৩ মাস পর মারা গেলেন গুলিবিদ্ধ আবদুল্লাহ
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০৫
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত আবদুল্লাহ (২৩) প্রায় তিন মাস চিকিৎসাধীন থেকে গতকাল মারা গেছেন। গতকাল সকাল ১০টার দিকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্বাস্থ্যবিষয়ক উপকমিটির সদস্য ইয়ামিন বলেন, গত ৫ আগস্ট সন্ধ্যা ৭টার দিকে রাজধানীর তাঁতীবাজার মোড়ে বংশাল থানার সামনে গুলিবিদ্ধ হন আবদুল্লাহ। জানা গেছে, তার কপালের মাঝখানে একটি গুলি লাগে। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় প্রায় দুই থেকে তিন ঘণ্টা তিনি রাস্তায় পড়ে থাকেন। সেখান থেকে প্রথমে তাকে মিটফোর্ড এবং পরে ঢাকা মেডিক্যালে নেয়া হয়। সেখানে রাত ৩টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত অপারেশনের পর ডাক্তাররা সুস্থ হওয়ার ব্যাপারে তাকে আশ্বস্ত করেন। দুই দিন পর তাকে রিলিজ দিলে তিনি বাসায় চলে যান। তবে যশোর গিয়ে তার প্রচণ্ড ব্যথা শুরু হয়। এরপর তাকে আবার ঢাকা মেডিক্যালে নিয়ে আসা হয়। তখন চিকিৎসকরা মাথার ভেতরে ইনফেকশন দেখতে পান, যা তরল প্লাজমার মতো গলে গলে পড়তে থাকে। এরপর আবার তার অপারেশন করা হয়। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় গত ২২ আগস্ট তাকে সিএমএইচে স্থানান্তর করা হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল মারা যান আবদুল্লাহ।
আবদুল্লাহর বাড়ি যশোরের বেনাপোল। তিনি রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। আন্দোলনের শুরু থেকেই আবদুল্লাহ সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন।
বেনাপোল (যশোর) সংবাদদাতা জানান, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন গতকাল বেনাপোল স্থলবন্দরে নির্মিত কার্গো ভেহিক্যাল টার্মিনাল উদ্বোধনের পর বিকেলে নিহত মোহাম্মদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে গিয়ে স্বজনদের সান্ত্বনা দেন।
আব্দুল্লাহর মা মাবিয়া বেগম বলেন, আব্দুল্লাহর স্বপ্ন ছিল পড়ালেখা শেষ করে বড় হয়ে একটা সরকারি চাকরি করবে। বাবা-মার দুঃখ কষ্ট লাঘব করে তাদের মুখে হাসি ফোটাবে। তার সে স্বপ্ন পূরণ হলো না। পুলিশের গুলিতে সব শেষ হয়ে গেল। এ নিউজ পাঠানো পর্যন্ত নিহতের লাশ বেনাপোল এসে পৌঁছায়নি। পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে গভীর রাত্রে বা ভোর রাতের দিকে লাশ বেনাপোল পৌঁছবে এবং আজ শুক্রবার তার দাফন করা হবে।