ডেঙ্গু মোকাবেলায় সরকারকে বড় উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান বিএনপির

ডেঙ্গু মোকাবিলায় সরকারকে বড় উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি। গতকাল সোমবার নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী এ আহ্বান জানান। এ সময় তিনি ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ মহানগরে ডেঙ্গু আক্রান্তদের জন্য চিকিৎসা সেবা ও রক্তের জন্য হটলাইন এবং ওয়েবসাইট চালু করার কথা জানান ।
অন্তর্বর্তী সরকারের বয়স দুই মাসের বেশি হয়ে গেছে উল্লেখ করে রিজভী বলেন, আমরা মনে করি, জনগণের ক্ষমতা জনগণের হাতে ফিরে আসবে। নির্বাচিত সরকারই একমাত্র জনগণের জন্য কাজ করতে পারে। যেখানে মানুষের বেঁচে থাকার প্রশ্ন, সেখানে নির্বাচিত সরকার কাজ করতে পারে। বন্যায় সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে ব্যাপক কাজ হয়েছে।

বিএনপি গণভিত্তিক দল জানিয়ে তিনি বলেন, দলের সামর্থ্য অনুযায়ী আমরা করে যাচ্ছি। ডেঙ্গুর প্রকোপ না কমা পর্যন্ত আজ থেকে সচেতনতা ও সেবামূলক কার্যক্রম আরো বেগবান করা হলো। তিনি বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে বিএনপির চিকিৎসকরা যেমন ছাত্র আন্দোলনে আহতদের পাশে দাঁড়িয়েছে তেমনি আজকে ডেঙ্গু আক্রান্ত নগরবাসীসহ দেশবাসীর পক্ষে দাঁড়িয়েছে। তবে এজন্য সরকারকেই বড় উদ্যোগ নিতে হবে। আমরা বেসরকারিভাবে কাজ করতে পারি ।
রিজভী বলেন, আমরা ইতোমধ্যে ডেঙ্গু মোকাবিলার কাজ শুরু করেছি। আমাদের চিকিৎসকরাও কাজ শুরু করেছে। বিশেষ করে ঢাকার দুই সিটির জনতার মেয়র ইশরাক হোসেন ও তাবিথ আওয়াল ডেঙ্গু সচেতনতায় কাজ করছেন। ডেঙ্গু রোগীদের জন্য নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের জন্য ব্লাড সংগ্রহের কাজ শুরু হয়েছে। এ ছাড়াও ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা সহায়তায় হটলাইন চালু করা হয়েছে।

রিজভী বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লড়াইয়ে যারা হতাহত ও শহীদ হয়েছেন তাদের ও তাদের পরিবারের নীরবে-নিভৃতে খোঁজখবর রাখছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি ঢাক-ঢোল পেটাননি। তিনি বলেন, গণবিরোধী ও ফ্যাসিস্ট সরকার জনগণের জানমালের তোয়াক্কা করেনি। কিন্তু এখন তো জনসমর্থিত সরকার। একটি গণবিপ্লব সংঘটিত হওয়ার পরে এ সরকার এসেছে। এ সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বা সংশ্লিষ্ট যারা আছেন তাদের উচিত ছিল ডেঙ্গু প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেয়া। তিনি বলেন, সরকারের উপদেষ্টারা নানা ধরনের পদক্ষেপের কথা বলে যাচ্ছেন। কিন্তু মানুষের জীবন বাঁচাতে যে আরো তৎপর হওয়া দরকার, তেমনটি পরিলক্ষিত হয়নি। এটা দুর্ভাগ্যজনক। ইতোমধ্যে সরকারিভাবেই ২০০ অধিক মানুষ মারা গেছেন ডেঙ্গুতে এবং প্রতিদিন ১০ জন, ১২ জন করে মারা যাচ্ছেন। ডেঙ্গু তো প্রতিরোধ্য। এটি প্রতিরোধের জন্য আগে থাকে ব্যবস্থা নেয়া উচিত ছিল। এখন তো আর শেখ হাসিনার আমল না।
মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী ঢাকা উত্তরের তাবিথ আউয়াল ও দক্ষিণের ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন এবং বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডাক্তার রফিকুল ইসলাম সমন্বিত চিকিৎসক টিম ঢাকা মহানগরে ডেঙ্গু মোকাবেলায় দলের সামর্থ্য অনুযায়ী যতটুকু উদ্যোগ গ্রহণ করা দরকার ততটুকু তারা করেছেন বলে জানান রুহুল কবির রিজভী।
দলটির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা: রফিকুল ইসলাম এ সময় জানান, এ কার্যক্রম যতদিন পর্যন্ত ডেঙ্গুর প্রকোপ থাকবে ততদিন পর্যন্ত চালিয়ে যাবে বিএনপি।
সংবাদ সম্মেলনে তাবিথ আউয়াল ও ইশরাক হোসেন ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্মমহাসচিব অ্যাডভোকেট আবদুল সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর শরাফত আলী সপু, মহানগর উত্তরের আমিনুল হক, এসএম জাহাঙ্গীর প্রমুখ।