০৬ নভেম্বর ২০২৪, ২১ কার্তিক ১৪৩১, empty
`

বিশ্ববাসীর নজর মার্কিন নির্বাচনে

-

হোয়াইট হাউসে কে
- সবার আগে ভারমন্ট অঙ্গরাজ্যে ভোট গ্রহণ
- শেষ ভাষণে তরুণদের ভোট চাইলেন কমলা বিষোদগার ট্রাম্পের

গতকাল মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের জনগণ আগামী চার বছরের জন্য দেশটির সর্বোচ্চ নেতা নির্বাচন করতে ভোট দিয়েছেন। সাধারণ জনতার ভোট এবং ইলেক্টোরাল কলেজ ভোটের সমন্বয়ে নির্ধারিত হবে কে হবেন দেশটির পরবর্তী প্রেসিডেন্ট। ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস ইতিহাস গড়বেন নাকি রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউজে প্রত্যাবর্তন করবেন তা দেখার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে মার্কিন জনগণসহ পুরো বিশ্ববাসী।
বিবিসি জানায়, সবার আগে ভারমন্ট অঙ্গরাজ্যে ভোট গ্রহণের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন শুরু হয়। দেশটির পূর্ব উপকূলের এই অঙ্গরাজ্যটিতে মঙ্গলবার স্থানীয় সময় ভোর পাঁচটা বাজার সাথে সাথে কয়েকটি নির্বাচনী কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। ভারমন্টে ভোট গ্রহণ শুরু হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে দেশটির আরো বেশ কিছু অঙ্গরাজ্যে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। ভারমন্টের পর নিউ ইয়র্ক ও ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। এবারের নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্রে মোট যোগ্য ভোটারের সংখ্যা ২৪ কোটি ৪০ লাখ। পিউ রিসার্চ সেন্টারের ওয়েবসাইটে থাকা তথ্যানুযায়ী, ২০২০ সালে দুই-তৃতীয়াংশ (৬৬ শতাংশ) ভোটার ভোট দিয়েছিলেন। ১৯০০ সালের পর যুক্তরাষ্ট্রে কোনো জাতীয় নির্বাচনে এটাই সর্বোচ্চ ভোট। যুক্তরাষ্ট্রে এবার ইতোমধ্যেই প্রায় ৮ কোটি ২০ লাখ মানুষ ভোট দিয়েছেন।

এএফপি জানায়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের অংশ হিসেবে সবার আগে একটি শহরে ভোট গ্রহণ ও ভোট গণনা শেষ হয়। ফলাফলে ডেমোক্র্যাটপ্রার্থী কমলা হ্যারিস ও রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প সমসংখ্যক ভোট পেয়েছেন। ভোটকেন্দ্রটি হলো নিউ হ্যাম্পশায়ার অঙ্গরাজ্যের উত্তরে অবস্থিত ছোট্ট শহর ডিক্সভিল নচে। সেই কেন্দ্রে এবার মোট ভোটার ছয়জন। মধ্যরাতের পরপরই ডিক্সভিল নচ শহরটিতে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই ভোট গ্রহণ শেষ হয়। ভোট গণনায় দেখা গেছে, ছয়টি ভোটের মধ্যে কমলা পেয়েছেন তিন ভোট, ট্রাম্পও তিন ভোট পেয়েছেন। অর্থাৎ প্রথম ফলাফলে কমলা ও ট্রাম্পের লড়াইটা সমানে সমান। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক ভোট গ্রহণের দিনে প্রথম ভোট হয় নিউ হ্যাম্পশায়ারের ডিক্সভিল নচে শহরে। স্থানীয় নির্বাচনী আইন অনুযায়ী, মধ্যরাতের পরপরই সেখানে ভোট গ্রহণ শুরু হয় ও সব নিবন্ধিত ভোটার কিছুক্ষণের মধ্যে ভোট দিয়ে দেন। কয়েক ঘণ্টা পর যুক্তরাষ্ট্রের অন্য কেন্দ্রগুলোতে ভোট গ্রহণ শুরু হয়ে থাকে।

ঐতিহ্য অনুযায়ী, সোমবার মধ্যরাতে ডিক্সভিল নচে শহরের বাসিন্দারা ভোট দেন। বাদ্যযন্ত্রের সাহায্যে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় সঙ্গীতের সুর বাজানোর মধ্য দিয়ে ভোট গ্রহণের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। এ সময় সেখানে সাংবাদিকদের ভিড় জমেছিল। ১৯৬০ সাল থেকে স্থানীয় বাসিন্দারা প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে এ ঐতিহ্য অনুসরণ করে আসছেন।
২০২০ সালের নির্বাচনে ডিক্সভিল নচে শহরের বাসিন্দারা তৎকালীন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জো বাইডেনকে সর্বসম্মতিক্রমে ভোট দিয়েছিলেন। ১৯৬০ সালে মধ্যরাতে ভোট গ্রহণের রীতি চালু হওয়ার পর থেকে বাইডেন দ্বিতীয় কোনো প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ছিলেন, যিনি ওই শহরের সব ভোটারের ভোট পেয়েছিলেন। গতকাল মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূলীয় এলাকার বেশির ভাগ ভোটকেন্দ্রে স্থানীয় সময় সকাল ছয়টা থেকে সাতটার মধ্যে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। গত জানুয়ারিতে রিপাবলিকান দলের প্রাথমিক বাছাইপর্বে প্রেসিডেন্ট পদে প্রত্যাশী নিকি হ্যালিকে সর্বসম্মতিক্রমে ভোট দিয়েছিল ডিক্সভিল নচের বাসিন্দারা। পরে অবশ্য হ্যালি প্রার্থিতার দৌড় থেকে সরে দাঁড়ান এবং ট্রাম্প প্রার্থী হিসেবে মনোনীত হন। জানুয়ারিতে হ্যালিকে সর্বসম্মতিক্রমে ভোট দিলেও গতকাল মধ্যরাতের ভোটের ফলাফলে দেখা গেছে, ডিক্সভিল শহরটির তিনজন ভোটার ট্রাম্পকে ভোট দেননি।

সহিংসতা ঠেকাতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার : প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ঘিরে দেশজুড়ে ছিল কড়া নিরাপত্তা। যেকোনো ধরনের সহিংসতা রোধে বেশ তৎপর দেখা গেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে। আলাবামা, অ্যারিজোনা, ডেলাওয়্যার, আইওয়া, ইলিনয়, নর্থ ক্যারোলাইনা, নিউ মেক্সিকো, ওরেগন, উইসকনসিন ও ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্যে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করা হয়েছিল।
এর পাশাপাশি ওয়াশিংটন ডিসি, কলোরাডো, ফ্লোরিডা, হাওয়াই, নেভাদা, ওরেগন, পেনসিলভানিয়া, টেনেসি, টেক্সাস ও ওয়েস্ট ভার্জিনিয়ায় ন্যাশনাল গার্ডের সেনা যেকোনো মুহূর্তে মোতায়েনের জন্য ‘স্ট্যান্ড বাই’ অবস্থায় প্রস্তুত রাখা হয়েছিল। রয়টার্স জানায়, সম্ভাব্য সহিংসতা মোকাবেলায় অ্যারিজোনা অঙ্গরাজ্যে বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল। সেখানে ড্রোন ও স্নাইপার নিয়ে উচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে পুলিশ। মারিকোপা কাউন্টির পুলিশ কর্মকর্তা রাস স্কিনার বলেছেন, নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য পুলিশ কর্মকর্তারা ভোটকেন্দ্রের ওপর নজর রাখবেন। এ কাজে তারা ড্রোন ব্যবহার করবেন। সহিংসতা দেখা দিলে তা মোকাবেলার জন্য স্নাইপার প্রস্তুত থাকবেন।

এ ছাড়া মোতায়েনের জন্য বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্যও প্রস্তুত থাকবেন। এর আগে নির্বাচনকর্মীদের ওপর বোমা হামলার হুমকি দেয়ার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যে একজন নির্বাচনকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়ছে। মার্কিন প্রসিকিউটররা জানিয়েছেন, গ্রেফতার ওই ব্যক্তির নাম নিকোলাস উইমবিশ। তিনি গত ১৬ অক্টোবর জর্জিয়ার গ্রে শহরের জোন্স কাউন্টি ইলেকশন অফিসে একজন নির্বাচনকর্মী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
নির্বাচনের দিন এবং এর পরের দিনগুলোতে রাজনৈতিক সহিংসতা ঘটতে পারে এমন আশঙ্কা থেকে এই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সবচেয়ে বেশি দৃষ্টি থাকবে ব্যাটলগ্রাউন্ড বা সুইং স্টেটগুলোর দিকে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য রাজ্য হলো নেভাদা। ২০২০ সালের নির্বাচনের পর সেখানে প্রতিবাদ বিক্ষোভ করেছিলেন ট্রাম্প সমর্থকরা। তাদের কাউকে কাউকে সশস্ত্র অবস্থায় দেখা গেছে। সেখানে বেশ কিছু ভোট গণনা সেন্টারের চারপাশে নিরাপত্তা বেষ্টনী দেয়া হয়েছে।
শেষ ভাষণে তরুণদের ভোট চাইলেন কমলা, বিষোদগার ট্রাম্পের : নিউ ইয়র্ক টাইমস জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে ঘিরে দুই প্রার্থী বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস ও সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প উভয়ই শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন। দেশটির পেনসিলভেনিয়ার ফিলাডেলফিয়াতে নির্বাচনী প্রচারণার শেষ ভাষণটি দিয়েছেন কমলা হ্যারিস। সেখানে তিনি তরুণ ভোটারদের কাছে ভোট চেয়েছেন। অন্য দিকে নিজের সর্বশেষ ভাষণে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমালা হ্যারিসকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেছেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। গভীর রাতে সমর্থকদের উদ্দেশ্যে দেয়া এই ভাষণে তিনি কমলাকে মৌলবাদী, বাম ও পাগল বলে অভিহিত করেছেন।

জনসম্মুখে দেয়া এক ভাষণের শেষপর্যায়ে কমলা বলেন, এই প্রচারণা আমেরিকার সকল কোণের সব শ্রেণীর মানুষকে এক জায়গায় এনে দাঁড় করিয়েছে। তিনি আরো বলেন, আমাদের উদ্দেশ্য বড় আমরা শক্তি, আশাবাদ ও আনন্দ নিয়ে আমাদের যাত্রা শুরু করেছিলাম। ঠিক সেভাবেই শেষ করছি এখন। কমলা তরুণ এবং নতুন ভোটারদের উদ্দেশে বলেন, তোমাদেরকে আমি বিশেষভাবে বলছি, আমি তোমাদের শক্তি দেখি এবং আমি তোমাদেরকে নিয়ে গর্বিত। যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান এই ভাইস প্রেসিডেন্ট জানেন, এবারের নির্বাচনে জয়ী হতে হলে তাকে তরুণ ভোটারদের সমর্থন পেতে হবে।
২৩৫ বছরেও কোনো নারী মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়নি : যুক্তরাজ্যের কবল থেকে ১৭৭৬ সালে স্বাধীনতা অর্জন করে যুক্তরাষ্ট্র। সেই থেকে আজ প্রায় আড়াইশ’ বছর পার হয়ে গেল তবুও কোনো নারী প্রেসিডেন্টের মুখ আমেরিকা দেখতে পায়নি। অর্থাৎ ক্ষমতায় বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিধর রাষ্ট্র হয়েও কেন দেশটির নারীরা পিছিয়ে আছে তা অনেককেই বিস্মিত করে। নারীর ক্ষমতায়ন ও লিঙ্গসমতা নিয়ে ব্যাপক সরব যুক্তরাষ্ট্রে এখনো কোনো নারী প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হননি। অথচ ইউরোপের অনেক দেশেই নারী হয়েছেন রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান। এত প্রগতিশীল হয়েও মার্কিনদের কেন রক্ষণশীল মনোভাব, প্রশ্ন বিশ্বজুড়েই।
যেভাবে ঘোষণা করা হবে নির্বাচনের ফলাফল : যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরুর আগে জনমত জরিপগুলো এবারের নির্বাচনে ঐতিহাসিক হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের এই নির্বাচনের আগাম ভোট দেয়ার সংখ্যা ৮ কোটি পেরিয়েছে। এর মধ্যে ৪ কোটি ৪০ লাখের বেশি ভোটার ভোটকেন্দ্র গিয়ে আর প্রায় ৩ কোটি ৭ লাখ ভোটার ডাকযোগে ভোট দিয়েছেন।

