ইতালি দূতাবাস কর্মকর্তাদের ছবি ও আইডি ব্যবহার করে প্রতারণা
- মনির হোসেন
- ২০ অক্টোবর ২০২৪, ০১:৪৫
ইতালির রোমের বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ছবি ও আইডি নম্বর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যবহার করে চলছে ভয়াবহ প্রতারণা ও চাঁদাবাজি।
দেশ-বিদেশে গড়ে ওঠা ‘ভ্রাম্যমাণ’ এই চাঁদাবাজ চক্রের খপ্পরে পড়ে অনেকেই নিঃস্ব হয়েছেন। তাদের ফাঁদে না পড়ার জন্য প্রবাসী বাংলাদেশীদের সতর্কতা অবলম্বন করার জন্য ইতালির বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
যদিও এমন সতর্কতার মধ্যেই প্রতারকদের খপ্পরে পড়ে বেশ কিছু প্রবাসী এসব চাঁদাবাজের হাতে বিকাশের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা দিয়ে প্রতারিত হয়েছেন বলে প্রতারিতরা দূতাবাসকে অবহিত করেছে। প্রতারিতদের কেউ কেউ দূতাবাসের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আবার ব্যাপক ক্ষোভ করে বলছেন, বিপদে পড়ে দূতাবাসের সহযোগিতা চেয়ে তারা ফোন করলেও বেশির ভাগ সময় সাড়া দেন না সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
সম্প্রতি ইতালির বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে প্রবাসীদের সতর্ক করে বলা হয়, বাংলাদেশ দূতাবাস, রোমের কর্মকর্তা-কর্মচারীর ছবি, আইডি ব্যবহার করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ইমো-হোয়াটসঅ্যাপ-মেসেঞ্জার) একাধিক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রবাসী বাংলাদেশীদের কাছে টাকা দাবি করা হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রবাসী বাংলাদেশীদেরকে যথাযথ সতর্কতা অবলম্বন করার পাশাপাশি প্রতারক চক্রের প্রতারণায় বিভ্রান্ত হয়ে কোন মাধ্যমেই কোন টাকা লেনদেন না করার জন্য দূতাবাসের পক্ষ হতে অনুরোধ করা হলো।
এমন অনুরোধ দেখে ইতালি প্রবাসী বাংলাদেশীরা দূতাবাস কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করে নানা মন্তব্য করছেন। মো: ইব্রাহিম শেখ নামের এক প্রবাসী বলেন, ‘আপনাদের অফিসিয়াল নাম্বারে ফোন দিলে ব্যস্ত অথবা রেসপন্স পাওয়া যায় না। মেইল করলে রিপ্লাই আসে না, ফেসবুক পেইজে টেক্সট দিলে রিপ্লাই করেন না। একটা অ্যাম্বাসির উচিত তার নিজের দেশের জনগণকে সর্বোচ্চভাবে সহযোগিতা করা অথচ আপনারা এ বিষয়ে উদাসীন।’
বঢ়াচেলর’স জব নামের একটি আইডি থেকে মন্তব্য বলা হয়, ‘আপনাদের কারণে এসব কর্মকাণ্ড ঘটে যাচ্ছে। আপনারা প্রবাসীদের সময়ের মূল্য দিতে চেষ্টা করেন তাদেরকে ভালো সেবা দেয়ার চেষ্টা করেন। তাদেরকে ভোগান্তিতে ফেলেন না। দ্রুত সময়ে তাদের পাসপোর্ট ডেলিভারি দেয়ার ব্যবস্থা করেন। বিভিন্ন ঝামেলার সমস্যা বানিয়ে প্রবাসীদেরকে টেনশনে ফেলে দেন। পরবর্তীতে তারা স্টক (স্ট্রোক) করে মারা যায়। এ ব্যাপারে খেয়াল রাখার জন্য দূতাবাস কর্মকর্তাদের পরামর্শ দেন।
রনি তুষার নামে একজন মন্তব্য বলেন, আমার এক বড় ভাই এর সাথে এরকমটা হয়েছে, এবং দেশে থেকে এক লাখ টাকাও বিকাশের মাধ্যমে নিয়েছে, তাই সবাই সাবধানতা অবলম্বন করি।
হিরামন নামের একজন প্রবাসী বলেন, আমাকেও বারবার কল দিয়েছে।
এই প্রসঙ্গে গতকাল শনিবার বিকেলে ইতালির বাংলাদেশ দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি আরফানুল হকের সাথে যোগাযোগ করা হলেও তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
উল্লেখ্য, ইতালি থেকে পাঠানো কর্মসংস্থান ভিসা জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর ওয়ান স্টপ সার্ভিসে জমা দেয় বিদেশগামীরা। পরবর্তীতে যাচাই-বাছাইয়ের পর বহির্গমন শাখা থেকে দেয়া হয় ছাড়পত্র। অভিযোগ রয়েছে, এই ভিসার ছাড়পত্র দেয়ার ক্ষেত্রে ইতালিগামীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ নেয়া হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
বিএমইটির পরিসংখ্যান বলছে, চলতি বছর ৬৫১ জন কর্মী দেশটিতে পাড়ি জমিয়েছেন। সেপ্টেম্বরে গেছেন ১১ জন। তবে অবৈধভাবে দেশটিতে যাচ্ছেন অনেক অনেক বাংলাদেশী। তাদের মধ্য পথে মারা যাচ্ছেন। আর স্বপ্নের ইতালি পৌঁছার আগে ভুমধ্য সাগরে অনেকের সলীল সমাধি ঘটছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা