতিবাদের জেরে ইম্ফলের কয়েকটি জায়গায় আফস্পা আইন প্রত্যাহার করে নেয়া হয়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা