২৩ অক্টোবর ২০২৪, ৭ কার্তিক ১৪৩১, ১৯ রবিউস সানি ১৪৪৬
`

যেকোনো সময় বিদায় রাষ্ট্রপতির

পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ : প্রধান বিচারপতির সাথে দুই উপদেষ্টার সাক্ষাৎ
রাতে বঙ্গভবনের সামনে সেনাবাহিনীর নিরাপত্তা ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা চালায় বিক্ষোভকারীরা : নয়া দিগন্ত -

রাষ্ট্রপতি মো: সাহাবুদ্দিন যেকোনো সময় পদত্যাগ করতে পারেন বলে সংবাদ ছড়িয়ে পড়েছে। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো পক্ষই এ ব্যাপারে কিছু বলছেন না। প্রধান বিচারপতির সাথে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল ও তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের সাক্ষাতের পর রাষ্ট্রপতির বিদায় নেয়ার খবরটি ছড়িয়ে পড়ে। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় বিক্ষোভকারীরা ভুয়া-ভুয়াসহ একাধিক স্লোগান দেন।
এদিকে রাষ্ট্রপতি মো: সাহাবুদ্দিনের বাসভবন বঙ্গভবনের সামনের নিরাপত্তা ব্যারিকেড ভেঙে ফেলার চেষ্টা করছে একদল বিক্ষোভকারী। এ সময় তাদের সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যদের বাধা দিতে দেখা যায়। এদিকে বঙ্গভবনের সামনে পুলিশের গুলিতে এক শিক্ষার্থীসহ দুইজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এ ছাড়া একজন সাউন্ড গ্রেনেডে আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। আহতরা ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। গুলিবিদ্ধরা হলেন ফয়সাল আহম্মেদ বিশাল (২২) ও শফিকুল ইসলাম (৪৫)। সাউন্ড গ্রেনেডে আহত তরুণের নাম আরিফ (২০)।
একটি সূত্র জানিয়েছে, গতকাল উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সুনির্র্দিষ্ট কোনো সিদ্ধান্ত না হলেও শপথ ভঙ্গের বিতর্কে রাষ্ট্রপতি তার পদে বহাল থাকুক সেটি কেউ চাইছে না। তবে তিনি বিদায় নিলে নতুন রাষ্ট্রপতি কে হবেন তা নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো সিদ্ধান্তের কথা এখনো জানা যায়নি। সরকারের শীর্ষ একটি সূত্র জানিয়েছে, রাষ্ট্রপতি পদত্যাগ করলে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ইউনূস এই দায়িত্ব নিন সেটিই চাইছে অধিকাংশ নীতিনির্ধারক। সেক্ষেত্রে তিনি সাবেক প্রেসিডেন্ট ইয়াজুদ্দিন আহমদের মতো প্রেসিডেন্ট ও প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব গ্রহণ করুন সেটিই সবাই চাইছে। ধারণা করা হচ্ছে, প্রধান বিচারপতির সাথে আইন ও তথ্য উপদেষ্টার সাক্ষাতে এ বিষয়টি আলোচিত হয়ে থাকতে পারে।
রাষ্ট্রপতি মো: সাহাবুদ্দিনের অপসারণের দাবিতে রাতে বঙ্গভবনের সামনে আন্দোলনরত কিছু ছাত্রজনতা হঠাৎ নিরাপত্তা ব্যারিকেড ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়ার চেষ্টা করে। এ সময় আন্দোলনকারীদের বাধা দেয় নিরাপত্তায় নিয়োজিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। একপর্যায়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা আন্দোলনকারীদের ধাওয়া দেয়। পরে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে।
এদিন দুপুরের পর থেকে বঙ্গভবনের সামনের মোড়ে অবস্থান নিয়ে রাষ্ট্রপতির অপসারণ চেয়ে বিক্ষোভ করেন বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে আসা কিছু বিক্ষুব্ধ জনতা। এরপরই ওই এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়। আনা হয় পুলিশ ও সেনাবাহিনীর এপিসি ও জলকামান। এর আগে দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালযয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে মিছিল শুরু করে বঙ্গভবনের দিকে যাত্রা শুরু করে স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা কমিটি। হাইকোর্ট মাজার মোড় এলাকায় পুলিশ তাদের বাধা দেয়। কিন্তু বাধা অতিক্রম করে বঙ্গভবন পর্যন্ত এগিয়ে যায় তারা। সেখানে তারা বঙ্গভবনের সামনের খালি জায়গায় অবস্থান করতে চাইলে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। উপায় না পেয়ে বঙ্গভবন মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে তারা।
সম্প্রতি মানজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমানের সাথে এক সাক্ষাৎকারে রাষ্ট্রপতি জানান, তিনি শুনেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন, কিন্তু তার কাছে এ সংক্রান্ত কোনো দালিলিক প্রমাণ বা নথিপত্র নেই। রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘বহু চেষ্টা করেও আমি ব্যর্থ হয়েছি। তিনি হয়ত সময় পাননি।’ এরপর নতুন করে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে সরকার পতনে নেতৃত্বদানকারী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সমাজ।
আসিফ নজরুলের মতামতের সাথে একমত সরকার
রাষ্ট্রপতি মো: সাহাবুদ্দিনের বিষয়ে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের মতামতের সাথে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একমত পোষণ করে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেস সচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর। মঙ্গলবার হেয়ার রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি।
রাষ্ট্রপতি ‘মিথ্যাচার’ বলে তার পদে থাকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে একজন উপদেষ্টা (আইন উপদেষ্টা) যে বক্তব্য দিয়েছেন, সেটি তার ব্যক্তিগত না পুরো উপদেষ্টা কাউন্সিলের মতামতÑ এমন প্রশ্নের জবাবে অপূর্ব জাহাঙ্গীর বলেন, ‘আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল যা বলেছেন, তার সাথে সরকার একমত পোষণ করে।’
রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ দাবিতে সারা দেশে বিক্ষোভ
ঢাবি প্রতিনিধি জানান, সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ও শেখ হাসিনার পদত্যাগ ইস্যুতে বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনকে পদ্যচুত করার দাবিতে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনতা। গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ইনকিলাব মঞ্চ, সার্বভৌমত্ব রক্ষা কমিটিসহ বিভিন্ন সংগঠন বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। বিকেলে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে পাঁচ দফা দাবি ঘোষণা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। চলতি সপ্তাহের মধ্যেই রাষ্ট্রপতি মো: সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগ করার দাবি জানান তিনি।
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, যে শহীদ মিনার থেকে আমরা এক দফা দাবি তুলেছিলাম, সে শহীদ মিনার থেকে আমরা পাঁচ দফা ঘোষণা দিচ্ছি। আমাদের দাবিগুলো হলো : ১. বিদ্যমান সংবিধান অনতিবিলম্বে বাতিল করে ২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে নতুন সংবিধান লিখতে হবে; ২. ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে এই সপ্তাহের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে চিরতরে নিষিদ্ধ করতে হবে; ৩. রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনকে এই সপ্তাহের মধ্যে পদত্যাগ করতে হবে; ৪. এই সপ্তাহের মধ্যে জুলাই বিপ্লবের আলোকে ‘প্রোকলেমেশন অব রিপাবলিক’ ঘোষণা করতে হবে। বাংলাদেশের বিদ্যমান গণতন্ত্রকামী ক্রিয়াশীল রাজনৈতিক দলের মতের ভিত্তিতে বাংলাদেশ চলবে; ৫. ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে দশম, একাদশ ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে অবৈধ ঘোষণা করতে হবে। এই তিন নির্বাচনে যারা নির্বাচিত হয়েছে, তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে হবে এবং তারা যেন কখনো বাংলাদেশে নির্বাচন করতে না পারে, সেজন্য আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। এই সপ্তাহের মধ্যে আমাদের পাঁচ দফা দাবি না মানা হলে আমরা কঠোর থেকে কঠোরতম কর্মসূচি ঘোষণা করব।
সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ রাষ্ট্রপতির উদ্দেশে বলেন, আমরা এই শহীদ মিনার থেকে আমাদের বিপ্লব শুরু করেছিলাম। সেই বিপ্লবের ভয়ে বাংলাদেশ থেকে পালিয়েছেন ফ্যাসিস্ট হাসিনা। আর এখন আপনি রাষ্ট্রপতি হিসেবে জনতার সাথে প্রতারণা করছেন। আপনি ৫ আগস্টে যা বলেছেন তা এখন কার নির্দেশে ভুলে গিয়ে নতুন কথা বলছেন? আমরা স্পষ্ট বলে দিতে চাই, খুনি হাসিনা যেভাবে পালিয়েছেন, চুপ্পুকেও পালাতে হবে। দেশের প্রশ্নে, দশের প্রশ্নে বিপ্লবীরা সব সময় মাঠে আছে, থাকবে।
গণজমায়েতে সারজিস আলম বলেন, আবার যদি প্রয়োজন হয়, আমরা আমাদের চোখ দিতে প্রস্তুত, পা দিতে প্রস্তুত, হাত দিতে প্রস্তুত, এমনকি জীবন দিতে প্রস্তুত আছি। ফ্যাসিস্ট দল ছাত্রলীগ যেভাবে আমাদের ভাইদের হত্যা করেছে, তাদের উত্থান সহ্য করা হবে না। সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নুসরাত তাবাসসুম, আবু বাকের মজুমদার, রিফাত রশীদ প্রমুখ।
রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে বঙ্গভবন ঘেরাও : রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ ও ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের দাবিতে গতকাল বিকেল ৫টার দিকে বঙ্গভবন ঘেরাও কর্মসূচি পালন করেছে ইনকিলাব মঞ্চ। বেলা ৩টার দিকে তারা শাহবাগে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। মানববন্ধন শেষে মিছিল নিয়ে বঙ্গভবন অভিমুখে যাত্রা শুরু করে তারা। মিছিলটি শাহবাগের প্রজন্ম চত্বর থেকে শুরু করে মৎস্যভবন, শিক্ষাভবন, সচিবালয়, গুলিস্তান জিরো পয়েন্ট হয়ে বঙ্গভবনের সামনে গিয়ে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত সেখানে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। পরে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টামণ্ডলী থেকে আলোচনার আশ্বাস পেয়ে কর্মসূচি সমাপ্ত করেন তারা।
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি বলেন, বাংলাদেশের সংবিধানের মধ্য দিয়ে ১৯৭২ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত ৫৩ বছরের সব গুম, খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকে বৈধতা দেয়া হয়েছে। এ সংবিধানের মাধ্যমে পিলখানা হত্যাকাণ্ডকে বৈধতা দেয়া হয়েছে, শাপলা চত্বরের হত্যাকাণ্ডকে বৈধতা দেয়া হয়েছে। আমরা যদি তখন পিলখানা হত্যাকাণ্ডকে থামাতে পারতাম তাহলে শাপলা চত্বরে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হতো না। শাপলা চত্বরে ঢাকা শহরের ইলেক্ট্রিসিটি বন্ধ করে মিডিয়ার ক্যামেরা বন্ধ করে আমার ভাইদের নির্বিচারে হত্যা করা হয়েছিল। তিনি আরো বলেন, এই সংবিধান তো সংবিধান নয়, এটি আওয়ামী লীগের নিজস্ব ম্যান্ডেট। ১৯৭২-এর সংবিধান বাতিল করতে হবে। এই সংবিধান জনতার নয়, বাংলাদেশের নয়। এই সংবিধান রচনার জন্য যারা পার্লামেন্টে বসেছিলেন বাংলাদেশের মানুষ তাদের এটি রচনার বৈধ ম্যান্ডেট দেয়নি। সেই সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষার নামে সাহাবুদ্দিন চুপ্পু নামের কোনো চাটুকার রাষ্ট্রপতিকে আর একদিনও বঙ্গভবনে থাকতে দেয়া হবে না।
সার্বভৌমত্ব রক্ষা কমিটির ৪ দফা দাবি : রাষ্ট্রপতি মো: সাহাবুদ্দিনকে অপসারণসহ চার দফা দাবিতে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে সার্বভৌমত্ব রক্ষা কমিটি। গতকাল মঙ্গলবার কর্মসূচি পালনকালে সংগঠনটি চার দফা দাবি ঘোষণা করে। সেগুলো হলো : ১. রাষ্ট্রপতিকে অপসারণ করতে হবে; ২. সংবিধান সংস্কার করতে হবে; ৩. ছাত্রলীগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে; ৪. বিপ্লবী জাতীয় সরকার গঠন করতে হবে।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা কমিটির অন্যতম সংগঠক অ্যাডভোকেট মনিরুজ্জামান বলেন, আওয়ামী লীগ গত ১৫ বছর ধরে ফ্যাসিবাদী শাসন চালিয়েছে। সেই আওয়ামী লীগের নিযুক্ত রাষ্ট্রপতি তার পদে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন বহু আগেই। অবিলম্বে আমাদের সংবিধান সংস্কার করতে হবে, যে সংবিধানের দোহাই দিয়ে এত দিন স্বৈরতন্ত্র চলেছে। অ্যাডভোকেট মনির আরো বলেন, এই রাষ্ট্রপতিকে দ্রুত অপসারণ করতে হবে কারণ সে এখন হাসিনা এবং তার দোসরদের বৈধতা দেয়ার চেষ্টা করছে। দেশে একটি বিপ্লবী সরকার গঠন করতে হবে এবং অবশ্যই সন্ত্রাসী বাহিনী আওয়ামী লীগ এবং ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে।
গাজীপুর মহানগর প্রতিনিধি জানান, রাষ্ট্রপতি মো: সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগের দাবিতে মানববন্ধন করেছে গাজীপুর গণঅধিকার পরিষদ। মঙ্গলবার গাজীপুর প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গণঅধিকার পরিষদ কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহসভাপতি ও শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি আব্দুর রহমান বলেন, খুনি চক্রের সদস্যদের বিচারের বাইরে রাখতেই খুনি হাসিনার পরামর্শে প্রেসিডেন্ট চুপ্পু নতুন ষড়যন্ত্রের ফন্দী আঁটছেন, কিন্তু বাংলাদেশের বিপ্লবী ছাত্র-জনতা চুপ্পুকে সেই সুযোগ দিবে না।
গাজীপুর জেলা গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক পাঠান আজহারের সভাপতিত্বে এবং মমিন আকন্দের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন, গাজীপুর জেলা গণঅধিকার পরিষদ সদস্যসচিব মোবারক হোসেন সরকার, যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল মান্নান, শ্রমিক অধিকার পরিষদ কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সিনিয়র সহসভাপতি আরিফুল ইসলাম, গাজীপুর মহানগর শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি মাজেদুর রশিদ, গাজীপুর জেলা শ্রমিক অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক জাকির হোসেন রবিন, শ্রীপুর উপজেলা গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান আসাদ, গাজীপুর মহানগর ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি সাইদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক ফরিদুজ্জামান জাহিদ, জেলা ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান ইমন, জেলা যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি জুয়েল রানা, সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান প্রমুখ।
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, রাষ্ট্রপতি মো: সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগ ও ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে চট্টগ্রামে বিােভ সমাবেশ করেছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে নগরীর ষোলশহর রেলওয়ে স্টেশনে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে বক্তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে রাষ্ট্রপতি পদত্যাগ না করলে আলটিমেটাম ছাড়াই বঙ্গভবন ঘেরাও করার হুঁশিয়ারি দেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে গতকাল বিকেলে চট্টগ্রামের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ষোলশহর রেলস্টেশনে জড়ো হন। পরে তারা ষোলশহর থেকে মিছিল বের করেন। মিছিলটি নগীরর দুই নম্বর গেট, জিইসি মোড় হয়ে আবারো ষোলশহর এসে শেষ হয়।
বিক্ষোভ সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক রিয়াজুর রহমান বলেন, এ দেশে স্বৈরাচারের দোসরদের থাকতে দেয়া যাবে না। এই রাষ্ট্রপতি ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসর আমলাদের টিকিয়ে রাখার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহসমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ বলেন, আমাদের ধৈর্য্যরে পরীক্ষা নিয়েন না। দ্রুত সময়ের মধ্যে এই রাষ্ট্রপতি পদত্যাগ না করলে আলটিমেটাম ছাড়াই বঙ্গভবন ঘেরাও করা হবে বলে তিনি হুঁশিয়ারি দেন।
চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি জানান, রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন চুন্নুর পদত্যাগের দাবিতে গণজমায়েত করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের সামনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
বক্তারা বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হয়ে পালাতে বাধ্য হলেও ষড়যন্ত্র এখনো থেমে নেই। এখন গণভবন ও বঙ্গভবন থেকেও নানা ধরনের ষড়যন্ত্র চলছে। ছাত্র-জনতার বিপ্লব হাতছাড়া করতে ফ্যাসিস্টের দোসররা এখনো অপতৎপরতা চালাচ্ছে। দেশের মানুষ এই নীলনকশা মেনে নিবে না। মানুষ এখন প্রতিবাদী এবং সচেতন, তাই বিপ্লবের স্পিরিট ধরে রেখে এবং ফ্যাসিস্টবিরোধী আন্দোলনে গণমানুষ রুখে দিবে। অবিলম্বে অপতৎপরতায় মেতে থাকা দোসরদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানানো হয়। এ সময় ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করারও দাবি তোলা হয়। গণজমায়েত কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থী আসলাম অর্ক, হাসানুজ্জামান, আরাফাত রহমান, কাজল আহমেদ, রাকিবের মাহমুদ ও সজিব হোসেন প্রমুখ।
নড়াইল প্রতিনিধি জানান, রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন চুপ্পুর পদত্যাগ দাবিতে নড়াইলে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। নড়াইলের সর্বস্তরের ছাত্র-জনতার ব্যানারে মঙ্গলবার বিকেলে শহরের পুরাতন বাস টার্মিনাল চত্বর থেকে রূপগঞ্জ প্রেস ক্লাব চত্বর পর্যন্ত বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। প্রেস ক্লাব চত্বরে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন-আব্দুর রহমান মেহেদী, শাফায়েত হোসেন, রিফাতুল ইসলাম তমাল, হাসিবুর রহমান, তুহিন বিন রাজ্জাক, লামিয়া খাতুন, শাহরিয়ার আহমেদ, কাজী ইয়াজুর রহমান বাবুসহ অনেকে।
ইবি সংবাদদাতা জানান, রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ক্যাম্পাসের বটতলা থেকে মিছিলটি শুরু হয়। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রশাসন ভবনের সামনে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হয়।
সমাবেশে শিক্ষার্থীরা রাষ্ট্রপতির পদ থেকে সাহাবুদ্দিনকে অপসারণের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধেরও দাবি জানান। বিভিন্ন বিভাগের শতাধিক শিক্ষার্থী বিক্ষোভে অংশ নেন।
মিছিলপরবর্তী সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবির সহ-সমন্বয়ক নাহিদ হাসান বলেন, ‘বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি দ্বিমুখী বক্তব্য দিয়েছেন, তার বক্তব্যে স্পষ্ট যে তিনি শেখ হাসিনাকে বৈধতা দিতে চান। আমরা গণ-আন্দোলনের শহীদদের রক্তের সাথে বেইমানি করতে পারব না। রাষ্ট্রপতির এ বক্তব্য ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি।’


আরো সংবাদ



premium cement
দ্বিতীয়বারের স্বাধীনতা নিয়ে কাউকে ছিনিমিনি করতে দেয়া হবে না : মামুনুল হক দ্বিতীয়বারের স্বাধীনতা নিয়ে কাউকে ছিনিমিনি করতে দেয়া হবে না : মামুনুল হক বিজিএমইএ প্রশাসকের কাজে যোগদান প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ ও প্রতিবেদকের বক্তব্য বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৪ সদস্যের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটি গঠন নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে আটক মিয়ানমারের ২ নাগরিককে পুশব্যাক চবি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় আটক ৫ চবি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় আটক ৫ হজ প্যাকেজ ঘোষণা ৩০ অক্টোবর সাবেক দুই মন্ত্রী মোজাম্মেল ও নাহিদের দুর্নীতির অনুসন্ধানে দুদক রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যবদ্ধ হওয়ার মুখ্য সময় এখন : খেলাফত আন্দোলন

সকল