০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
বাজার দর

বাজারে আসছে নতুন সবজি ফিরছে স্বস্তি

-


বাজারে ধীরে ধীরে সরবরাহ বাড়ছে শীতের সবজির। ফলে ক্রমেই কমে আসছে বিভিন্ন সবজির দাম আর এতে ভোক্তাদের মাঝে ফিরছে স্বস্তি। শেখ হাসিনার পলায়নের পর দেশের অনেক স্থানে ভয়ানক বন্যা আর অতি বর্ষণের ফলে দেশজুড়ে সবজির বাজার অনেক চড়ে গিয়েছিল। ১০০ টাকা কেজির নিচে মিলছিল না কোনো সবজিই। ফলে নাভিশ্বাস উঠে গিয়েছিল ভোক্তা-ক্রেতাদের। শরতের বিদায়ে হেমন্তের আগমনে দেশের সবজি খেতগুলো আবার সতেজ হয়ে উঠেছে। ফুলকপি, পাতাকপি. শিমসহ বেশ কয়েকটি শিতের সবজি বেশি বেশি হারে আসছে বাজারে। কাঁচাবাজারে সব ধরনের সবজির দাম কমতে শুরু করেছে। ফলে দু’মাসের অস্থিরতা কাটিয়ে ক্রেতাদের মধ্যে স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে পর্যাপ্ত সবজি আসতে শুরু করেছে। এর ফলে বেশিরভাগ সবজির দাম কমেছে। তবে এর মধ্যেও পুরাতন আলুর দাম বেড়েই চলেছে। বীজ আলুর চাহিদার কারণে নতুন আলু না আসা পর্যন্ত আলুর দাম বাড়তি থাকবে বলে জানিয়েছে ব্যবসায়ীরা।

গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, গত দুই সপ্তাহ দেশি পেঁয়াজের দাম বেড়ে ১৫০ টাকা কেজিতে উঠেছিল, যা এখন কেজিপ্রতি ১০ টাকা কমে ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ কেনা যাচ্ছে ১২০ টাকার মধ্যে। একই ভাবে বাজারে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম প্রতি কেজিতে কমেছে ২০ টাকা। বাজারে এখন প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৭৫-১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা ১৯৫ থেকে ২০০ টাকায় উঠেছিল। বাজারে প্রতি ডজন ফার্মের মুরগির ডিম ১৪৫-১৫০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। আলুর দাম গত সপ্তাহের চেয়ে ৫ টাকা এবং দুই সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিপ্রতি ১০ টাকা বেড়েছে এখন বিক্রি হচ্ছে ৭০ কেজি টাকা দরে। আলুর এ দাম চলতি বছরের সর্বোচ্চ। আলুর দামের বিষয়ে ব্যবসায়ীরা বলছেন, আলুর সরবরাহ এখন শেষের দিকে। প্রতি বছরই এ সময় দাম বাড়ে। আব্দুর রহমান নামের একজন ব্যবসায়ী বলেন, নতুন আলু না আসা পর্যন্ত দাম কমার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। এ বছর অতিবৃষ্টি ও বন্যায় দুই দফায় আলুর বীজ নষ্ট হওয়ায় সারাবছর আলুর দাম ছিল অস্থিতিশীল। হাসিনা সরকারও দাম বেঁধে দিয়ে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি।
গতকাল রাজধানীর বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গোল বেগুন প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা, লম্বা বেগুন ৮০ টাকা, ঝিঙা ৬০ টাকা, ধুন্দুল ৬০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, বরবটি ১০০ টাকা, করোলা ১০০ টাকা, শসা ৮০ টাকা, শিম ১০০ টাকা, কচুরমুখি কেজি ৮০, ঢেঁড়স ৬০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া প্রতি কেজি ৬০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, মুলা ৬০ টাকা, ছোট সাইজের ফুলকপি ও বাঁধাকপি প্রতিটি ৫০ টাকা, কাঁকরোল প্রতি কেজি ১০০ টাকা এবং কাঁচামরিচ ১৫০-২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সবজি বিক্রেতা আবু সাঈদ বলেন, শীতের সবজির সরবরাহ বাড়ছে। কিছু দিনের মধ্যেই দাম আরো কমে আসবে। তিনি বলেন, গেল কয়েক সপ্তাহের তুলনায় সবজির দাম কিছুটা কমেছে। বাজারের কয়েক ধরনের সবজির দাম ১০০ টাকা বা তার চেয়ে কিছুটা বেশি। বাকি সব সবজি ৬০-৮০ টাকার ঘরে। কয়েক সপ্তাহের মধ্যে সবজির দাম এখন কিছুটা কম।
কারওয়ান বাজার থেকে পাইকারি সবজি কিনে এনে খুচরা বাজারে বিক্রি করেন আলমগীর হোসেন। সবজির দাম বিষয় তিনি বলেন, এই সময় বেশিরভাগ সবজির মৌসুম শেষ হয়ে যায়, নতুন করে সবজি ওঠার অপেক্ষায় আছেন কৃষকরা। সেই কারণে সবজির দাম একটু বেশি যাচ্ছে। আবার একেবারে নতুন কিছু সবজি উঠেছে বাজারে সেগুলোর দামও কিছুটা বেশি। তবে শীত চলে আসলে, নতুন সব সবজি বাজারে উঠবে তখন সবজির দাম অনেক কমে যাবে। এখন বাজারে সবজির সরবরাহ তুলনামূলক কম, সে কারণেই বাজার কিছুটা বাড়তি যাচ্ছে।


আরো সংবাদ



premium cement