১৬ অক্টোবর ২০২৪, ৩১ আশ্বিন ১৪৩০, ১২ রবিউস সানি ১৪৪৬
`

কমেছে পাস, বেড়েছে জিপিএ ৫

এইচএসসি ও সমমানের ফল প্রকাশ
এইচএসসির ফল প্রকাশের পর রাজউক স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীদের উল্লাস : নয়া দিগন্ত -


বৈষম্যবিরোধী ছাত্রজনতার ঐতিহাসিক আন্দোলনের সময় মাঝপথে বন্ধ হয়ে যাওয়া এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফলেও পাসের হার গতবারের চেয়ে কমেছে। এবার দেশের সব বোর্ড মিলিয়ে গড় পাসের হার ৭৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ। গত বছর পাসের হার ছিল ৭৮ দশমিক ৬৪ শতাংশ। তবে এ বছর কয়েকটি বিষয়ের পরীক্ষা না হওয়ায় ‘সাবজেক্ট ম্যাপিং’য়ের সুবিধায় বেড়েছে জিপিএ ৫ অর্জনকারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা। এ বছর মোট জিপিএ ৫ পেয়েছেন এক লাখ ৪৫ হাজার ৯১১ জন, যা গত বছরের তুলনায় দেড় গুণ বেশি। গত বছর ৯২ হাজার ৫৯৫ শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন।
এ বছরের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হয় ৩০ জুন। প্রথম প্রকাশিত রুটিন অনুযায়ী, আট দিন পরীক্ষা হওয়ার পর কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে ১৮ জুলাইয়ের সব পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। এরপর তিন দফায় পরীক্ষা স্থগিত করে সরকার। তার আগে সাতটি বিষয়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। তৎকালীন সরকার পরীক্ষা পরে নেয়া হবে বলে ঘোষণা দেয়। কিন্তু অনেক রক্তক্ষয়ী আন্দোলনের পর ৫ আগস্ট সরকারের পতন হলে পাল্টে যায় পরিস্থিতি। অনেক পরীক্ষার্থী আহত হন, মারাও যান কেউ কেউ। ফলে এক ধরনের ট্রমার মধ্যে থাকা পরীক্ষার্থীদের একাংশের দাবির মুখে এইচএসসির স্থগিত হওয়া কয়েকটি বিষয়ের পরীক্ষা বাতিল করে দেয়া হয়। পরে নেয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যে সমস্ত বিষয়ের পরীক্ষা হয়ে গিয়েছিল সেগুলোর উত্তরপত্র মূল্যায়ন করা হয়, আর যে সব বিষয়ের পরীক্ষা হয়নি সেগুলোর নম্বর দেয়া হয় এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে বিষয় ম্যাপিং করে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে ফল প্রকাশ করতেন। শিক্ষামন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর কাছে ফলাফল হস্তান্তর করতেন। এবার সে রকম না হয়ে নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও অনলাইনে এক যোগে ফল প্রকাশ করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টায় ২০২৪ সালের উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফলের সারসংক্ষেপ আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন।

এ বছর সাবজেক্ট ম্যাপিং পদ্ধতিতে ফল ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেয়ার পর উচ্চ পাসের হারের সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছিল। ফল ঘোষণার আগের দিনও সবাইকে অটো পাস করিয়ে দেয়ার দাবিতে শিক্ষা বোর্ড কর্মকর্তাদের অবরুদ্ধ করে রেখেছিলেন কিছু শিক্ষার্থী। তাদের সে দাবি মানা না হয়নি। এতে পাসের হার কমলেও সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের ফলে জিপিএ ৫ বেড়েছে অর্ধ লাখেরও বেশি। জিপিএ ৫ বেড়ে যাওয়া প্রসঙ্গে তপন কুমার বলেন, এসএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগে পড়ে যে যিনি জিপিএ ৫ পেয়েছিলেন তিনি উচ্চ মাধ্যমিকে পড়েছেন। কিন্তু এবার সেই নম্বরগুলো মানবিকের বিষয়ে যোগ হওয়ায় জিপিএ ৫ হয়ে গেছে।
প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায় গত তিন বছরের ধারাবাহিকতায় এবারো অসাধারণ ফলাফল করেছে নারী শিক্ষার্থীরা। জিপিএ ৫ প্রাপ্তি এবং পাসের হার উভয় ক্ষেত্রেই ছেলেদের চেয়ে এগিয়ে মেয়েরা। ছাত্রদের তুলনায় ছাত্রীরা ৪ দশমিক ৩৪ শতাংশ বেশি পাস করেছে এবং ১৫ হাজার ৯৫৫ জন বেশি ছাত্রী জিপিএ ৫ পেয়েছে। চলতি বছর ১১টি শিক্ষা বোর্ডের দুই হাজার ৬৯৫টি কেন্দ্রে পরীক্ষার্থী ছিলেন ১৩ লাখ ৩১ হাজার ৫৮ জন। সেখানে পাস করেছে ১০ লাখ ৩৫ হাজার ৩০৯ জন শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে ছেলে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৫ লাখ ৩ হাজার ৫৯৫ জন এবং মেয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৫ লাখ ৩১ হাজার ৭১৪ জন।
২০২০ সালে অটো পাসে শতভাগ সাফল্য ঘোষিত হওয়ার পর থেকে প্রতি বছরই পাসের হার ক্রমান্বয়ে কমেছে। ২০২১-এ পরীক্ষা নেয়া হয় সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে, বাছাই করা বিষয়ে। তাতে স্বভাবতই পাসের হার কমে যায়। সে বছর ৯৫ দশমিক ২৬ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেন। পরের বছর ২০২২-এ গড় পাসের হার কমে হয় ৮৫ দশমিক ৯৫ শতাংশ। সিলেবাস ও পরীক্ষার বিষয় বাড়ানোয় গত বছর অর্থাৎ ২০২৩-এ পাসের হার আরো কেেম ৭৮ দশমিক ৬৪ শতাংশ দাঁড়ায়। এ বছর তা আরো দশমিক ৮৬ শতাংশ কমলো।
এ বছর পাসের হারে এগিয়ে আছে মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড। এই বোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিত আলিম পরীক্ষায় এবার পাসের হার ৯৩ দশমিক ৪০। এর পরেই অবস্থান বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের। এই বোর্ডের অধীন এইচএসসি ভোকেশনাল, বিএম, ডিপ্লোমা ইন কমার্স পরীক্ষায় পাসের হার ৮৮ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ। আর পাসের হার সবচেয়ে কম ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে। এসব বোর্ডে গড় পাসের হার ৭৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ।

জিপিএ ৫ ঢাকা বোর্ড বেশি : এ বছর এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় সবচেয়ে বেশি জিপিএ ৫ পেয়েছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড। মোট ৪৮ হাজার ৫৪৮ জন জিপিএ ৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর মধ্যে ২৪ হাজার ১৯৫ জন ছাত্র এবং ২৪ হাজার ৩৫৩ জন্য ছাত্রী। এই বোর্ডে জিপিএ ৫ প্রাপ্তির হার ১৫ দশমিক ৪৩ শতাংশ।
ফলাফলে দেখা যায়, এই বছর মোট জিপিএ ৫ পেয়েছে এক লাখ ৪৫ হাজার ৯১১ শিক্ষার্থী। এর মধ্যে রাজশাহীতে ২৪ হাজার ৯০২, কুমিল্লায় ৭ হাজার ৯২২, যশোরে ৯ হাজার ৭৪৯, চট্টগ্রামে ১০ হাজার ২৬৯, বরিশালে ৪ হাজার ১৬৭, সিলেটে ৬ হাজার ৬৯৮, দিনাজপুরে ১৪ হাজার ২৯৫, ময়মনসিংহে ৪ হাজার ৮২৬, মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডে ৯ হাজার ৬১৩ এবং কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে ৪ হাজার ৯২২ শিক্ষার্থী জিপিএ ৫ পেয়েছে।
এই বছর এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাসের হার ৭৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ। এর মধ্যে কেবল এইচএসসিতে পাসের হার ৭৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ। জিপিএ ৫ পেয়েছে এক লাখ ৩১ হাজার ৩৭৬ শিক্ষার্থী। আলিম পরীক্ষায় পাসের হার ৯৩ দশমিক ৪০ শতাংশ। জিপিএ ৫ পেয়েছে ৯ হাজার ৬১৩ পরীক্ষার্থী। ভোকেশনাল/বিএম/ডিপ্লোমা ইন কমার্সে পাসের হার ৯৯ দশমিক ৯ শতাংশ। জিপিএ ৫ পেয়েছে ৪ হাজার ৯২২ শিক্ষার্থী। গত বছর এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় গড় পাসের হার ছিল ৭৮ দশমিক ৬৪ শতাংশ। জিপিএ ৫ পেয়েছিল ৯২ হাজার ৫৯৫ শিক্ষার্থী।
জিপিএ ৫ এ এবারো মেয়েরা এগিয়ে : এবারো এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার জিপিএ ৫ প্রাপ্তিতে ছেলেদের চেয়ে মেয়েরা এগিয়ে রয়েছে। মেয়েরা জিপিএ ৫ পেয়েছে ৮০ হাজার ৯৩৩, ছেলেরা পেয়েছে ৬৪ হাজার ৯৭৮। এ ছাড়া পাসের হারে ছেলেরা ৭৫ দশমিক ৬১ শতাংশ এবং মেয়েরা ৭৯ দশমিক ৯৫ শতাংশ।

ঘোষিত ফলাফল পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এবার ৯টি শিক্ষা বোর্ড এবং মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে মোট পাসের হার ৭৭.৭৮ শতাংশ। এবার মোট এক লাখ ৪৫ হাজার ৯১১ জন জিপিএ ৫ পেয়েছে। এর মধ্যে মেয়েরা জিপিএ ৫ পেয়েছে ৮০ হাজার ৯৩৩ জন এবং ছেলেরা পেয়েছে ৬৪ হাজার ৯৭৮ জন। ছাত্রদের চেয়ে ১৫ হাজার ৯৫৫ জন বেশি ছাত্রী জিপিএ ৫ পেয়েছে।
অন্য দিকে ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ও জিপিএ ৫ প্রাপ্তিতে মেয়েরা এগিয়ে। ছেলেদের পাসের হার যেখানে ৭২ দশমিক ৫৫ শতাংশ, সেখানে মেয়েদের পাসের হার ৭৮ দশমিক ২৭ শতাংশ। জিপিএ ৫ পেয়েছে ছেলেরা ৫৮ হাজার ৫৮৮ জন এবং মেয়েরা পেয়েছে ৭২ হাজার ৭৮৮ জন।
১ হাজার ৩৮৮ প্রতিষ্ঠানে শতভাগ পাস : চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় ১ হাজার ৩৮৮ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শতভাগ শিক্ষার্থী পাস করেছে।
একজনও পাস করেনি এমন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৬৫টি। গতবার শতভাগ পাস ছিল ৯৫৩ প্রতিষ্ঠানে। এ বছর শতভাগ পাস করা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ১ হাজার ৩৮৮। গত বছর ৪২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কেউ পাস করেনি। তবে এবার এই সংখ্যা বেড়ে ৬৫টিতে দাঁড়িয়েছে। এ বছর পরীক্ষায় অংশ নেয় মোট ৯ হাজার ১৯৭টি প্রতিষ্ঠান। গত বছর এই সংখ্যা ছিল ৯ হাজার ১৮৭টি।

সাফল্যের শীর্ষে সিলেট
সিলেট ব্যুরো : এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে এবার চমক দেখিয়েছে সিলেট মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড। দেশের সেরা স্থানটি দখলে নিয়েছে সিলেট। সিলেট শিক্ষা বোর্ডে এবার পাসের হার ৮৫ দশমিক ৩৯ শতাংশ। গতকাল দুপুরে শিক্ষা বোর্ডর সম্মেলন কক্ষে ফল ঘোষণা করেন বোর্ড চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো: জাকির আহমদ। গত বছর এইচএসসি পরীক্ষায় সিলেট বোর্ডে পাসের হার ছিল ৭৩ দশমিক ৭ শতাংশ। সে হিসাবে এবার পাসের হার প্রায় ১২ শতাংশ বেড়েছে। ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী, এ বছর ৮৩ হাজার ১৬৫ পরীক্ষার্থীর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ৭১ হাজার ১২ জন। বোর্ডের চেয়ারম্যান জানান, চার বিষয়ের মধ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ে সর্বোচ্চ ভালো করেছে শিক্ষার্থীরা। আইসিটিতে মোট ৭৫ হাজার ১২২ জন পরীক্ষার্থী ছিল। এর মধ্যে ৭০ হাজার ৭২৩ জন অর্থাৎ ৯৪ দশমিক ১৪ শতাংশ পাস করেছে। এ কারণে এবার সিলেটে পাসের হার বেড়েছে। পাসের হারের দিক থেকে বিজ্ঞান বিভাগে সর্বোচ্চ ৯৪ দশমিক ৪৪ শতাংশ, মানবিকে ৮৫ দশমিক ৯৭ এবং ৭০ দশমিক ১৩ শতাংশ। শতভাগ পাস করেছে আটটি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।
পাসের হারে সিলেটেও এগিয়ে মেয়েরা। ৩৩ হাজার ৮১১ জন ছেলে পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে ২৮ হাজার ৩৫১ জন। পাসের হার ৮৩ দশমিক ৮৬ শতাংশ। ৪৯ হাজার ৩৫৪ জন মেয়ে পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে ৪২ হাজার ৬৬১ জন। পাসের হার ৮৬ দশমিক ৪৪ শতাংশ।
ফল ঘোষণার পর সিলেট শহরের নামীদামি মিষ্টির দোকানগুলোতে ভিড় জমে ওঠে। অভিভাবকরা পাড়া-প্রতিবেশী, আত্মীয়স্বজনের মাঝে মিষ্টি বিতরণ করেন।

যশোর বোর্ডে পাসের হার ৬৪.২৯
যশোর অফিস : এ বছর এইচএসসি পরীক্ষায় যশোর শিক্ষা বোর্ডে ৬৪.২৯ শতাংশ পাস করেছে, যা গত বছরের চেয়ে কম। জিপিএ ৫ পেয়েছে ৯ হাজার ৭৪৯ জন। এ বছর পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে এক লাখ ২২ হাজার ৫১১ জন পরীক্ষার্থী। পাস করেছে ৭৮ হাজার ৭৬৪ জন। শতভাগ ফেল করেছে সাতটি কলেজের পরীক্ষার্থী। ১৩টি কলেজ থেকে শতভাগ পাস করেছে। যদিও ১৩টির মধ্যে ছয়টি কলেজের পরীক্ষার্থীর সংখ্যা সর্বোচ্চ তিনজন, সর্বনি¤œ একজন। বোর্ডের সভাকক্ষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে চেয়ারম্যান প্রফেসর মর্জিনা আক্তার ফল প্রকাশ করেন। এ সময় পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ডক্টর বিশ্বাস শাহীন আহম্মদ উপস্থিত ছিলেন।

বরিশাল বোর্ডে পাসের হার ৮১.৮৫ শতাংশ
বরিশাল ব্যুরো : উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষায় বরিশাল বোর্ডে পাসের হার ৮১ দশমিক ৮৫ শতাংশ। এবার জিপিএ ৫ প্রাপ্তি ১৭৪টি বেড়ে হয়েছে চার হাজার ১৬৭ জন শিক্ষার্থী। গতকাল বেলা ১১টায় ফল পরিসংখ্যান ঘোষণা করেন বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক অরুন কুমার গাইন। গত বছর বোর্ডে পাসের হার ছিল ৮০ দশমিক ৬৫। তিনি জানান, এ বছর পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল ৬৬ হাজার ৮৭ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ছাত্র ৩১ হাজার ৯৯৩ জন ও ছাত্রী ৩৪ হাজার ৯৪ জন। ৫৪ হাজার ৮৯ জন উত্তীর্ণের মধ্যে ছাত্র ২৪ হাজার ৩৬৭ জন ও ছাত্রী ২৯ হাজার ৭২২ জন।
বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মো: ইউনুস আলী সিদ্দিকী জানান, এ বছর কোনো কলেজে শতভাগ ফেল না থাকলেও ২১টি প্রতিষ্ঠানে পাসের হার শতভাগ রয়েছে। তিনি জানান, বোর্ডের ৩৪২টি কলেজের মধ্যে ২১টির সব শিক্ষার্থীই পাস করেছেন। আর এর মধ্যে সর্বোচ্চ ঝালকাঠি জেলায় সাতটি, বরিশাল জেলায় পাঁচটি, ভোলা জেলায় চারটি ও পটুয়াখালী জেলায় তিনটি করে কলেজে সবাই শতভাগ পাস করেছে। বাকি দু’টি জেলায় একটি করে কলেজের পরীক্ষার্থীরা শতভাগ পাস করেছে। তবে এ বোর্ডে এবারো এমন কোনো প্রতিষ্ঠান নেই যেখানে একজনও পাস করেননি।

মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজে সবাই জিপিএ ৫
মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) সংবাদদাতা : মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজ থেকে এবারো শতভাগ জিপিএ ৫ পাওয়ার কৃতিত্ব অর্জন করেছে। অধ্যক্ষ কর্নেল রিয়াজ আহমেদ চৌধুরী জানান, চলতি বছর মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজের ৫৬তম ব্যাচের ৪৮ জন ক্যাডেটের সবাই জিপিএ ৫ অর্জন করেছে। এর মধ্যে ৪৬ জন ক্যাডেট গোল্ডেন জিপিএসহ উত্তীর্ণ হয়েছে।

চট্টগ্রামে কমেছে পাসের হার বেড়েছে জিপিএ ৫
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় পাসের হার ৭০ দশমিক ৩২। ১ লাখ ৬ হাজার ২৯৮ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছেন ৭৪ হাজার ১২৫ জন। আর জিপিএ ৫ পেয়েছেন ১০ হাজার ২৬৯ জন। গত বছর পাসের হার ছিল ৭৪ দশমিক ৪৫ শতাংশ। গেলবারের তুলনায় এবার পাসের হার ৪ দশমিক ১৩ শতাংশ কম। তবে বেড়েছে জিপিএ ৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা। ৫টি প্রতিষ্ঠানের কোনো শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়নি। পাসের হারে ছেলেদের তুলনায় মেয়েরাই এগিয়ে রয়েছে। জিপিএ ৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্র ৪ হাজার ৫১০ জন ও ছাত্রী ৫ হাজার ৭৫৯। ২৮২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশ নেন। এর মধ্যে শতভাগ পাস করেছে মাত্র ১৩টি কলেজে।
গতকাল চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড মিলনায়তনে পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা করেন বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এ এম এম মুজিবুর রহমান। বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, এবার ছাত্রদের পাসের হার ৬৭ দশমিক ৭২ শতাংশ এবং ছাত্রীদের পাসের হার ৭২ দশমিক ৪৯ শতাংশ।

দিনাজপুরে ২০ কলেজে সবাই ফেল
রংপুর ব্যুরো জানায়, দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ডে পাসের হার ৭৭ দমশিক ৫৬। এবারও এই বোর্ডে ভালো ফলাফল করেছে রংপুর জেলার শিক্ষার্থীরা। এই বোর্ডেও ছাত্রের তুলনায় ছাত্রীর পাস ও জিপিএ ৫ পাওয়ার হার বেশি।
দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর স ম আবদুস সামাদ আজাদ জানান, এবার ১ লাখ ১৩ হাজার ৭৯৯ জন পরীক্ষাথীর মধ্যে পাস করেছে ৮৬ হাজার ৯৫৪ জন। এর মধ্যে ছাত্রী ৮১ দশমিক ০১ এবং ছাত্র ৭৩ দশমিক ৯৩ ভাগ। জিপিএ ৫ পেয়েছে ১৪ হাজার ২৯৫ জন। এখানেও ছাত্রীর সংখ্যা বেশি ৮ হাজার ১১০ জন। আর ৬ হাজার ১৮৫ জন ছাত্র পেয়েছেন জিপিএ ৫। এবার এই বোর্ডে ১ বিষয়ে অকৃতকার্যের হার ১৭ দশমিক ০৮ ভাগ অর্থাৎ ১৯ হাজার ১৯ হাজার ১৫৩ জন ফেল করেছেন। শতভাগ পাস করেছে ১৫টি কলেজ থেকে। আর ২০টি কলেজ থেকে কেউ পাস করেনি।
এবারো রংপুর সেরা : এবার রংপুর কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে ৫২৯ জন পরীক্ষা দিয়ে ৫১৯ জন কৃতকার্য হয়েছে। এখানে ২২৭ জন জিপিএ ৫ পেয়েছেন। ক্যান্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে ৯৪২ জন পরীক্ষা দিয়ে ৯২৩ জন উত্তীর্ণের মধ্যে ৫৯১ জন জিপিএ ৫, রংপুর পুলিশ লাইন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে ৮১৮ জনের মধ্যে ৭৮১ জন কৃতকার্য ও ৪৫৫ জন জিপিএ ৫, রংপুর সরকারি কলেজ থেকে ১ হাজার ২৫৭ জন পরীক্ষা দিয়ে ১ হাজার ২২৮ জন কৃতকার্য ও ৮৯১ জন জিপিএ ৫, সরকারি বেগম রোকেয়া কলেজ থেকে ৮৯১ জন পরীক্ষা দিয়ে ৮২৬ জন পাস ও ৩৯১ জন জিপিএ ৫, কারমাইকেল কলেজ থেকে ৯৯৫ জন পরীক্ষা দিয়ে ৯৩১ জন কৃতকার্য ও ৫২৮ জন জিপিএ ৫, লায়ন্স স্কুল এন্ড কলেজ থেকে ৫১০ জন পরীক্ষা দিয়ে ৪৭৭ জন পাস এবং ১০৬ জন জিপিএ ৫ পেয়েছে।
রংপুর পুলিশ লাইন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী অধ্যাপক আ ন ম বাবর আলী জানান, আলহামদুলিল্লাহ। এবারো আমরা ভালো করেছি। শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং পরিচালনা পর্ষদের সম্মিলিত উদ্যোগেই এটা সম্ভব হয়েছে। এবার আমাদের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে ছিল। আমরা চাই ভালো মানুষ হিসেবে দেশ গড়ার কাজে অংশ নিবে তারা।
রংপুর পুলিশ লাইন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরিচালনা কমিটির সভাপতি পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শরীফ উদ্দিন জানান, আমরা ফলাফলে ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে চাই।

ময়মনসিংহও পাসের হার কমেছে অনেক
ময়মনসিংহ অফিস জানায়, ময়মনসিংহ বোর্ডে পাসের হার ৬৩ দশমিক ২২ শতাংশ। জিপিএ ৫ পেয়েছে চার হাজার ৮২৬ জন। এর মধ্যে ছেলে ২ হাজার ১০৯ জন ও মেয়ে ২ হাজার ৭১৭ জন। পাসের হার এবং জিপিএ ৫ প্রাপ্তিতে এবারো মেয়েরা এগিয়ে রয়েছে। গত বছর এই বোর্ডে পাসের হার ছিল শতকরা ৭০ দশমিক ৪৪ শতাংশ। তবে গত বছরের চেয়ে এবছর এক হাজার ৫৮২ জন জিপিএ ৫ বেশি পেয়েছে। ২০২১ সালে যেখানে পাসের হার ছিল ৯৫ দশমিক ২১ শতাংশ, ২০২২ সালে ৮০ দশমিক ২২ শতাংশ, ২০২৩ সালে ৭০ দশমিক ৪৪ শতাংশ এবং ২০২৪ সালে পাসের হার কমে ৬৩ দশমিক ২২ শতাংশে নেমে এসেছে।
গতকাল ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর আবু তাহের জানান, ৯৯টি কেন্দ্রে ২৯৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৭৭ হাজার ৬২১ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। এর মধ্যে পাস করেছে ৪৯ হাজার ৬৯ জন। তিনি জানান, পাঁচটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী শতভাগ পাস করেছে। ময়মনসিংহ গালর্স ক্যাডেট কলেজ, জামালপুরের রহিম সরকার কলেজ, নেত্রকোনা সদরের ভাষাসৈনিক আবুল হোসেন কলেজ, নেত্রকোনা পুর্বধলা এমবিশন মডেল কলেজ এবং কেন্দুয়া উপজেলার গোরাডোবা আব্দুল হামিদ হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের সবাই পাস করেছে। তবে চারটি প্রতিষ্ঠানের কেউ পাস করেনি।
ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে পাসের হারে এগিয়ে জামালপুর জেলা। এ জেলার পাসের হার ৬৫ দশমিক ৭৪ শতাংশ। অন্য জেলার মধ্যে ময়মনসিংহে ৬৩ দশমিক ৪৩, নেত্রকোনায় ৬২ দশমিক ৯০ এবং শেরপুরে পাসের হার ৫৮ দশমিক এক শতাংশ।

কুমিল্লায়ও এগিয়ে মেয়েরা

কুমিল্লা প্রতিনিধি জানান, এ বছর কুমিল্লা বোর্ডে পাসের হার ৭১ দশমিক ১৫ শতাংশ। গত বছর পাসের হার ছিল ৭৫ দশমিক ৩৯। তবে বেড়েছে জিপিএ ৫। এ বছর জিপিএ ৫ পেয়েছে ৭ হাজার ৯২২ জন। গত বছর জিপিএ ৫ ছিল ৫ হাজার ৬৫৫ জন।
এ বছর ১ লাখ ১২ হাজার ৩১২ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৭৯ হাজার ৯০৫ জন উত্তীর্ণ হয়েছে। গতকাল কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মো: নিজামুল করিম বোর্ড মিলনায়তনে এ ফলাফল ঘোষণা করেন। চেয়ারম্যান জানান, এ বছর ৬ জেলায় শতভাগ পাস করেছে ১০টি প্রতিষ্ঠান। শূন্য পাস করা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ৪টি। মেয়েদের মধ্যে ৪ হাজার ৯৫৪ জন জিপিএ ৫ অর্জন করেছে। ছেলেদের মধ্যে জিপিএ ৫ পেয়েছে ২ হাজার ৯৬৮ জন। মেয়েদের পাসের হার ৭৩ দশমিক ৭০ শতাংশ এবং ছেলেদের ৬৭ দশমিক ৭৪ শতাংশ।

ইংরেজিতে ফেল করেছে ২১ হাজার ৫৩৮ শিক্ষার্থী : পাসের হার কম হওয়া প্রসঙ্গে বোর্ড চেয়ারম্যান বলেন, এ বছর ইংরেজি ও আইসিটিসহ বিভিন্ন বিষয়ে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যে ইংরেজিতে ফেল করেছে ২১ হাজার ৫৩৮ এবং আইসিটিতে ফেল ১২ হাজার ৮১০ জন। তাই পাসের হার কমে গেছে। তিনি আরো বলেন, এ দু’টি বিষয়ে বেশি পরীক্ষার্থী ফেল করা এবং শূন্য পাস করা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের কাছ থেকে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা চাওয়া হবে। সংবাদ সম্মেলনে বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর ড. মো: আসাদুজ্জামান, সচিব প্রফেসর নুর মোহাম্মদ উপস্থিত ছিলেন।
ফল পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন ১৬ থেকে ২২ অক্টোবর : প্রকাশিত এইচএসসি ও সমমানের ফলাফলে যেসব পরীক্ষার্থী কাক্সিক্ষত ফল পাননি কিংবা সন্তুষ্ট হতে পারেননি তারা ফল পুনঃনিরীক্ষার আবেদনের সুযোগ পাবেন। আজ বুধবার থেকে এই আবেদন শুরু হবে। চলবে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত। গতকাল মঙ্গলবার আন্তঃশিক্ষা বোর্ড থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে। আবেদন করতে হবে শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইটের নির্দিষ্ট লিঙ্কে। এতে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফলে সন্তুষ্ট না হওয়া শিক্ষার্থীরা প্রতিবারের মতো এবারো বোর্ড চ্যালেঞ্জ বা ফল পুনঃনিরীক্ষার আবেদনের সুযোগ পাবে। ফল বোর্ড চ্যালেঞ্জ আবেদন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫০ টাকা।

বিদেশী কেন্দ্রে পাসের হার ৯৫.৩৯ শতাংশ : ঢাকা বোর্ডের অধীনে চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষায় ৮টি বিদেশী কেন্দ্রে ২৮২ পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে পাস করেছে ২৬৯ জন। অনুত্তীর্ণ পরীক্ষার্থী ১৩ জন। পাসের হার ৯৫ দশমিক ৩৯ শতাংশ। বিদেশী প্রতিষ্ঠান ও কেন্দ্রের সংখ্যা ছিল ৮টি।

মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজে শতভাগ পাস
ডেমরা (ঢাকা) সংবাদদাতা জানান, রাজধানীর মাতুয়াইলের ঐতিহ্যবাহী ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজ বরাবরের মতো এবারো গৌরবোজ্জ্বল সাফল্য অর্জন করেছে। এ বছরের এইচএসসি পরীক্ষায় প্রতিষ্ঠানটির মোট ২৭৪০ জন অংশ নিয়ে সবাই পাস করেছে। জিপিএ ৫ পেয়েছে ১৭৬৫ জন শিক্ষার্থী। কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ ওবায়দুল্লাহ বলেন, প্রাজ্ঞ নির্দেশনা, সুদক্ষ পরিচালনা, নিয়মিত পাঠদান ও তদারকি, শিক্ষকমণ্ডলীর আন্তরিকতা ও শিক্ষার্থীদের গভীর অধ্যবসায় এই সাফল্যের পেছনে মূলমন্ত্র হিসেবে কাজ করছে।

শিক্ষা বোর্ড - পাসের হার - জিপিএ ৫
ঢাকা - ৭৯.২১% - ৪৮,৫৪৮
সিলেট - ৮৫.৩৯%- ৬,৬৯৮
রাজশাহী - ৮১.২৪% - ২৪,৯০২
চট্টগ্রাম - ৭০.৩২% - ১০,২৬৯
বরিশাল - ৮১.৮৫% - ৪,১৬৭
দিনাজপুর -৭৭.৫৬% - ১৪,২৯৫
যশোর - ৬৪.২৯%- ৯,৭৪৯
কুমিল্লা - ৭১.১৫% - ৭,৯২২
ময়মনসিংহ - ৬৩.২২%- ৪,৮২৬
মাদরাসা বোর্ড - ৯৩.৪০% -৯,৬১৩
কারিগরি বোর্ড - ৮৮.০৯% - ৪,৯২২
গড় পাসের হার/মোট জিপিএ ৫ - ৭৭.৭৮% - ১,৪৫,৯১১ জন

 

 


আরো সংবাদ



premium cement

সকল