১৭ অক্টোবর ২০২৪, ১ কার্তিক ১৪৩০, ১৩ রবিউস সানি ১৪৪৬
`
বিশেষজ্ঞদের সতর্কবার্তা

দূষণে ঢাকার বিশ্বরেকর্ড

-

দূষণে বিশ্বরেকর্ড গড়েছে ঢাকা। এ নিয়ে চলতি বছরে একাধিকবার দূষিত বাতাসের রেকর্ড অতিক্রম করল রাজধানী ঢাকা। এর আগেও গত দুই বছর ধরে বিশ্বের প্রথম থেকে সপ্তম স্থানের মধ্যে ঢাকার নাম ওঠানামা করছিল। সর্বশেষ বায়ুদূষণে গেল বছর দেশ হিসেবে শীর্ষে ছিল বাংলাদেশ। আর বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ দূষিত নগর ছিল ঢাকা। নগর হিসেবে একেবারে শীর্ষ আছে ভারতের রাজধানী দিল্লি।
গতকাল সকাল ৯টায় এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সে দেখা যায়, ২২৮ একিউআই স্কোর নিয়ে বিশ্বের দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় প্রথম স্থানে রয়েছে জনবহুল শহর ঢাকা। তাতে বাতাসের মান ছিল ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’। এর আগে বুধবার ঢাকা ছিল বিশ্বে চতুর্থ স্থানে।
অন্য দিকে পাকিস্তানের লাহোর, যৌথভাবে ইরাকের বাগদাদ ও ভারতের দিল্লি এবং পাকিস্তানের করাচি যথাক্রমে ২২৬, ২১৯ ও ২১৫ একিউআই স্কোর নিয়ে তালিকার দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে রয়েছে।
একিউআই সূচকে ১০১ থেকে ১৫০ এর মধ্যে হলে বাতাসের মান ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’, ১৫১ থেকে ২০০ এর মধ্যে একিউআই স্কোরকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বলে মনে করা হয়। ২০১ থেকে ৩০০ এর মধ্যে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০০ এর বেশি একিউআই স্কোরকে ‘ঝুঁকিপূণ’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যা বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।

বাংলাদেশে একিউআই নির্ধারণ করা হয় দূষণের পাঁচটি বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে। সেগুলো হলো, বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ ও ওজোন (ও৩)। দীর্ঘদিন ধরে বায়ুদূষণে ভুগছে ঢাকা। এর বাতাসের গুণমান সাধারণত শীতকালে চরম অস্বাস্থ্যকর হয়ে যায় এবং বর্ষাকালে কিছুটা উন্নত হয়।
২০১৯ সালের মার্চ মাসে পরিবেশ অধিদফতর ও বিশ্বব্যাংকের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ঢাকার বায়ু দূষণের তিনটি প্রধান উৎস হলো ইটভাটা, যানবাহনের ধোঁয়া ও নির্মাণ সাইটের ধুলো।
ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের তথ্য (ডব্লিউএইচও) অনুসারে, বায়ু দূষণের ফলে স্ট্রোক, হৃদরোগ, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ, ফুসফুসের ক্যান্সার এবং তীব্র শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণের কারণে মৃত্যুহার বেড়েছে। এর ফলে বিশ্বব্যাপী প্রতি বছর আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষ মারা যায়।
এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা জানান, তারা দীর্ঘদিন ধরে দেশের বায়ুমান নিয়ে গবেষণার কাজ করছেন। পিএম ২.৫ মূলত ধূলিকণা। এটি স্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক। কণাগুলো ফুসফুস ও রক্তপ্রবাহে প্রবেশ করে থাকে। এখন দেশ হিসেবে বায়ুদূষণে বাংলাদেশ যে শীর্ষ স্থান পেল, এটা আমাদের জন্য বিপদের সংবাদ। তাদের ভাষ্য, আমরা আমাদের সৃষ্টি করা নানা দূষণের মাধ্যমে বায়ুর এ অবস্থা করে ফেলেছি। দেশের পরিবেশ ও স্বাস্থ্য বিষয়ে যারা দায়িত্বে, তাদের এখন অনেক বেশি সজাগ হওয়ার দরকার। নয়তো ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এক দুর্বিষহ অবস্থা অপেক্ষা করছে।
দুই বছর আগে ২২ সালে বাংলাদেশ বিশ্বের দূষিত বাতাসের দেশের তালিকায় পঞ্চম অবস্থানে ছিল এবং ভারতের অবস্থান ছিল অষ্টম। আর ২০২২ সালে বাংলাদেশের বাতাসে পিএম ২.৫এর উপস্থিতি ছিল ৬৫ দশমিক ৮। অর্থাৎ এক বছরে এর পরিমাণ ২০ শতাংশ বেড়েছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement