এক কোটি ফ্যামিলি কার্ডে ৪৩ লাখেই অনিয়ম!
টিসিবি তৈরি করছে স্মার্ট কার্ড- অর্থনৈতিক প্রতিবেদক
- ১০ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:১৮
সমাজের দরিদ্র মানুষের জন্য তৈরিকৃত এক কোটি ফ্যামিলি কার্ডের মধ্যে ৪৩ লাখ কার্ডে অনিয়ম রয়েছে। এই কার্ডের মধ্যে একই ব্যক্তির একাধিক কার্ড রয়েছে। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আস্থাভাজনরা এই কার্ড করেছে। এতে সহায়তা করেছে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি।
এখন অনিয়ম ঠেকাতে ৫৭ লাখ স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ড তৈরি করেছে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। স্মার্ট কার্ডের মাধ্যমে এখন থেকে ভোক্তাদের কাছে কম দামে নিত্যপণ্য বিক্রি করা হবে।
গতকাল শনিবার রাজধানীর তেঁজগাওয়ে টিসিবির আঞ্চলিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে টিসিবির মুখপাত্র হুমায়ুন কবির এ সম্পর্কে বলেন, এক কোটি ফ্যামিলি কার্ডের মধ্যে একই পরিবার একাধিক ব্যক্তি পণ্য পাচ্ছে। হাতে লেখা কার্ডগুলোকে স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ডে রূপান্তর করতে গিয়ে দেখা গেছে ৪৩ লাখ কার্ডে অনিয়ম রয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন বা জনপ্রনিধিরা না থাকায় ভোক্তাপর্যায়ে পণ্য ঠিক মতো পৌঁছাচ্ছে কি না তাও সঠিকভাবে পর্যবেক্ষণ করা যাচ্ছে না।
সংবাদ সম্মেলনে হুমায়ুন কবির বলেন, টিসিবির ফ্যামিলি কার্ড নিয়ে সংবাদমাধ্যমে অনিয়মের খবর আসছে। এক ব্যক্তি একাধিক জায়গায় এই কার্ড দিয়ে পণ্য নিচ্ছেন, এই হচ্ছে মূল অভিযোগ। পরিবার কার্ডের এসব সমস্যা দূর করার জন্য স্মার্ট কার্ড তৈরি করা হচ্ছে, যেন এক পরিবারে এক ব্যক্তির বেশি কেউ কার্ড না পান।
কার্ডগুলোকে স্মার্ট কার্ডে রূপান্তরে তথ্য হালনাগাদ করার জন্য টিসিবির পক্ষ থেকে বিভিন্ন জেলা প্রশাসন ও সিটি করপোরেশনকে চারবার চিঠি দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, কার্ডধারীদের তথ্য পরিবর্তন, সংযোজন, বিয়োজন, পরিমার্জনসহ হালনাগাদ বিভিন্ন তথ্য দেয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে। কিন্তু জেলা প্রশাসন ও সিটি করপোরেশনে সাম্প্রতিক রদবদলের কারণে টিসিবির হাতে এসব তথ্য এখনো আসেনি। সে জন্য বাকি ৪৩ লাখ কার্ড স্মার্ট কার্ডে রূপান্তর করার ক্ষেত্রে সময় লাগছে। এখন পুরনো কার্ডেই পরিবারগুলোর কাছে পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে।
টিসিবির ট্রাকের পণ্য অনেক মানুষ দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকেও কিনতে পারছেন না বলে সংবাদমাধ্যমে উঠে এসেছে। কেন এমনটা হচ্ছে, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে হুমায়ুন কবির বলেন, নির্দিষ্টসংখ্যক পরিবারের জন্য বরাদ্দ থাকে। প্রতিটি স্থানে ৩৫০ জনের জন্য পণ্য বরাদ্দ থাকে। পরিবেশকদের বলা হয়েছে, ৩৫০টি টোকেন দেয়ার জন্য। এর বেশি দেয়া সম্ভব নয়। যারা টোকেন পাবেন না, তাদের সে দিনের জন্য চলে যেতে হবে। ফলে ৩৫০ জনের বেশি মানুষ থাকলে অন্যদের পরের দিন আসতে বলা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, পবিত্র রমজান মাসে ফ্যামিলি কার্ডধারীদের দুই কেজি মসুর ডাল, দুই লিটার ভোজ্যতেল, এক কেজি চিনি ও এক কেজি ছোলা দেয়া হবে। এ ছাড়া মহানগর এলাকায় এক কেজি খেজুর দেয়া হবে। রোজার সময় পণ্য ট্রাকে বিক্রি হবে কি না, তা এখনই বলা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানান হুমায়ুন কবির। তিনি বলেন, যেসব পরিবেশকের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ উঠবে, তাদের ছাড় দেয়া হবে না, নেয়া হবে কঠোর ব্যবস্থা।
কার্ডের বাইরেও ট্রাকে করে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে মোট ৭০টি পয়েন্টে ২৪ হাজারের বেশি মানুষ পণ্য কিনতে পারবে।
রমজানে বিক্রির জন্য টিসিবি সবধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে বলে আশ্বস্ত করে হুমায়ুন কবির বলেন, আশা করছি পণ্যের কোনো সঙ্কট হবে না। তিনি বলেন, বিক্রয় কার্যক্রমে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকেই শুরু হবে স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে বিক্রয় কার্যক্রম।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা