সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিষয়ে ট্রাম্পকে ভুল তথ্য দেয়া হয়েছে
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ০০:১২, আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ০০:৩০
বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিষয়ে সদ্যবিজয়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ভুল তথ্য দেয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম। গতকাল বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শফিকুল আলম এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ভুল তথ্য দেয়া হয়েছে। এখন যেহেতু উনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন, তাই অব্যশই উনি এখন দেখতে পারবেন ঘটনা আসলে কী ঘটেছে। আমরা মনে করি সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে প্রচুর অপতথ্য বা ভুলতথ্য প্রচার করা হয়েছে। ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস রয়েছে তারা দেখবেন বাংলাদেশে কী ঘটছে বা সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা আদৌ ঘটেছে কি-না। যুক্তরাষ্ট্রের সদ্যবিজয়ী প্রেসিডেন্ট তখন নিশ্চয়ই প্রকৃত চিত্র জানতে পারবেন।’
বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে প্রচুর ভুল তথ্য ছড়ানো হচ্ছে উল্লেখ করে প্রেসসচিব হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান কাউন্সিলের করা একটা রিপোর্টের কথা উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন। শফিকুল আলম বলেন, ওই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয় ধর্মীয় কারণে হিন্দু সম্প্রদায়ের ৯ ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। অথচ কয়েক দিন আগে নেত্র নিউজ প্রত্যেকটা মৃত্যু কী কারণে রয়েছে তা খুঁজে বের করেছে। তাতে দেখা গেছে-মৃত্যুগুলোর পেছনে ধর্মীয় কারণ ছিল না। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত শত্রুতা বা রাজনৈতিক কারণে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।’
তিনি বলেন, আমরা আশা করব সংখ্যালঘু ধর্মীয় নেতারা এসব বিষয়ে সত্য রিপোর্ট দিবেন, দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখবেন। আমরা চাই যেটা সত্য সেটা বেরিয়ে আসুক। অসত্য তথ্য যেন কেউ না ছড়ায়। কারণ তাদের এসব রিপোর্ট নিয়ে নানা ধরনের প্রচারণা চলে।
শফিকুল আলম বলেন, এবার দুর্গাপূজা অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপন হয়েছে। আমরা চাই সংখ্যালঘু সম্প্রদায় সম্পূর্ণ নিরাপদে ধর্মীয় উৎসব পালন করুক। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শিক্ষা খাতের সংস্কার নিয়ে সরকার কাজ করছে।
জাতীয় সংসদের সাবেক স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী ও তার স্বামীর পাসপোর্ট নেয়ার বিষয়টি সরকার তদন্ত করছে বলে জানান তিনি। অপর প্রশ্নের জবাবে প্রেসসচিব সংবাদকর্মীদের দায়িত্বশীল সাংবাদিকতা করার অনুরোধ জানান।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার উপ- প্রেসসচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার ও অপূর্ব জাহাঙ্গীর উপস্থিত ছিলেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সদ্যবিজয়ী রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে স্বাগত জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ট্রাম্পের নেতৃত্বে দুই দেশের সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় হবে বলেও আশা করেন তিনি।
তিনি বলেন, আমাদের তরফ থেকে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে স্বাগত জানাই। আমরা মনে করি ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই বিজয়ে বাংলাদেশের সাথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক আরো উচ্চতায় যাবে।
জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের মধ্য দিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক নতুন মাত্রা পেয়েছে বলে মন্তব্য করেন শফিকুল আলম। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের ইতোমধ্যে ভালো সম্পর্ক আছে। তবে জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের পর এই সম্পর্ক ভিন্ন মাত্রায় এসেছে, কারণ যুক্তরাষ্ট্র চায় পৃথিবীর সব দেশে গণতন্ত্র থাকুক, সবাই গণতন্ত্রের চর্চা করুক। গত ১৫-১৬ বছর বাংলাদেশে একটি স্বৈরাচার সরকার ক্ষমতায় ছিল- সেই জায়গা থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান কাজ হলো গণতান্ত্রিক উত্তোরণ ঘটানো। সেই কারণে যুক্তরাষ্ট্র উদ্বুদ্ধ হয়ে বাংলাদেশের সাথে এখন কাজ করা আরো বাড়িয়ে দিয়েছে।
প্রেস সচিব বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গণতন্ত্র উত্তোরণে কাজ করছে। আমরা মনে করি গণতন্ত্র উত্তোরণের স্বার্থে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সাথে ট্রাম্পও চাইবে সারা পৃথিবীতে গণতন্ত্রের বিস্তার ঘটুক। তাই আমরা আশা করছি ট্রাম্পের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় হবে। তিনি উল্লেখ করেন অধ্যাপক ইউনূসের সাথে ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান উভয় দলের সাথে সুসম্পর্ক আছে। এই দুই দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের সাথে তার ব্যক্তিগত সম্পর্ক রয়েছে বলে তিনি জানান।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা