০৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯ পৌষ ১৪৩০, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৫
`
পঞ্চদশ সংশোধনীর বৈধতা প্রশ্নে রুলের শুনানি

এটি পুরো বাংলাদেশের মানুষের মামলা : হাইকোর্ট

-


তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলোপ করে আনা সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর বৈধতা নিয়ে জারি করা রুলের ওপর দ্বিতীয় দিনের মতো শুনানি হয়েছে। শুনানির একপর্যায়ে হাইকোর্ট বলেছেন, এই মামলাটি কোন পক্ষের নয়, এটি এখন পুরো বাংলাদেশের মানুষের মামলা। গতকাল বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।
শুনানির একপর্যায়ে বিএনপির পক্ষে সিনিয়র আইনজীবী জয়নুল আবেদীন ও ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল আজ তাদের বক্তব্য উপস্থাপনের কথা আদালতকে জানান। এ সময় ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল হাইকোর্টকে বলেন, মাই লর্ড এ মামলাটি আমরা ভিন্ন ভিন্নভাবে যুক্ত হলেও এটিতে কোনো পক্ষ বিপক্ষের বিষয় নেই, এটি দেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মামলা। তখন হাইকোর্ট বলেন, হ্যাঁ, এই মামলাটি কোনো পক্ষের নয়, এটি পুরো বাংলাদেশের মানুষের মামলা। এ মামলার ক্লায়েন্ট পুরো বাংলাদেশের জনগণ। এরপর আদালত রুলের পরবর্তী শুনানির জন্য আজ দিন ধার্য করেন।
আদালতে বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তির পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী ড. শরিফ ভূঁইয়া। তিনি সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীকে একটি মোটিভেটেড অ্যামেন্ডমেন্ট (উদ্দেশ্যমূলক সংশোধনী) বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, দেশে সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচন যাতে না হয়, বারবার যাতে একই সরকার ক্ষমতায় থাকতে পারে সে উদ্দেশ্যেই মূলত পঞ্চদশ সংশোধনী আনা হয়।
আদালতে বিএনপির পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, বদরুদ্দোজা বাদল। জামায়াতের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। ইনসানিয়াত বিপ্লবের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আব্দুর রউফ।

রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো: আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আরশাদুর রউফ ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো: আসাদ উদ্দিন।
গত ১৯ আগস্ট জনস্বার্থে পাঁচজন বিশিষ্ট ব্যক্তির করা রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি শেষে বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি শশাঙ্ক শেখর সরকারের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন। পরে আবেদনকারী পক্ষ রুলটি শুনানির জন্য বিচারপতি ফারাহ মাহবুবের নেতৃত্বাধীন কোর্টে থউপস্থাপন করেন।
সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি রিট করেন। অন্য চারজন হলেন- তোফায়েল আহমেদ, এম হাফিজ উদ্দিন খান, জোবাইরুল হক ভূঁইয়া ও জাহরা রহমান। এরপর এ রুলের ওপর মতামত দিতে বিএনপি ও জামায়াত যুক্ত হয়।
আদালতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর রিটে যুক্ত হওয়ার আবেদন করেন।
অন্যদিকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার দলটির পক্ষে রিটে যুক্ত হওয়ার আবেদন করেন।
পঞ্চদশ সংশোধনী আইনে (২০১১) বিভিন্ন বিষয়ের সাথে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতির পিতা হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেয়া হয়েছিল। ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনী পাস হয় এবং রাষ্ট্রপতি ২০১১ সালের ৩ জুলাই তাতে অনুমোদন দেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement