ঐক্যবদ্ধ জাতিকে বিভক্ত করার ষড়যন্ত্র চলছে : ডা: শফিকুর রহমান
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ০২ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৫৮
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা: শফিকুর রহমান বলেছেন, জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে ঐক্যবদ্ধ জাতিকে বিভক্ত করার কঠিন ষড়যন্ত্র চলছে। এই ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দকে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। বিভক্ত জাতি কখনো রাষ্ট্রের জন্য কল্যাণকর নয়। আগামীর বাংলাদেশ গঠনে তিনি সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।
গতকাল রাজধানীর কাকরাইলস্থ ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইডিইবি) মিলনায়তনে জামায়াত ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নবনির্বাচিত আমিরের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ডা: শফিকুর রহমান আরো বলেন, জামায়াতে ইসলামীর মতো আর কারো উপর বিচারের নামে জুলুম না হোক। যে যার কর্মের ফল বিচারের মাধ্যমে পেলেই বিচারহীনতা সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভব হবে। ফলে ভুক্তভোগী মজলুম ন্যায়বিচার পাবে। আওয়ামী লীগ মানুষকে পশুর মতো হত্যা করেছে। শিশু-কিশোর, নারী-পুরুষ কেউ ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের গণহত্যা থেকে রক্ষা পায়নি। ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর আওয়ামী লীগ কেবলমাত্র চারদলীয় জোটের ঐক্যের ফাটল সৃষ্টি করে নিজেদের ক্ষমতায় যাওয়ার পথ পরিষ্কার করতে লগি-বৈঠা দিয়ে পিটিয়ে মানুষ হত্যা করেছে। যারা কথায় কথায় সংবিধানের দোহাই দেয় তারা নিজেদের তৈরি করা সংবিধান নিজেরাই মানেনি। কোনো হত্যা মামলা বাদির সম্মতি ছাড়া প্রত্যাহার বা বাতিল করার ক্ষমতা কারোর নেই। কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতা দখল করেই ২৮ অক্টোবরের ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলা বাতিল করে দিয়েছে। বিচারহীনতার সংস্কৃতি এখান থেকেই শুরু হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতা দখল করেই পিলখানা হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করেছে। তাদের ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করতেই ৫৭ জন দেশপ্রেমিক সেনা সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে। এ হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ তাদের ফ্যাসিবাদের মুখোশ উন্মোচন করেছে।
ডা: শফিকুর রহমান বলেন, গণমাধ্যম সত্যিকার অর্থে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভের ভূমিকা পালন করলে কেউ জালিম হতে পারবে না। তিনি গণমাধ্যম কর্মীদের বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ উপস্থাপন ও পরিবেশন করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, সাদাকে সাদা এবং কালোকে কালো বলতে হবে। সাংবাদিকতা একটি মহান দায়িত্ব। এই দায়িত্ব জনগণের আমানত। সে জন্য জনগণের আমানত রায় সঠিক দায়িত্ব পালন করতে হবে। কোনো ব্যক্তি বা দলের হয়ে কাজ করা উচিত নয়। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী যদি কোনো ভুল করে থাকে সেটিও তুলে ধরতে হবে, আবার জনগণের স্বার্থে যেসব কাজ করে থাকে তাও তুলে ধরতে হবে।
জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির মো: নুরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন, জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ ইজ্জত উল্লাহ।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির আব্দুস সবুর ফকির ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও মহানগরীর নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, কেন্দীয় মজলিসে শূরা সদস্য, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি মো: দোলোয়ার হোসেন, কামাল হোসাইন ও ড. মুহাম্মদ আব্দুল মান্নান প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, দ্বীনের পথে যারা থাকে তারাই পরস্পর ভাই ভাই। এই সম্পর্ক পৃথিবীর সব সম্পর্কের ঊর্ধ্বে। আগামী দুই বছর দায়িত্বশীলদের আগের সব পরীক্ষার চেয়ে এখন কঠিন পরীক্ষা দিতে হবে। সামনে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নানামুখী সঙ্কট, সংঘর্ষ, দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্র এই দায়িত্বশীলদেরই মোকাবেলা করতে হবে। তাই তিনি দায়িত্বশীলদের কাজে সহযোগিতা করতে উপস্থিত রুকন সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান।
মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, একজন ঈমানদারের জীবনে সবচেয়ে বড় সৌভাগ্য ইসলামী আন্দোলনে শামিল হতে পেরেছে। দ্বীন কায়েমের আন্দোলন আল্লাহর ফরজ বিধান। এই বিধান পালনের জন্য যারা বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান করে তারা আল্লাহর মনোনীত। কারণ আল্লাহ ইসলামী আন্দোলনে তাকেই যুক্ত করে, যাকে তিনি পছন্দ করেন।
নুরুল ইসলাম বুলবুল শপথ শেষে উপস্থিত রুকন সদস্যদের উদ্দেশে বলেন, একজন আমিরের পক্ষে এককভাবে সাংগঠনিক দায়িত্ব পালন করা সহজ ও সম্ভব নয়। এ জন্য রুকন সদস্যদের শ্রম, ঘাম, মেধা ও অর্থ দিয়ে সহযোগিতা করতে হবে। তিনি তার দায়িত্ব পালনে রুকন সদস্যদের দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করেন।
হালিশহর থানা জামায়াতের ইউনিট দায়িত্বশীল শিক্ষাশিবির
জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরীর হালিশহর থানার উদ্যোগে এক ইউনিট দায়িত্বশীল শিক্ষাশিবির গতকাল অনুষ্ঠিত হয়। থানা আমির ফখরে জাহান সিরাজীর সভাপতিত্বে শিক্ষাশিবিরে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরার সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরীর সেক্রেটারি অধ্যক্ষ নুরুল আমীন। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নগর জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মাওলানা খায়রুল বাশার ও ফয়সাল মুহাম্মদ ইউনুস, দারসুল কুরআন পেশ করেন পতেঙ্গা থানা আমির অধ্যক্ষ মাওলানা জাকির হোসেন। এতে আরো উপস্থিত ছিলেন থানার নায়েবে আমির ডা: শাহাদাত হোসেন, সেক্রেটারি আবুল কালাম আজাদ, সহকারী সেক্রেটারি ইঞ্জিনিয়ার মনজুরুল হকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীলরা।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা