১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ১৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

মৌসুমের শুরুতেই দেশজুড়ে পর্যটকের ঢল

-

মৌসুমের শুরুতেই দেশের বিভিন্ন জেলায় পর্যটকের ঢল নেমছে। গতকাল শুক্রবার থেকে এসব স্থানে ভ্রমণপ্রেমীদের উপস্থিতিতে উৎসবের আমেজ বইছে। এর মধ্যে অন্যতম কক্সবাজার, সিলেট, বান্দরবান ও সুন্দরবন অন্যতম।
সংশ্লিষ্টরা জানান, কক্সবাজারের সব স্পটে বিপুলসংখ্যক পর্যটকের উপস্থিতি লক্ষ করা যাচ্ছে। কক্সবাজার হোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কৈইয়ুম চৌধুরী বলেন, শীত পড়ার সাথে সাথে সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে কক্সবাজারে পর্যটকের আগমন ঘটছে। দীর্ঘদিন আমাদের ব্যবসায় মন্দাভাব ছিল। পর্যটকের আগমনের কারণে এখন ব্যবসা আগের চেয়ে অনেক ভালো হচ্ছে। আশা করি সামনের দিনগুলোতে আরো ভালো হবে।

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত ছাড়াও ইনানি, হিমছড়ি, পাটুয়ারটেক, টেকনাফ, মাতিনের কূপ, মহেশখালীর আদিনাথ মন্দির, মহেশখালীর বৌদ্ধমন্দির, রামুর বুদ্ধমন্দির, সাফারি পার্কসহ বিভিন্ন পর্যটন স্পটগুলোতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন পর্যটকরা।
টুরিস্ট পুলিশের মুখপাত্র সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ বলেন, সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে বিশেষ নজরদারি বাড়ানো হয় টুরিস্ট পুলিশের। নিয়মিত টহল ব্যবস্থায় অতিরিক্ত ফোর্স দেয়া হচ্ছে। রাতেও সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে সৈকতসহ পর্যটন স্পটগুলো নিরাপত্তার আওতায় থাকে।
বান্দরবানের চার উপজেলায় ভ্রমণে বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার পর জেলার পর্যটনশিল্পের প্রাণ ফিরতে শুরু করেছে। এক সপ্তাহ ধরে এসব উপজেলায় পর্যটক সমাগম বেড়েছে। তবে বেশির ভাগ পর্যটকই রাত যাপনের পরিবর্তে দিনে এসে দিনে ফিরে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ীরা।
গত ৮ অক্টোবর বান্দরবান ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। এরপর ৬ নভেম্বর জেলার সাতটি উপজেলার মধ্যে চার উপজেলায় ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছে। তবে তিন উপজেলা রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচিতে নিষেধাজ্ঞা বহাল রয়েছে।
জেলা হোটেলে-মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জসীম উদ্দিন বলেন, পর্যটকের সংখ্যা বাড়লেও বেশির ভাগ পর্যটক দিনেই ফিরে যাচ্ছেন। খুব কম পর্যটক রাত যাপন করছেন। ডিসেম্বরে স্কুলশিক্ষার্থীদের পরীক্ষা শেষ হলে পর্যটক সমাগম আরো বাড়বে। তিনি আরো বলেন, রোয়াংছড়ি ও থানচির নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হলে পর্যটকেরা আরো বেশি আকৃষ্ট হতেন। পর্যটক টানতে জেলার আবাসিক হোটেলগুলোতে ৩৫ শতাংশ এবং পরিবহনে ২০ শতাংশ ছাড় দেয়া হচ্ছে।

বান্দরবান টুরিস্ট পুলিশের পরিদর্শক বখতিয়ার উদ্দিন বলেন, নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর বান্দরবান সদর, লামা, আলীকদম ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় পর্যটকেরা নির্বিঘেœ ঘুরতে পারছেন। তাই পর্যটক সমাগম বেড়েছে।
তিন মাসের প্রবেশ নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর সুন্দরবনেও পর্যটকরা ভিড় করছেন। প্রতিদিন ভোর থেকে বন বিভাগের কাছ থেকে বৈধ পাস-পারমিট নিয়ে চার শতাধিক জেলে-বনজীবীর পাশাপাশি ট্যুরিস্ট জলোযানে সুন্দরবনে প্রবেশ করছেন। বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের দু’টি রেঞ্জ অফিস ও করমজল পর্যটন কেন্দ্র থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের শরণখোলা ও চাঁদপাই রেঞ্জ অফিসসহ পর্যটনকেন্দ্র করমজল, আলীবান্দা, কটকা, কচিখালী, সুপতি থেকে বেশি ইকো-ট্যুরিস্ট গেছেন।
সিলেটের বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্রেও পর্যটকদের ঢল নেমেছে। সিলেটের হোটেল, মোটেল ও রিসোর্টগুলো আগে থেকেই অগ্রিম ভাড়া নিয়েছেন পর্যটকেরা। ফলে বিভিন্ন হোটেল-মোটেলে তিন দিন ছুটির মধ্যে কক্ষ ফাঁকা পাওয়া যাচ্ছে না।
সিলেটের হোটেল-মোটেল ও গেস্টহাউজ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি বলেন, সিলেটে এবারই বেশি পর্যটকের উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে। এরই মধ্যে সিলেটের সব ক’টি হোটেল-মোটেল বুকিং পর্যটকরা চা-বাগান, টিলা, পানি-পাথরসহ বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্র ঘুরে দেখছেন। সিলেটের জাফলং, সাদাপাথর এলাকায় সকাল থেকে পর্যটকেরা আসছেন বলে জানিয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ।

 


আরো সংবাদ



premium cement