০১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬
`
কমনওয়েলথ সম্মেলন

গণতন্ত্রে তরুণদের ভূমিকা তুলে ধরলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

-

কমনওয়েলথ শীর্ষ সম্মেলনে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক গণতান্ত্রিক সংস্কারে তরুণদের ভূমিকার কথা তুলে ধরেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। তিনি বাংলাদেশের স্বৈরাচারী সরকার পরিবর্তনের পটভূমি এবং পরিবর্তনের জন্য তরুণ প্রজন্মের ত্যাগ ও অবদানের ওপর আলোকপাত করেছেন। একই সাথে টেকসই ভবিষ্যৎ গড়ার লক্ষ্যে কমনওয়েলথের ১৫০ কোটি তরুণকে আরো সম্পৃক্ত করার ওপর জোর দিয়েছেন। উপদেষ্টা জলবায়ু পরিবর্তন ও রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে কমনওয়েলথ নেতাদের এক সাথে কাজ করার আহ্বান জানান।
প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ক্ষুদ্র দ্বীপ দেশ সামোয়ার রাজধানী আপিয়ায় গত ২১ থেকে ২৬ অক্টোবর অনুষ্ঠিত ২৭তম কমনওয়েলথ শীর্ষ সম্মেলনে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন। আধুনিক কমনওয়েলথ প্রতিষ্ঠার ৭৫তম বার্ষিকীতে আয়োজিত এই সম্মেলন বৈশ্বিক ও ভূ-রাজনৈতিক কারণে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে।
কমনওয়েলথের প্রধান ব্রিটেনের রাজা তৃতীয় চার্লস ২৫ অক্টোবর ‘একটি সমৃদ্ধ অভিন্ন ভবিষ্যৎ : আমাদের কমনওয়েলথের রূপান্তর’ শীর্ষক প্রতিপাদ্য নিয়ে আয়োজিত এ সম্মেলন উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেয়া ছাড়াও পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সরকার প্রধানদের নির্বাহী অধিবেশনে বক্তব্য রাখেন।
সম্মেলনে নেতারা বৈশ্বিক অর্থনৈতিক, পরিবেশগত এবং নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জসমূহ নিয়ে অলোচনা করার পাশাপাশি সদস্য রাষ্ট্রসমূহের নিজেদের মধ্যে অধিকতর যোগাযোগ, বাণিজ্য ও টেকসই ভবিষ্যৎ গড়ার লক্ষ্যে সহযোগিতা জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করেন।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ইয়ুথ ফোরাম, বিজনেস ফোরাম, কমনওয়েলথ মিনিস্টেরিয়াল মিটিং অন স্মল আইল্যান্ডস, ফরেন মিনিস্টারস মিটিংয়ে বক্তব্য উপস্থাপন করেন। তিনি সরকার প্রধানদের সম্মানে ব্রিটেনের রাজার দেয়া নৈশভোজ ছাড়াও একাধিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন। কমনওয়েলথ শীর্ষ সম্মেলনে এবার মোট ৩৭টি সাইড ইভেন্ট অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে একটি বাংলাদেশ ও সামোয়া যৌথভাবে আয়োজন করে। ‘ক্লাইমেট ভালনারেবিলিট অ্যান্ড রেজিলিয়েন্ট ইয়ুথ’ শীর্ষক এ সাইড ইভেন্টে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এবং সামোয়ার মহিলা ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক মন্ত্রী যৌথভাবে সভাপতিত্ব করেন। এতে নামিবিয়া, জ্যামাইকা ও মালদ্বীপের মন্ত্রী পর্যায়ের প্রতিনিধি এবং মাল্টার পররাষ্ট্র সচিব ছাড়াও ৬০ জনেরও বেশি প্রতিনিধি যোগ দেন। ইভেন্টে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক তরুণ প্রতিনিধি জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব মোকাবেলা ও টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে গৃহীত বিভিন্ন উদ্যোগ সম্পর্কে তাদের মতামত তুলে ধরেন।
শীর্ষ সম্মেলনে যোগদানের পাশাপাশি পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সামোয়ার প্রধানমন্ত্রীর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এ ছাড়া তিনি পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী এবং ব্রিটেন, মালদ্বীপ ও অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সাথে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন। এ সব বৈঠকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর রাখাইনে প্রত্যাবাসন এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে চলমান মামলার কার্যক্রমের বিষয়টি জোরালোভাবে উপস্থাপন করেন। তিনি বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও মানবাধিকার নিশ্চিতে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রত্যয়ের কথাও তুলে ধরেন। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা কমনওয়েলথ শীর্ষ সম্মেলন শেষে দেশে ফেরার পথে অকল্যান্ডে আয়োজিত নিউজিল্যান্ডে অবস্থানরত বাংলাদেশীদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণ করেন। এ সময় নিউজিল্যান্ডের সিনেটর ফিল টোয়াইফোর্ড পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement