০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১,
`
এবারো হবে দুই পর্বে

৩১ জানুয়ারি থেকে বিশ্ব ইজতেমা শুরু

-

আসন্ন বিশ্ব ইজতেমা ঘিরে আবারো সক্রিয় হয়ে উঠেছে তাবলিগ জামাতের দু’টি পক্ষ। কারা আগে ইজতেমা করবে তা নিয়ে দেখা দিয়েছে বিরোধ। এ ছাড়া কাকরাইল মারকাজ মসজিদে কারা কয় সপ্তাহ অবস্থান করবেন তা নিয়েও বিরোধ দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে গতকাল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দুই পক্ষকে বৈঠকে ডাকলেও মাওলানা জোবায়ের সমর্থক দেশের বিশিষ্ট আলেমরা যাননি। বরং তারা আজ সকালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যোনে ইসলামী মহাসম্মেলনের আয়োজন করেছেন। তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে মাওলানা সাদ কান্ধলভির অনুসারীরা অংশ নেন। সেখানে ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন, শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান এবং তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের উপস্থিতিতে এবারের বিশ্ব ইজতেমাও দুই পর্বে আয়োজনের সিদ্ধান্ত হয়। আগামী ৩১ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি একটি পক্ষ এবং ৭ থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি আরেকটি পক্ষ ইজতেমার আয়োজন করবে। তবে প্রথম পর্বে কারা করবেন সেটা নির্ধারিত হয়নি।

বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব:) মো: জাহাঙ্গীর আলম জানান, টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে অনুষ্ঠেয় ৫৮তম বিশ্ব ইজতেমার জন্য পূর্বের ধারাবাহিকতায় দু’টি স্লট নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রথম পর্ব শুরু হবে ৩১ জানুয়ারি এবং চলবে ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। দ্বিতীয় পর্ব অনুষ্ঠিত হবে ৭, ৮ ও ৯ ফেব্রুয়ারি। তিনি বলেন, তাবলিগ জামায়াতের আলেমদের সাথে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। প্রয়োজনে তাদের সাথে আবার আলোচনা হবে। আমরা আলেমদের মধ্যে কোনো বিভেদ চাই না।
জানা যায়, ২০১৮ সালে তাবলিগের বর্তমান আমির ভারতের দিল্লির মাওলানা সাদ কান্ধলভিকে আমির হিসেবে মানা না-মানাকে কেন্দ্র করে বিভক্ত হয়ে পড়ে তাবলিগ জামাত। ওই বছর ইজতেমায় অংশ নিতে বাংলাদেশে এসে বিরোধের মুখে ফিরে যান সাদ কান্ধলভি। দুই পক্ষের বিরোধে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে তুরাগ ময়দানে সংঘর্ষে নিহত হন এক মুসল্লি। এরপর ২০১৯ সাল থেকে দুই পক্ষ আলাদাভাবে ইজতেমা শুরু করে। ২০১৮ সালে বিরোধের মুখে ফিরে যাওয়ার পর আর ইজতেমায় অংশ নেননি সাদ কান্ধলভি। গত বারের ইজতেমায় তার আসার কথা থাকলেও বা অনুসারীরা তাকে আনার চেষ্টা করলেও সরকারি বাধ্যবাধকতা থাকায় ইজতেমায় অংশ নিতে পারেননি সাদ কান্ধলভি। তবে গতবারের ইজতেমায় মাওলানা সাদের তিন ছেলে অংশ নেন।

এবার ইজতেমার আগে আবারো সক্রিয় হয়ে উঠেছে মাওলানা সাদের অনুসারীরা। তারা এবারো তাকে ইজতেমায় আনার চেষ্টা করছেন। এ ছাড়া গত কয়েক বছর তাদের দ্বিতীয় দফায় ইজতেমায় সুযোগ দেয়ায় এবার প্রথম দফায় তাদের ইজতেমা করার সুযোগ দেয়ার দাবি জানিয়েছেন। একই সাথে কাকরাইল মারকাজে তাদের দুই সপ্তাহ অবস্থান করার এবং মাওলানা জোবায়ের অনুসারীদের চার সপ্তাহ থাকার সুযোগ দেয়ার নিয়মেরও পরিবর্তন আনার দাবি জানিয়েছেন তারা। তারা সমান সমান দিন থাকার সুযোগ দেয়ার দাবি জানিয়েছেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে আবার তাবলিগের দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। মাওলানা জোবায়েরের সমর্থক দেশের বেশির ভাগ ইসলামী দল ও হেফাজতে ইসলামের আলেমরা। তারা এ জন্য আজ সকাল ৯টায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যোনে ইসলামী মহাসম্মেলনের আয়োজন করেছেন। সেখানে গতকাল স্টেজ নির্মাণ করতে দেখা যায়। যেখানে সারা দেশ থেকে কয়েক লাখ লোক অংশ নেবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমির মাওলানা মুহিউদ্দিন রাব্বানী। তবে এ ধরনের সম্মেলন না করার অনুরোধ জানিয়েছেন সাদপন্থি তাবলীগের আলেমরা। তারা মনে করেন, এ ধরনের সম্মেলন বিভেদ আরো উসকে দেবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement