তালেবানের শাসনে আফগানিস্তানে আফিম চাষ কমছে
- নয়া দিগন্ত ডেস্ক
- ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ০০:১২
এ এক কঠিন যুদ্ধ। আফগানিস্তানে আফিম চাষে আন্তর্জাতিক অপরাধী চক্র জড়িত। তারপরও দেশটিতে তালেবান শাসনের ফলে পপি চাষের পরিমাণ আগের মাত্রার চেয়ে অনেক নিচে নামিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। যদিও জাতিসঙ্ঘের প্রতিবেদন বলছে, গত বছরের চেয়ে এ বছর আফিম উৎপাদন ১৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে; কিন্তু জাতিসঙ্ঘের মাদকদ্রব্য ও অপরাধবিষয়ক কার্যালয় এর বক্তব্য উল্লেখ করে (ইউএনওডিসি) বুধবার প্রকাশিত আলজাজিরার প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বলছে, ২০২২ সালে তালেবানের সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে আফিম চাষ তালেবান শাসনের আগে পৌঁছে যাওয়া স্তরের অনেক নিচে নামিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। এই বছরের চাষের এলাকা মাত্র ১২ হাজার ৮০০ হেক্টর (৩১ হাজার ৬২৯ একর), যা নিষেধাজ্ঞার আগে চাষ করা দুই লাখ ৩২ হাজার হেক্টর (৫৭৩, ২৮৪ একর) থেকে অনেক কম।
ইউএনওডিসি অনুসারে, ২০২২ সালের এপ্রিলে মাদক চাষের ওপর নিষেধাজ্ঞার ফলে ২০২৩ সালের মধ্যে আফিম চাষ ৯৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। আফগানিস্তানে জাতিসঙ্ঘের সহায়তা মিশনের প্রধান ও মহাসচিবের বিশেষ প্রতিনিধি রোজা ওতুনবায়েভা বলেছেন, ‘এটি আরো গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ যে, আফিম চাষ প্রকৃতপক্ষে হ্রাস পেয়েছে এবং আফগানিস্তানের প্রতিবেশী, অঞ্চল এবং বিশ্ব এটিকে স্বাগত জানাচ্ছে।’
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে যে, আফিম চাষাবাদ নিষেধাজ্ঞা ও প্রতিরোধে টিকতে না পেরে দেশটির ঐতিহ্যবাহী দক্ষিণ-পশ্চিম কেন্দ্রস্থল থেকে উত্তর-পূর্ব প্রদেশগুলোতে চলে গেছে, যেখানে ২০২৪ সালে ৫৯ শতাংশ চাষ হয়েছিল।
২০২৩ সালের মধ্যে এই প্রদেশে চাষাবাদ ৩৮১ শতাংশ বেড়েছে, বিশেষ করে বাদাখশানে, যা এই অঞ্চলের বেশির ভাগ আফিম উৎপাদনের জন্য দায়ী। নিষেধাজ্ঞার ফলে আফিমের দাম বেড়েছে, যার অর্থ পপি চাষ সংগ্রামী আফগানদের জন্য একটি লোভনীয় সম্ভাবনা হিসেবে রয়ে গেছে। প্রতি কেজি আফিমের দাম ৭৩০ মার্কিন ডলার, যা গত কুড়ি বছরে সর্বোচ্চ মূল্যে পৌঁছেছে। নিষেধাজ্ঞার আগে আফিমের কেজি ছিল ১০০ ডলার। গত বছরও আফিমের কেজি ছিল ৪০৮ ডলার। ওতুনবায়েভা জোর দিয়ে বলেন, গ্রামীণ সম্প্রদায়গুলো প্রধান আয়ের উৎস হিসেবে যেন আফিম চাষের দিকে না ঝুঁকে পড়ে সে দিকে নজর দেয়া জরুরি। আমরা যদি এই আফিম চাষের জমির পরিমাণ হ্রাস করা টিকিয়ে রাখতে বা রূপান্তরটি টেকসই করতে চাই তবে শক্তিশালী আন্তর্জাতিক সমর্থন প্রয়োজন।
বিশ্বের অন্যতম দরিদ্র দেশ হিসেবে আফগানিস্তানের অনেক কৃষক, এই নিষেধাজ্ঞার কারণে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং তারা বিকল্প ফসল থেকে একই মুনাফা তুলতে পারেনি। আন্তর্জাতিক ক্রাইসিস গ্রুপের মতে, এমনকি বৈধ ফসলও একটি স্বল্পমেয়াদি সমাধান, যা দ্রুত প্রয়োজন তা হচ্ছে অ-কৃষি শিল্পে কর্মসংস্থান সৃষ্টির ওপর নজর দেয়া। তার মানে বিদেশী বিনিয়োগ।
গত মে মাসে পপিক্ষেত ধ্বংস অভিযানে সংঘর্ষের ফলে হিন্দুকুশ এবং পার্বত্য অঞ্চল বাদাখশানে বেশ কয়েকজন নিহত হয়। ইউএনওডিসির পরিচালক ঘাডা ওয়ালি বলেন, আফগানিস্তানে আফিম চাষ নিম্ন স্তরে রয়ে যাওয়ায়, অবৈধ বাজার থেকে মুক্ত আয়ের টেকসই উৎস বিকাশে আফগান কৃষকদের সহায়তা করার সুযোগ এবং দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করা উচিত।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা