ভারতে ‘বুলডোজার জাস্টিস’ নিষিদ্ধ করল সুপ্রিম কোর্ট
- নয়া দিগন্ত ডেস্ক
- ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ০২:১৯
ভারতের সুপ্রিম কোর্ট বলেছে যে কর্তৃপক্ষ শুধু একজন ব্যক্তিকে অপরাধের জন্য অভিযুক্ত করার পর তার বাড়িঘর বুলডোজার দিয়ে ভেঙে ফেলা যাবে না। অভিযুক্ত বা অপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্তদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসাবে তাদের ঘরবাড়ি ধ্বংস করার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বেশ কয়েকটি পিটিশনের প্রতিক্রিয়ায় এই রায় আসে।
বুধবার ভারতের সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, ‘নির্বাহী [সরকার] বিচারক হয়ে সম্পত্তি ভেঙে ফেলতে পারে না। একটি ভবন ভেঙে বুলডোজারের হিমশীতল দৃশ্য অনাচারের কথা মনে করিয়ে দেয়। এটি কর্তৃপক্ষকে আদেশ চ্যালেঞ্জ বা সম্পত্তি খালি করার জন্য ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে পর্যাপ্ত সময় দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
এই রায়টি এমন একটি ঘটনার পটভূমিতে এসেছে, যেখানে রাজ্যগুলোর কর্তৃপক্ষ, বিশেষ করে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) দ্বারা শাসিত, অপরাধের জন্য অভিযুক্ত ব্যক্তিদের শাস্তি দেয়ার জন্য একটি হাতিয়ার হিসাবে ধ্বংস ব্যবহার করা হয়েছে।
কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে অবৈধ নির্মাণ কিন্তু বিশেষজ্ঞরা যুক্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এবং বলেছেন যে এটি করার কোনো আইনি যৌক্তিকতা নেই। যদিও ভুক্তভোগীদের মধ্যে হিন্দু পরিবার অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, বিরোধী নেতা ও কর্মীরা বলছেন, এই ধরনের ধ্বংসযজ্ঞ বেশির ভাগই মুসলমানদের লক্ষ্য করে, বিশেষ করে ধর্মীয় সহিংসতা বা বিক্ষোভের পর ঘটে।
বিজেপি এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা অপরাধের বিষয়ে তাদের কঠোর অবস্থানের সাথে ধ্বংসকে যুক্ত করেছেন।
বুধবার শুনানির সময় এই রীতির সমালোচনা করে কড়া শব্দ ব্যবহার করে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। আদালত বলে, সাংবিধানিক গণতন্ত্রে এই ধরনের উচ্ছৃঙ্খল এবং স্বেচ্ছাচারী কর্মের কোনো স্থান নেই, যারা আইন তাদের হাতে তুলে নিয়েছে তাদের জবাবদিহি করা উচিত। কর্তৃপক্ষকে কথিত অবৈধ সম্পত্তি ভেঙে ফেলার আগে একজন দখলদারকে ১৫ দিনের নোটিশ দেয়া বাধ্যতামূলক। এই নির্দেশিকা লঙ্ঘন করা হবে আদালত অবমাননার সমান। আদালত পুরো শুনানিজুড়ে বিচারবহির্ভূত ধ্বংসযজ্ঞের কঠোর সমালোচনা করেছে।
মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এই রায়ের প্রশংসা করে বলেছে যে এটি দেরিতে হলেও জনগণের অধিকার সমুন্নত রাখার ক্ষেত্রে এটি একটি স্বাগত পদক্ষেপ।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা