০১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬
`

‘শহীদ আবু সাঈদের বুক গুলিতে ঝাঝরা ছিল’

-

শহীদ আবু সাইদ হত্যাকাণ্ডের ফরেনসিক প্রতিবেদন প্রস্তুতকারী চিকিৎসক রংপুর মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা: রাজিবুল ইসলাম বলেছেন, ‘ওনারা (ডা: মাহফুজসহ উপস্থিত অন্যান্যরা) চেয়েছিলেন আমি যেন হেড ইনজুরি দিয়ে ইউরেজোনিক শক দেখিয়ে দেই। কিন্তু আমি তাদের চাপের কাছে মাথানত করিনি। আমার রিপোর্টে উল্লেখ আছে যে দ্যা ডেও ওয়াজ ডিউ টু এভোব মেনশন ইনজুরিস হুইচ ওয়াজ এন্টিমন্টেম অ্যান্ড হোমিসাইডাল। হোমিসাইডাল দেখবেন যে বোল্ড হেডিংয়ে দেয়া আছে। এটা লেখা আছে।’ গতকাল দুপুরে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ ক্যাম্পাসে নবনিযুক্ত অধ্যক্ষ ডা: মাহফুজুর রহমানের অপসারণ ইস্যুতে চলমান বিক্ষোভের সময় ‘ফরেনসিক প্রতিবেদন টেম্পারিং করার চাপ বিষয়’ জানতে চাইলে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
ডা: মাহফুজকে যে কটি অভিযোগের ভিত্তিতে অধ্যক্ষ মানতে নারাজ চিকিৎসক শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারীরা তার মধ্যে অন্যতম অভিযোগ হলো শহীদ আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডের ফরেনসিক প্রতিবেদন পরিবর্তনে চাপ দেয়ার বিষয়টি। ডা: রাজিবুল আরো বলেন, শহীদ আবু সাঈদের বুক গুলিতে ঝাঝরা ছিল। আমাকে ঢাকা থেকে হুমকি দেয়া হয়েছে তুমি সরকারি চাকরি করে কিভাবে সরকারের বিপক্ষে এই রিপোর্ট দিতে পারো। আমি রিপোর্ট যখন ফাইনালি দিতে যাই, তার আগে ছয়বার আমাকে রিপোর্ট চেঞ্জ করতে হয়েছিল। তারপরেও ওনাদের মনোঃপূত হয় নাই। ওই সময় ভাইস প্রিন্সিপাল মাহফুজার রহমান স্যার চার্জে ছিলেন, স্বাচিপের নেতারা ছিলেন। আরো পুলিশ প্রশাসনের লোকজন ছিলেন। আমার মতো সাইন করার কথা থাকলেও তাদের সামনে আমাকে বাধ্য হয়েই রিপোর্টে সাইন করতে হয়েছিল।

ডা: রাজিবুল বলেন, সবাই ভাবতেছে হেড ইনজুরি হেড ইনজুরি। হেড ইনজুরি হলে আমরা জানি সাধারণত ব্রেনে রক্তরক্ষণ থাকে। ইন্টারক্রিমিনিয়াল থাকে। স্ক্যামবোল ফ্রাকচার থাকে। সাঈদের ক্ষেত্রে কিন্তু এগুলো কোনোটাই ছিল না। আমি প্রচণ্ড চাপে ছিলাম। এর আগেও সেটি যমুনা টিভিসহ সব টিভিতে বলেছিলাম। ওই সময়টা এমন গেছে আমাকে এটাও ভয় দেখানো হয়েছে আপনার নামে গোয়েন্দা রিপোর্ট হয়ে গেছে ঢাকায়। তারপরেও আমি মাথা নত করিনি। এ ব্যাপারে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নবনিযুক্ত অধ্যক্ষ ডাক্তার মাহফুজুর রহমান। গতকাল বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি দাবি করেন, আবু সাঈদ হত্যা মামলার ঘটনায় ফরেনসিক প্রতিবেদন টেম্পারিং করার জন্য তিনি চাপ দেননি বরং সঠিক রিপোর্ট দেয়ার কথা বলেছি। আর প্রশাসনের লোক হিসেবে শুধু প্রশাসনিক সহযোগিতা দেয়ার থাকে। প্রতিবেদন দেয়ার এখতিয়ার সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের। তিনি বলেন, এর আগে ডা: রাজিবুল ফরেনসিক প্রতিবেদন দেয়ার ব্যাপারে কলেজ প্রশাসন নয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চাপের কথা বলেছিলেন। কিন্তু এখন তিনি আমাদের কথাও বলছেন।

 

 


আরো সংবাদ



premium cement