বিবিসি জানায়, বিজয়ী প্রার্থীর নাম ঘোষণার পর বিজয়ীদেরকে কিছুদিন সময় দেয়া হয়, যাকে ‘রূপান্তরকালীন সময়’ বলা হয়ে থাকে। ওই সময়ের মধ্যে নতুন নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট তার মন্ত্রিসভার সদস্যদের বাছাই করেন এবং পরিকল্পনা তৈরি করে থাকেন। এরপর নতুন বছরের শুরুতে বা জানুয়ারিতে নতুন বা পুনর্নির্বাচিত প্রেসিডেন্টের অভিষেক ও শপথ অনুষ্ঠান হয়। রীতি অনুযায়ী, ওয়াশিংটন ডিসির ক্যাপিটল ভবনে নতুন প্রেসিডেন্টের অভিষেক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
১৯৩৩ সালে হওয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের ২০তম সংশোধনীতে নির্ধারণ করে দেয়া হয় যে, প্রেসিডেন্টের ওই অভিষেক অনুষ্ঠান হবে ২০ জানুয়ারি। রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসির ক্যাপিটল ভবনের সামনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে নতুন প্রেসিডেন্টে অভিষেক হয়। এ অনুষ্ঠানের পরই নতুন প্রেসিডেন্ট হোয়াইট হাউজে যান তার চার বছরব্যাপী মেয়াদ শুরু করার জন্য। যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফল পেতে কয়েক দিন পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে। এর কারণ অঙ্গরাজ্যগুলোর স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টায় ভোট গ্রহণ বন্ধ হয়। এরপর ভোট গণনা শুরু হয়। কিন্তু যখন কোনো কোনো অঙ্গরাজ্যে ভোটগণনা শুরু হয়, তখন আলাস্কা বা হাওয়াইয়ের মতো কোনো কোনো অঙ্গরাজ্যে ভোট গণনা চলতে থাকে। কোনো কোনো নির্বাচনে দ্রুত ফলাফল সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়, আবার কখনো কখনো সময় লাগে। বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সুইং স্টেট হিসেবে পরিচিত কোনো অঙ্গরাজ্যে যদি ভোট গণনা বা আইনি ঝামেলা তৈরি হয়, তাহলে বিজয়ী প্রার্থী সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পেতে আরো সময় লাগতে পারে।
সাধারণ রীতি অনুযায়ী, আনুষ্ঠানিকভাবে বিজয়ী ঘোষণা করা হয় ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি, যখন বিভিন্ন রাজ্যের ইলেক্টোররা বসে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রেসিডেন্ট পদে ভোট দেবেন। এরপর ভোটের ফল ওয়াশিংটন ডিসিতে পাঠানো হবে এবং জানুয়ারির শুরুতে কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে ভাইস প্রেসিডেন্ট আনুষ্ঠানিকভাবে গণনা করবেন।

ইলেক্টোরাল ভোটে ‘টাই’ হলে যা হবে : সাধারণত নির্বাচনে প্রার্থীদের মধ্যে যিনি সবচেয়ে বেশি ভোট পান, তিনিই জয়লাভ করেন। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ক্ষেত্রে একজন প্রার্থী বেশি সংখ্যক ভোটারের ভোট (পপুলার ভোট) পাওয়ার পরও বিজয়ী নাও হতে পারেন। এর কারণ দেশটিতে ভোটাররা সরাসরি প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করেন না। সেখানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করা হয় ‘ইলেক্টোরাল কলেজ’ নামে বিশেষ একটি ব্যবস্থায়।
এ ক্ষেত্রে জাতীয় স্তরের নির্বাচনী লড়াইয়ের বদলে প্রার্থীদের জয়-পরাজয় নির্ধারিত হবে স্থানীয়ভাবে, তথা প্রতিটি অঙ্গরাজ্যের নির্বাচনী লড়াইয়ের মাধ্যমে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি অঙ্গরাজ্যের একটিতে জয়ী হওয়ার অর্থ হলো একজন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী সেই অঙ্গরাজ্যের সব ক’টি ‘ইলেক্টোরাল কলেজ’ ভোট পেয়ে যাবেন। দেশটিতে ইলেক্টোরাল কলেজের মোট ভোটের সংখ্যা ৫৩৮টি।

মাইন ও নেব্রাসকা- এই দু’টি অঙ্গরাজ্য বাদে বাকি ৪৮টি অঙ্গরাজ্যের ইলেক্টোরাল ভোট যোগ দিয়ে যে প্রার্থী ২৭০টি বা তারও বেশি ‘ইলেক্টোরাল কলেজ’ ভোট পাবেন, তিনিই হবেন পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট। আর বিজয়ী প্রার্থীর রানিং মেট হবেন দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট। সাধারণ ভোটারদের ভোটে পিছিয়ে থেকেও ইলেক্টোরাল ভোটে যুক্তরাষ্ট্রের এখন পর্যন্ত পাঁচজন ব্যক্তি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন, যার মধ্যে রিপাবলিকান পার্টির ডোনাল্ড ট্রাম্প ও জর্জ ডব্লিউ বুশও রয়েছেন।
ইলেক্টোরাল ভোটে যদি কোনো প্রার্থী এককভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পান, সেক্ষেত্রে মার্কিন আইনসভার নিম্নকক্ষ ‘হাউজ অব রিপ্রেজেনটেটিভস’ ভোট দিয়ে নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করবেন। এ ক্ষেত্রে প্রতিনিধি পরিষদের সদস্যরা শীর্ষ তিন প্রার্থীর ভেতর থেকে একজনকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে বাছাই করে থাকেন। বাকি দুইজন প্রার্থীর ভেতর থেকে একজনকে ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসাবে বেছে নেয় দেশটির সিনেট।

 


আরো সংবাদ



premium cement