০১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬
`

গণহত্যাকারী আ’লীগ ও হাসিনার ক্ষমা নেই : ফখরুল

যৌথসভা শেষে ৭ নভেম্বর উপলক্ষে কর্মসূচি ঘোষণা করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর : নয়া দিগন্ত -

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিভিন্ন ডামাডোলে আমরা যেন ভুলে না যাই, স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনা গণহত্যা করেছে। এখানে কোনো ক্ষমা নেই, গণহত্যার কোনো ক্ষমা হতে পারে না। ওই জায়গাতে আমাদের খুব শক্তভাবে থাকতে হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডির) ৫২ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় তিনি এই কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, স্বাধীনতার পর অন্যায় অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রথম যে দলটি দাঁড়িয়েছিল সে দলটি হলো জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল- জেএসডি। প্রথম যিনি প্রতিবাদ করেছেন তিনি আ স ম আব্দুর রব। রাষ্ট্রের কাঠামো পরিবর্তনের কথাঅনস্বীকার্য বলায় জেএসডিকে আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন তিনি ।
রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি ইঙ্গিত দিয়ে তিনি বলেন, বর্তমান সময়টা যে খুব সতর্কতার সাথে অতিক্রম করতে হবে। ধর্য্য ধরে আমাদেরকে আমাদের লক্ষ্য পৌঁছতে হবে।
তিনি বলেন, সরকারকে একটাই দায়িত্ব দিয়েছি, ভয়াবহ জঞ্জাল দূর করে অর্থবহ একটা নির্বাচনের ব্যবস্থা করার। রাষ্ট্র সংস্কারে আমরা ৩১ দফাতে দিয়েছি। জোর করে চাপিয়ে দেয়া কোন সংস্কার টেকসই হয় না। জনগণের যদি কোন সমর্থন না থাকে তবে সে সংস্কার কোন ভাবেই স্ট্যাবল হয় না।
‘বিএনপি কোন বিপ্লবী রাজনৈতিক দল নয়, এটি লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি। আমরা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় বিশ্বাসী’। ৪৭ পর থেকে অর্থাৎ পাকিস্তান আমল থেকে এ দেশে কোনোদিন গণতন্ত্রের চর্চা হয়নি বলে জানান তিনি।

মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, আস্থার জায়গা থেকে বলতে পারি, এ ইউনূস সরকার সফল হবে। তিনি সমাদৃত। সচেতন হয়ে আপনারা (উপদেষ্টারা) কাজ করবেন। আমরা চিন্তিত তখনই হই, আমরা তখনি আমাদের খটকা লাগে, উদ্বিগ্ন হই, যখন সরকারের থাকা উপদেষ্টারা এমন কোনো কথা বলেন। এমন বলবেন না, এমন কাজ করবেন না যেটি জনমনে বিভ্রান্ত সৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে মির্জা ফখরুল বলেন, সম্ভবত স্থানীয় সরকারে উপদেষ্টা বলেছেন, ‘চার বছর আমাদের সরকারের মেয়াদ’ এসব কথা তার বলার কথা না, তারা তো কমিশন গঠন করেছেন, সেই কমিশন প্রস্তাব দেবে, জনগণ গ্রহণ করবে, তারপর না হয় সেটি চার বছর না পাঁচ বছর সেটি সিদ্ধান্ত হবে। এমন কাজ তো হাসিনাও করতেন, কোনো কিছু তিনি চার- পাঁচ বছর আগেই বলতেন। এমন কোনো কথা কখনো আপনাদেরকে সঠিক পথে নিয়ে যাবে না। এমন কথা না বলার অনুরোধ করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, আমরা দ্রুত নির্বাচন চাই। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ছাড়া জনগণকে কেউ উপস্থাপন করতে পারে না। নির্বাচন তাড়াতাড়ি হলেই রাষ্ট্র সংস্কারকাজ তাড়াতাড়ি করা যায়। ফাঁক থাকলেই স্বৈরাচারের দোসররা, যারা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আমাদের বিপ্লবের সব কিছুকে ধ্বংস করতে, বিপ্লবকে ব্যর্থ করতে। তারা সুযোগ পেয়ে যায় এবং পাচ্ছে।
বিভিন্ন মহল থেকে দাবি-দাওয়া উঠছে এমন কথা জানিয়ে তিনি প্রশ্ন রাখেন, এ দাবি দাওয়া আগে তুলেন নাই কেন? একটু অপেক্ষা করা কথা জানান তিনি।

‘বিদেশী সাংবাদিক, বিশেষ করে ভারতের সাংবাদিকরা আমাকে ফোন করে প্রশ্ন করে, জানতে চায় , স্যার- ড. ইউনূস সাহেব কি ফেল করছেন’ প্রতি উত্তরের মির্জা ফখরুল বলেন, তার দিকে তো গোটা দেশের মানুষ তাকিয়ে আছে, আস্থাশীল। আমরা তো দেখছি, তিনি অত্যন্ত সুন্দরভাবে দেশ চালাচ্ছেন। এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন মির্জা ফখরুল।
বাজারের অবস্থা খুব ভালো না এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, নিত্যপণ্যের দাম চড়া। এ বিষয়ে আমাদের সবার কথা বলা দরকার। সব সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে। সবাই মিলে সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলব। দেশকে একবারে ফোকলা করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রবের সভাপতিত্বে এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন- নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, জেএসডির সিনিয়র সহসভাপতি তানিয়া রব, সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন প্রমুখ।

 


আরো সংবাদ



premium cement