দণ্ডিত হলেই হাসিনাকে ফেরত আনা হবে
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ০১ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৩৮
- সরকারি গাড়ির সংখ্যা কত, অনুসন্ধান করবে সরকার
- অস্ট্রেলিয়া ভিসা সেন্টার নয়াদিল্লি থেকে ঢাকায় আসবে
- অধিভুক্ত সাত কলেজের জন্য আলাদা রেজিস্ট্রার থাকবে
সরকারি গাড়ির সংখ্যা কত তা অনুসন্ধান করবে সরকার। এজন্য প্রতিটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কাছে গাড়ির সংখ্যা চাওয়া হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার ভিসা অফিস ঢাকায় স্থাপন করা হবে। স্থায়ীভাবে এ অফিস খোলার মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য অভিবাসী অস্ট্রেলিয়ায় যাওয়ার সুযোগ তৈরি হবে। অধিভুক্ত সাত সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের ভেতরে একটি পৃথক সচিবালয় স্থাপন করা হবে। ওই দফতর থেকে অধিভুক্ত কলেজগুলোর কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। বাংলাদেশ ফুটবল দলের ছেলে এবং মেয়ে খেলোয়াড়দের মধ্যে বিদ্যমান বেতনবৈষম্য দূর করা হবে। এ ছাড়া অপেক্ষমাণ ১৮ হাজার বাংলাদেশী শিগগিরই মালয়েশিয়া যাওয়ার কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। নির্বাচন কমিশন গঠনে সার্চ কমিটি গঠনের মধ্যে দিয়ে সরকারের নির্বাচনী অভিযাত্র শুরু হয়ে গেছে। অন্য দিকে পতিত স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা ট্রাইব্যুনালের রায়ে দণ্ডিত হলেই তাকে বন্দিবিনিময় চুক্তির আওতায় ফেরত চাওয়া হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক পরবর্তী ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মো: শফিকুল আলম এসব কথা বলেন। এ সময় উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার ও অপূর্ব জাহাঙ্গীর উপস্থিত ছিলেন।
প্রেস সচিব জানান, উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে নির্ধারিত এজেন্ডার বাইরে উল্লিখিত বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, সরকার প্রয়োজনে গাড়ি ক্রয় করে। প্রশাসনের দায়িত্বশীলদের দৈনন্দিন কাজে সরকারি গাড়ি ব্যবহৃত হয়। সরকার এ পর্যন্ত কত গাড়ি ক্রয় করেছে। কোন মন্ত্রণালয়ের অধীনে গত গাড়ি কেনা হয়েছে। গাড়িগুলোর বর্তমান অবস্থা কি? গাড়িগুলোর বয়স কত? এসব বিষয়ে অনুসন্ধান করছে সরকার। প্রতিটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে গাড়ির হিসাব দিতে বলা হয়েছে।
প্রেস সচিব আরো বলেন, বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে অস্ট্রেলিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। তিনি প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছেন, অস্ট্রেলিয়ার যে এলাকা থেকে তিনি নির্বাচিত সেই এলাকায় বিপুল বাংলাদেশী বসবাস করছেন। অস্ট্রেলিয়ায় প্রায় এক লাখ বাংলাদেশী বসবাস করছেন। তার মধ্যে বেশির ভাগ তার এলাকায়। অস্ট্রেলিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেছেন, বাংলাদেশে যে অভূতপূর্ব পবির্তন হয়েছে, সে বিষয়টি তিনি তার দেশে বসেই বুঝতে পেরেছেন। কারণ সেখানে বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশী বসবাস করছে। এ সময় অস্ট্রেলিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অভিবাসন সেন্টার ভারতের নয়াদিল্লি থেকে ঢাকায় স্থাপনের প্রস্তাব দেন। এ ছাড়া নিয়মিত অভিভাসন নিয়ে সরকারের সাথে আরো কথা বলতে চায় অস্ট্রেলিয়া। সরকারের তরফ থেকে নিয়মিত অভিবাসন নিয়ে উভয় দেশের মধ্যে আলোচনার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।
প্রেস সচিব বলেন, গত বুধবার ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত কলেজের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদের সাথে শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সাথে আলোচনা হয়েছে। সিদ্ধান্ত হয়েছে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের ভেতরে অধিভুক্ত সাত কলেজের জন্য একটি সচিবালয় স্থাপন করা হবে। ওই কলেজেগুলোর প্রশাসনিক কাজগুলো সেখান থেকে পরিচালিত হবে। এই সচিবালয়ের জন্য আলাদা রেজিস্ট্রার থাকবে। ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় ও বিশ^বিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সমন্বয়ে এসব কার্যক্রম পরিচালিত হবে। সরকার প্রত্যাশা করছে এ উদ্যোগ গ্রহণের পর ছাত্ররা আর কোনো আন্দোলন করবে না। তারপরও যদি কারো কোনো কথা থাকে তা সরকার শুনবে। আলোচনার মাধ্যমে যে সমস্যা সমাধান সম্ভব তা বড় করে দেখার কি আছে। আলোচনার মাধ্যমে একটি সঠিক সমাধান সম্ভব।
প্রেসসচিব আরো বলেন, মেয়ে ফুটবলারদের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অভিনন্দন জানানো হয়েছে। চাকমা দুইজন মেয়ে যারা ভালো খেলেছে তাদের অভিনন্দন জানালে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যগণ হাততালি দিয়ে তাদের অভিনন্দন জানিয়েছেন। মেয়ে ফুটবল টিমের সদস্যরা দুই মাস বেতন পাচ্ছেন না। এই সমস্যা সালাউদ্দিন সৃষ্টি করে গেছে। আমরা বিষয়টি দ্রুত নিরসনের উদ্যোগ নিয়েছি। আশা করি শিগগিরই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। এছাড়া মেয়ে খেলোয়াড় এবং ছেলে খেলোয়াড়দের বেতনবৈষম্য রয়েছে। বেতনবৈষম্য নিরসনে আমরা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সাথে আলাপ আলোচনা শুরু করেছি।
প্রেসসচিব জানান, ভিসা প্রসেসিংয়ের নির্ধারিত সময় অতিক্রম করায় ১৮ হাজার শ্রমিককে নেয়নি মালয়েশিয়া। তাদের মালয়েশিয়া পাঠাতে সরকার কাজ শুরু করেছে। ইতোমধ্যে তাদের ভেরিফিকেশনের কাজ শুরু হয়েছে। সরকার আশা করছে শিগগিরই তারা মালয়েশিয়া যেতে পারবেন।
নির্বাচন সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে প্রেসসচিব বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠনে সার্চ কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি যোগ্য নাগরিক এবং সমাজে যাদের গ্রহণযোগ্যতা আছে তাদের খুঁজে বের করে সুপারিশ করবে। রাষ্ট্রীয় দায়িত্বপালনে যারা সর্বোচ্চ নিরপেক্ষ ছিলেন- এমন লোকদের খুঁজে বের করবে কমিটি। যাদের নির্বাচন ও প্রশাসন পরিচালনার অভিজ্ঞতা রয়েছে, তাদের জন্য সুপারিশ করবেন। তারপর নির্বাচন কমিশন গঠন হবে। তারা দেশে নির্বাচন পরিচালনা করবেন। এই প্রক্রিয়াটিইতো সরকারের নির্বাচনী অভিযাত্রা, যা ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে।
ঢাকার যানজট নিয়ে করা প্রশ্নের জবাবে প্রেসসচিব বলেন, ঢাকা মহানগীর যানজট নিরসনে সরকার কাজ করছে, শিগগিরই পুলিশের পাশাপাশি ছাত্ররা যানজট নিরসনে দায়িত্বপালন করবে। যানজট জনজীবনের একটি সঙ্কট। বিষয়টি সরকার সচেতনভাবে নজরে রেখেছে। এ সময় প্রেসসচিব আরো বলেন, গত সাড়ে ১৫ বছর মানুষ মনের কথা বলতে পারেনি। কোনো দাবিদাওয়ার কথা বলতে পারেনি। এখন মানুষ মনে করে বর্তমান সরকার তাদের সরকার। সে কারণে মানুষ বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে রাস্তায় নামছে। ফলে সৃষ্টি হচ্ছে অনাকাক্সিক্ষত ট্রাফিক জ্যাম। বিষয়টি সরকার গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। প্রেসসচিব আরো বলেন, অনেক গার্মেন্ট মালিক পালিয়েছে। শ্রমিকরা বেতন পাচ্ছেন না। ফলে তারা রাস্তায় নামছে। এ সব আমাদের সমাজ বাস্তবতা। সরকার তা অস্বীকার করছে না। এ সবের মধ্যে সরকার কোনো ধরনের ষড়যন্ত্র দেখছে কি না এমন প্রশ্নে প্রেসসচিব জানান, না। সরকার কোনো ষড়যন্ত্র দেখছে না।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কবে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে এমন প্রশ্নে প্রেসসচিব বলেন, তিনি ট্রাইব্যুনালের রায়ে দোষী সাব্যস্ত হলে বন্দিবিনিময় চুক্তির মধ্যে তাকে ফেরত চাওয়া হবে। সরকার এখন তাকে ফেরত চাওয়ার প্রয়োজন মনে করছে না। তাকে ফেরত চাইতে হলে তিনি দণ্ডিত হবে। দণ্ডিত হওয়া ছাড়া বন্দিবিনিময় চুক্তির আলোকে ফেরত চাওয়া যায় না।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা